লাইসেন্সের মেয়াদ না থাকা, টেস্ট না করেই করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) পরীক্ষার ভুয়া রিপোর্ট দেয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুর শাখা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশনার কথা জানানো হয়েছে।
রিজেন্টের দুই হাসপাতাল বন্ধের সিদ্ধান্ত জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অনুমোদন না থাকা সত্ত্বেও আরটি-পিসিআর পরীক্ষার নামে ভুয়া রিপোর্ট দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়া, তাগিদ দেয়া সত্ত্বেও লাইসেন্স নবায়ন না করাসহ আরও অনিয়ম তারা করেছে বলে প্রমাণিত হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অনিয়মের অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় মেডিকেল প্র্যাক্টিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিক অ্যান্ড ল্যাবটরেটরি রেগুলেশন অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী ওই হাসপাতালের কার্যক্রম অবিলম্বে বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
যদিও করোনা সংক্রমণ শুরুর পরপরই গত মার্চে রিজেন্ট হাসপাতালকে কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসার জন্য নির্দিষ্ট করেছিল স্বাস্থ্য অধিদফতর। কিন্তু করোনা পরীক্ষার জাল সনদ তৈরি ও বিক্রির অভিযোগ পেয়ে সোমবার উত্তরায় রিজেন্ট হাসপাতাল ও রিজেন্ট গ্রুপের প্রধান কার্যালয়ে অভিযান চালায় র্যাব। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলমের নেতৃত্বে অভিযানে র্যাব করোনার ভুয়া রিপোর্ট দেয়ার প্রমাণ পায়। এছাড়া হাসপাতালটির লাইসেন্সের মেয়াদ ৬ বছর আগেই শেষ হয়ে যাওয়ার প্রমাণ পেয়েছে র্যাব। কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড হওয়ায় রোগীদের কাছ থেকে টাকা না নেয়ার কথা থাকলেও হাসপাতালটির বিরুদ্ধে করোনা টেস্ট ও ভর্তি রোগীদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা নেয়ারও অভিযোগ রয়েছে।
মঙ্গলবার বিকাল ৪টার দিকে গণমাধ্যমকে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম বলেন, রিজেন্ট গ্রুপের প্রধান কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে সেখানেও অনুমোদনহীন টেস্ট কিট ও বেশ কিছু ভুয়া রিপোর্ট পাওয়া গেছে। এজন্য রিজেন্ট হাসপাতাল ও রিজেন্ট গ্রুপের প্রধান কার্যালয় সিলগালা করা হয়েছে। এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
র্যাব-১-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল শফিউল্লাহ বুলবুল গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা হাসপাতালটির মিরপুর ও উত্তরা শাখায় অভিযান চালিয়েছি। উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টরে হাসপাতালটির কাছের একটি ভবনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় তাদের কার্যালয়। সেখান থেকে কিছু ডকুমেন্টস উদ্ধার করা হয়েছে। হাসপাতালটির লাইসেন্সের মেয়াদ নেই। এ ছাড়া টেস্ট না করে করোনা রোগীদের পজিটিভ ও নেগেটিভ রিপোর্ট দেয়া হতো।
এসব অনিয়মের সঙ্গে হাসপাতালটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদই জড়িত বলে জানান র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম। তিনি বলেন, চেয়ারম্যান নিজেই এসব ডিল করেছেন। হাসপাতালটির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাসুদসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।