২৮শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১৩ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৬শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / রাত ৪:২৫
২৮শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১৩ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৬শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / রাত ৪:২৫

রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দিল না চীন ভারত আমিরাত

ইউক্রেনে রুশ অভিযান থামাতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের এক প্রস্তাবে ভোট দেওয়া থেকে বিরত থেকেছে ভারত এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত। এছাড়া প্রস্তাবের বিপক্ষে রাশিয়া ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করায় এমনিতেই পাস হয়নি প্রস্তাবটি। ভোট দানে বিরত থেকেছে আরেক ভেটো ক্ষমতার অধিকারী দেশ চীনও। তবে প্রশ্নের মুখে পড়েছে ভারতের পদক্ষেপ। এর একটি ব্যাখ্যা দিয়েছে দিল্লি।

দিল্লি জানিয়েছে, ভিন্নতা এবং বিরোধ নিরসনের একমাত্র উত্তর হলো সংলাপ। আর ইউক্রেন সংকট নিরসনে কূটনীতির পথ পরিহার করায় ‘দুঃখ’ প্রকাশ করেছে ভারত।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে কঠিন কূটনৈতিক ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করছে ভারত। কঠিন ভাষায় রুশ পদক্ষেপের সমালোচনা করলেও দেশটি মস্কোর বিরুদ্ধে ভোট দেওয়া বন্ধ করে দেয়।

নিরাপত্তা পরিষদে ভোটাভুটির আগে রাশিয়ার বিরুদ্ধে জোরালো পদক্ষেপ নিতে ভারতের ওপর চাপ তৈরি করে যুক্তরাষ্ট্র। বৃহস্পতিবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে ফোন করেন। ওই ফোনালাপে ব্লিনকেন রাশিয়ার বিরুদ্ধে ‘জোরালো সমন্বিত প্রতিক্রিয়া’ দেখানোর আহ্বান জানান। ব্লিনকেন দাবি করেন ইউক্রেনের ওপর রাশিয়া ‘পূর্বনির্ধারিত, উস্কানিহীন এবং অন্যায় আক্রমণ চালাচ্ছে।’

ওই ফোনালাপের কয়েক ঘণ্টা পর জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ভোটে নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকে ভারত। পরে একটি ব্যাখ্যা প্রকাশ করে কূটনীতির পথে ফিরে আসার আহ্বান জানায়।

জাতিসংঘে নিযুক্ত ভারতের স্থায়ী দূত টিএস ত্রিমূর্তি তার ব্যাখ্যায় বলেন, ‘ইউক্রেনের ঘটনাপ্রবাহের সাম্প্রতিক মোড়ে ভারত গভীরভাবে বিরক্ত। সব সদস্য দেশের আন্তর্জাতিক আইন এবং জাতিসংঘ সনদের প্রতি শ্রদ্ধা দেখানো উচিত, এগুলোই সামনে আগানোর গঠনমূলক পথ।’

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে এ নিয়ে তিনবার জরুরি বৈঠকে বসেছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। আবার ঘটনাক্রমে চলতি ফেব্রুয়ারি মাসে নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতি হিসেবেও দায়িত্বপালন করছে রাশিয়া।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এবারই প্রথম ইউরোপের প্রথম দেশ হিসাবে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ এবং সমুদ্রপথে ইউক্রেনে সবচেয়ে বড় হামলা শুরু করেছে। একসঙ্গে তিন দিক দিয়ে হওয়া এই হামলায় ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র বৃষ্টির মতো পড়েছে। এছাড়া ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের চেরনিহিভ, খারকিভ এবং লুহানস্ক সীমান্ত পেরিয়ে হাজার হাজার রুশ সৈন্য স্থলপথে দেশটিতে ঢুকে পড়েছে।

সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের রাস্তায়ও। শনিবার এক বিবৃতিতে কিয়েভের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই মুহূর্তে আমাদের শহরের রাস্তায় রাস্তায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে। বিবৃতিতে শহরের বাসিন্দাদের বাড়ির জানালার কাছে বা ব্যালকনিতে না যেতে সতর্ক করা হয়েছে।

ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বলেছেন, রাশিয়ার বাহিনী রাজধানী কিয়েভ পুরোপুরি দখলে নেওয়ার চেষ্টা করছে। এরপর তারা দেশটির নেতৃত্বকে ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টা করবে।

রাজধানী কিয়েভের মাইডান স্কয়ারের কাছে একটি বড় ধরণের বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে এবং শহরের ত্রয়েশ্চিনা এলাকায় একাধিক বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, কিয়েভের ওপর গোলা হামলার শব্দ এতোটাই তীব্র ছিল যে শহরের কেন্দ্র থেকে কয়েক মাইল দূর পর্যন্ত শব্দ পেয়েছেন তারা।

কিয়েভ ইন্ডিপেন্ডেন্ট বলছে, শহরের চিড়িয়াখানার কাছে এবং শুলিয়াভকা শহরের আশেপাশে ৫০টিরও বেশি বিস্ফোরণ এবং ভারী মেশিনগানে গোলাগুলি হয়েছে।

Facebook
Twitter
LinkedIn