Search
২৫শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ / ১২ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৬শে শাবান, ১৪৪৬ হিজরি / রাত ১০:০৬

মাওয়া ঘাটে যাত্রীদের নিয়ে চলছে চোর-পুলিশ খেলা

সরকারের চলমান বিধিনিষেধ অনুযায়ী অন্তঃজেলা গণপরিবহন সেবা বন্ধ রয়েছে। কিন্তু ঈদে বিকল্প উপায়ে বাড়ি ফিরতে মাওয়া শিমুলিয়া ঘাটে ভীড় করছেন যাত্রীরা। নৌপুলিশ, বিজিবির টহল চোখে পড়ার মতো থাকলেও মানুষের ভীড় সামল দিতে কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়ছে না। দিনে ফেরী চলাচল বন্ধ থাকার কথা বলা হলেও বাস্তবে গিয়ে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। এক কথায় মাওয়া ফেরী ঘাটে এখন ঘরমুখো যাত্রীদের নিয়ে চলছে চোর-পুলিশ খেলা।

সোমবার সকাল ৮ টায় শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয় ঘাট কৃর্তপক্ষ। রাতভর ফেরী যাতায়াত করেছে মাওয়া শিমুলিয়া ঘাট থেকে। ১৩ টি ফেরী দিয়ে পারাপার করছে যানবাহনের সাথে যাত্রী। কর্তৃপক্ষ ফেরী বন্ধ বলে যাত্রীদের সাথে প্রতারণা করছেন এমন অভিযোগ মাওয়া শিমুলিয়া ঘাটে আসা যাত্রীদের।

পটুয়াখালীগামী রাজা দেবনাথ জানান, তার বাবা স্ট্রোকের রোগী। তাকে দ্রুত ডাক্তার দেখাতে হবে। আমাকে বাড়িতে যেতেই হবে। ঢাকা থেকে মাওয়া পর্যন্ত আসতে ১ হাজার ৫০০টাকা খরচ হয়েছে। মাওয়া এসে দেখি ফেরী বন্ধ। কোনো ফেরী ছাড়ছে না। দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করে অবশেষে ডাম্প ফেরী যুমনা দিয়ে ৫টি লাশবাহী এ্যাম্বুলেন্সের সাথে কয়েক হাজার যাত্রী মাওয়া শিমুলিয়া ঘাট ছেড়ে গেছেন। ঘাটে আটকে রয়েছে ৪শ ছোট বড় ট্রাক।

মাওয়া ঘাটের পদ্মা নদীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ১৩টি ট্রলার ও ১১ জন আসামিকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করে তাদের ছেড়ে দেয়া হবে। ট্রলারগুলো ঈদের পরে ছেড়ে দেয়া হবে। ১৩টি ট্রলারে ৪শ থেকে সাড়ে ৪শ যাত্রী ছিল। যাত্রীদের পুশব্যাক করে মাওয়া ঘাটে নামিয়ে দেয়া হয়েছে।

সকাল সাড়ে ৭টা ও ৮টার মধ্যে দুটি ফেরী ছেড়ে মাওয়া শিমুলিয়া ঘাট থেকে। যাত্রী বোঝাই করে গাদাগাদি করে যাত্রীদের নিয়ে যাওয়া হয়। ফলে মহামারী করোনা সংক্রামনের সমুহ সম্ভাবনা রয়েছে। যাত্রীদের অভিযোগে সিন্ডিকেট তৈরী করে দিনে বন্ধ রেখে রাতে ফেরীতে পারাপার করা হয়। এতে যাত্রীদের চরম হয়রানী ও চম ভিড়াম্বনা করা হচ্ছে। যাত্রীরা জনপ্রতি ১ হাজার ৫০০টাকা খরচ করে মাওয়া ঘাট এসে বসে রইছেন সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত। এ পর্যন্ত কোনো ফেরী ছেড়ে যেতে দেখা যায়নি মাওয়া শিমুলিয়া ঘাট থেকে। তবে ৫টি লাশবাহী অ্যম্বুলেন্সসহ একটি ডাম্প ফেরী ছেড়ে যায় ১০টায়। এই ফেরী দিয়েও গাদাগাদি করে কোন সামাজিক দূরত্ব বা মাস্ক হ্যান্ড স্যানিটাইজার করার বালাই না।

শিমুলিয়া ফেরিঘাট থেকে চার কিলোমিটার দূরে অবস্থিত কনকসা, হলদিয়া ও কুমারভোগ থেকে ৩০০-৪০০ টাকা দিয়ে ট্রলার দিয়ে ঈদে ঘরমুখো যাত্রীরা পারাপার হচ্ছে। নৌপুলিশ, পুলিশ ও বিজিবির টহল চোখে পড়ার মতো। কিন্তু যাত্রীদের কোনভাবে থামানো যাচ্ছে না বাড়িতে যাওয়া।

মনে হচ্ছে মাওয়া ঘাটে ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের নিয়ে চোর পুলিশ খেলা চলছে। দৃশ্যমান ফেরী চলছে। কর্তৃপক্ষ বলছে ফেরী বন্ধ। আসলে কোনটা সত্য। রাতে ১৩টি ফেরী চলাচল করছে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে মাওয়া শিমুলিয়া ঘাটের নৌ ফাঁড়ির ইনচার্জ সিরাজুল কবির।

মাওয়া শিমুলিয়া ঘাটে সহকারি ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) সাফায়েত হোসেন জানান, ১০টার সময় ২নং ঘাট থেকে ১টি ফেরী ছেড়ে গেছে। এখন আর একটি ফেরী শাহ পরান ছেড়ে যাবে। পরবর্তীতে এ্যাম্বুলেন্স ও লাশবাহী গাড়ি আসলে ফেরী আরো ছাড়া হবে।

Facebook
Twitter
LinkedIn