২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৩শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / দুপুর ২:১৮
২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৩শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / দুপুর ২:১৮

রাশিয়ার গ্যাস ছাড়া আগামী শীত পর্যন্ত চলতে পারবে ইউরোপ

ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ইউরোপের দেশগুলোয় গ্যাস সংকট দেখা দেবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলো জ্বালানি নিরাপত্তা জোরদার করার উদ্যোগ নিয়েছে। একই সঙ্গে রাশিয়ার ওপর থেকে জ্বালানিনির্ভরতা কাটিয়ে উঠতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে এসব দেশ। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বৈশ্বিক জ্বালানি, কেমিক্যাল, খনি ও পুনঃব্যবহারযোগ্য শক্তি নিয়ে গবেষণা ও পরামর্শসেবাদাতা প্রতিষ্ঠান উডম্যাকেঞ্জি জানায়, ইউরোপে গ্যাস সংরক্ষণ নিয়ে পাঁচ বছর মেয়াদি পরিকল্পনা করা হয় যা শেষের দিকে রয়েছে এবং এরই আলোকে আগামী শীতকাল পর্যন্ত রাশিয়ার গ্যাস ছাড়াই চলতে পারবে ইইউ। খবর: ইয়াহু ফাইন্যান্স।

রাশিয়ার গ্যাস ছাড়া দীর্ঘমেয়াদে টিকে থাকার বিষয়টি বেশ জটিল হলেও নতুন বা বিকল্প পেলে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। অর্থনীতিবিদ ও বিশ্লেষকরা জানান, রাশিয়া থেকে তেল-গ্যাস না কিনলে বিশ্বে তেমন প্রভাব পড়বে না। তাই রাশিয়ার ওপর থেকে নির্ভরতা কমে আসলে স্বস্তিতে থাকবে দেশগুলো। এমনকি এ স্বস্তির কারণে জার্মানির মতো বৃহৎ অর্থনীতির দেশগুলো নতুন জ্বালানি নীতি নিয়ে ভাবছে। ২০৩৫ সালের মধ্যে পুনঃব্যবহারযোগ্য জ্বালানি শক্তিতে সক্ষমতা অর্জন করতে চায় জার্মানি। অথচ কয়েকদিন আগে তেল ও গ্যাসের কারণে যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ শুরুর দিকে রাশিয়ার জ্বালানি খাতের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে দ্বিধায় ছিল। সেই দ্বিধা নেই ইউরোপের নেতাদের মধ্যে।

ইইউ তাদের চাহিদার এক তৃতীয়াংশ গ্যাস পায় রাশিয়া থেকে। তবে দেশগুলোর চাহিদায় তারতম্য রয়েছে। যেমন জার্মানির গ্যাসের চাহিদার অর্ধেক আসে রাশিয়া থেকে। রাশিয়া থেক ইতালি তাদের চাহিদার ৪০

শতাংশ গ্যাস আমদানি করে। তবে দক্ষিণ-পূর্ব দেশগুলোর মধ্যে স্পেন ও পর্তুগাল রাশিয়া থেকে গ্যাস আমদানি করে না। তবে দক্ষিণ-পূর্ব থেকে পশ্চিমের ইইউ দেশগুলোর প্রায় সবাই রাশিয়ার প্রাকৃতিক গ্যাসের ওপর শতভাগ বা প্রায় শতভাগ নির্ভরশীল।

রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞার ঘোষণায় পুতিন পাল্টা শোধ নিতে পারেন। এ আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছে না ইইউ। তাই শিগগির বিকল্প খুঁজে বের করতে চায় দেশগুলো। এমনকি উচ্চমূল্যের হলেও। তবে আপাতত তাড়াহুড়ার কিছু নেই বলে মনে করে ইউরোপিয়ান কমিশন। তারা জানায়, পরবর্তী শীতকাল পর্যন্ত কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এরপর কী হবে? এরপরের শীতগুলোয় কী হবে? রাশিয়াভীতি কিংবা নিষেধাজ্ঞা শিথিল না হলে কী হবে? এ প্রশ্নগুলোও সদুত্তর না দিলেও কমিশন মনে করে, শীত শেষের পথে এবং এখন থেকে আগামী শীত পর্যন্ত গ্যাসের চাহিদা কম থাকবে। চলতি মাসের শেষের দিক থেকে চাহিদা কমে আসবে।

ইউরোপিয়ান এনার্জি কমিশনার কাদরি সিমসন বলেন, আমাদের বর্তমান মূল্যায়ন অনুযায়ী এ শীতকালটি নিরাপদে পার হবে নিশ্চিত। এই মুহূর্তে পূর্ব থেকে পশ্চিমে গ্যাসের যথেষ্ট প্রবাহ ঠিক রয়েছে। এলএনজি গ্যাসের সরবরাহে কোনো সমস্যা নেই। আগের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বিতরণ বেড়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। সংরক্ষিত গ্যাসের ব্যবহার কমে আসবে এবং আমাদের মজুতের ৩০ শতাংশ উদ্বৃত্ত থাকবে। এখন দেশগুলো সম্মিলিতভাবে গ্যাসের মজুত ধরে রাখা ও যেখানে বেশি প্রয়োজন সেখানে গ্যাস পাঠানোর একটি চুক্তি করতে চায় বলে জানান সিমসন।

তিনি আরও বলেন, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধের অর্থ শুধু আমাদের জন্য নিরাপত্তা ইস্যু নয়, জ্বালানি শক্তির ক্ষেত্রেও সমস্যা। যুদ্ধ নিঃসন্দেহে নাজুক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।

আমরা তৃতীয় কোনো দেশকে আমাদের জ্বালানি বাজার অস্থির করে দেয়ার সুযোগ করে দিতে পারি না।

Facebook
Twitter
LinkedIn