বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যের লন্ডনে পৌঁছেছেন। আজ বুধবার (৮ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় সকাল ৯টার দিকে (বাংলাদেশ সময় বেলা ৩টার দিকে) তাকে বহনকারী এয়ার অ্যাম্বুলেন্স লন্ডনের হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেখান থেকে খালেদা জিয়াকে লন্ডন ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে লন্ডন ক্লিনিক নিয়ে অনেকের মধ্যে কৌতূহল রয়েছে। অনলাইনের পাঠকদের উদ্দেশ্যে যুক্তরাজ্যের লন্ডন ক্লিনিকের কিছু তথ্য দেওয়া হলো
লন্ডন ক্লিনিকে ব্রেস্ট, ইউরোলজি, গাইনোকলজি ও চর্মরোগ চিকিৎসায় সুনাম রয়েছে। আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি স্টেম সেল ট্রান্সপ্লান্টেশন ও সেলুলার থেরাপিতেও রয়েছে সুনাম।
১৯৩২ সালে যাত্রা শুরু করা হাসপাতালটির অবস্থান সেন্ট্রাল লন্ডনের ডেভনশায়ার প্লেস ও মেরিলিবন সড়কে। এটি ইংল্যান্ডের সবচেয়ে বড় বেসরকারি হাসপাতাল হিসেবে পরিচিতি।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, লন্ডন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ব্রিটিশ যুবরাজ প্রিন্স অব ওয়েলস উইলিয়ামের স্ত্রী প্রিন্সেস অব ওয়েলস ক্যাথরিন, রাজা তৃতীয় চার্লস, রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ, তার স্বামী ফিলিপ অব এডিনবরা। এ ছাড়া, এ হাসপাতালে জন্মগ্রহণ করেছেন সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন।
লন্ডন ক্লিনিকের রোগীর তালিকায় নাম লিখিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি ও ব্রিটিশ-আমেরিকান অভিনেত্রী লিজ টেইলরও। যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের অনেক হাইপ্রোফাইল ব্যক্তি এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। হাসপাতালটির ক্যানসার চিকিৎসাসেবা নিয়ে প্রশংসা করে থাকে ইউরোপের বিভিন্ন মান নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান।
লন্ডন ক্লিনিকের বহির্বিভাগে প্রতি বছর গড়ে এক লাখ ১০ হাজার মানুষ চিকিৎসা নেন। হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন ২৩ হাজার রোগী।
আজ বিমানবন্দরে খালেদা জিয়াকে তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন। এ ছাড়া হিথ্রো বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানিয়েছেন ছেলে তারেক রহমান, নাতনি জাইমা রহমান, পরিবারের সদস্যরাসহ বিএনপির নেতাকর্মীরা। এর আগে বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টায় কাতারের দোহা বিমানবন্দরে পৌঁছায় খালেদা জিয়াকে বহনকারী এয়ার অ্যাম্বুলেন্স। সেখানে আড়াই ঘণ্টা বিরতির পর এটি লন্ডনের উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
গতকাল মঙ্গলবার রাত ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে ঢাকা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে রওনা হন বিএনপি প্রধান। এর আগে রাত ৮টা ১৫ মিনিটে খালেদা জিয়ার গাড়িবহর রাজধানীর গুলশান-২ এর ৭৯ নম্বর রোডের বাসভবন ফিরোজা থেকে যাত্রা শুরু করে। রাস্তায় দুই ধারে হাজার হাজার সাধারণ মানুষ দুহাত তুলে তাকে বিদায় জানান। রাত ১০টা ৫০ মিনিটে তিনি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান।
সরেজমিনে দেখা যায়, গুলশান থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত দলের নেতাকর্মীদের খালেদা জিয়াকে বহনকারী গাড়ি চারপাশ ঘিরে বিদায়ী শুভেচ্ছা জানাতে থাকে। স্লোগান স্লোগানে মুখর করে তুলে। রাস্তার দুপাশে নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও খালেদা জিয়াকে একনজর দেখার জন্য দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকেন। মানুষের সারি দেখা যায়। সন্তানকে কোলে নিয়ে এক মাকে বলতে শোনা যায়, ‘দেখ দেখ ওই যে খালেদা জিয়া।’নেতাকর্মীদের মুখেও আবেগপ্রবণ কথা শোনা যায়।