২৭শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ / ১৩ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৭শে রজব, ১৪৪৬ হিজরি / সকাল ১০:৫৭

ল্যানসেটের ১০ বিজ্ঞানীর তালিকায় সেঁজুতি সাহা

এবার বিশ্বের খ্যাতনামা বিজ্ঞান সাময়িকী ল্যানসেটের সম্প্রতি প্রকাশিত বিশ্বের ১০ বিজ্ঞানীর প্রোফাইলে স্থান পেয়েছে বাংলাদেশি বিজ্ঞানী সেঁজুতি সাহা। সেঁজুতি একজন জীববিজ্ঞানী।

ল্যানসেট একটি ইংল্যান্ডভিত্তিক সুপ্রসিদ্ধ বিজ্ঞান সাময়িকী। ১৮২৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এ সাময়িকী সুপ্রাচীন এবং বিজ্ঞানীদের জন্য অত্যন্ত মর্যাদাশীল। সেই ল্যানসেটেই এবার এল বাংলাদেশি বিজ্ঞানী সেঁজুতি সাহার নাম।

সেঁজুতির সহযোগী, কানাডার ম্যাকগিল ইউনিভার্সিটির মহামারি ও বৈশ্বিক স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান মধুকর পাই বলেছেন, ‘বৈশ্বিক স্বাস্থ্য খাতে নারী বিজ্ঞানীদের এক অসাধারণ রোল মডেল সেঁজুতি। অসাম্য ও অন্যায্যতার বিষয়েও তিনি উচ্চকণ্ঠ।

সেঁজুতি সাহা অলাভজনক প্রতিষ্ঠান চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের (সিএইচআরএফ) পরিচালক। ল্যানসেট তাঁর সম্পর্কে বলেছে, তিনি বৈশ্বিক স্বাস্থ্য গবেষণা নিয়ে সমতার পক্ষে এক জোরদার কণ্ঠ। সেঁজুতি এবং সিএইচআরএফে তাঁর দল মিলে জীবাণুর জিন নকশা উন্মোচন (জিনোম সিকোয়েন্সিং) কিংবা ভাইরাসের গবেষণায় রত থাকেন। বাংলাদেশের শিশুদের আক্রান্ত করে এমন কিছু রোগ, যেমন ডেঙ্গু বা চিকুনগুনিয়া নিয়ে তাঁদের গবেষণা অব্যাহত আছে।

ল্যানসেটে প্রোফাইল প্রকাশের পর সেঁজুতি সাহা বলেন, যখন ল্যানসেট আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে, আমি অবাক হয়েছিলাম যে ল্যানসেট আমাদের কাজ সম্পর্কে এতটা জানে! আমি খুব গর্বিত বোধ করছি যে ল্যানসেটের মতো একটি জার্নাল একজন বাংলাদেশি বিজ্ঞানীকে নিয়ে একটি প্রোফাইল লিখেছে। এটি বিশ্বের কাছে আমাদের দেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করবে।

করোনাভাইরাসের প্রকোপে এখনো বিশ্ব আক্রান্ত। ২০২০ সালের মার্চ মাসে দেশে প্রথম করোনাভাইরাসের রোগী শনাক্ত হয়। সেঁজুতি সাহার নেতৃত্বে দেশে প্রথম করোনাভাইরাসের জিন নকশা উন্মোচিত হয়। সেঁজুতি বলেন, ‘সক্ষমতা থাকলে কত ইতিবাচক কাজ করা যায়, এটি ছিল তারই উদাহরণ। প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার করতে আমরা আত্মনিয়োগ করেছি।

বিজ্ঞানের জন্য, আরও বিশদে বলতে গেলে মানুষের কল্যাণের জন্য বিজ্ঞানকে কাজে লাগাতে বিজ্ঞানমনস্ক একটি পরিবেশ তৈরি করা দরকার। দরকার বিজ্ঞানশিক্ষার প্রসার। আর এসবের শুরুটা হওয়া দরকার স্কুল পর্যায়ে। আর শিশুদের বিজ্ঞানের দিকে টানতে চাই বিশেষ উদ্যোগ। সেঁজুতির কাজ শুধু শিশুদের রোগ থেকে রক্ষা নয়, শিশুদের বিজ্ঞানমনস্ক করে তোলার জন্যও তিনি ছুটে বেড়ান দেশময়। তাঁর কাজ দেখে শিশুদের বাবা-মায়েরাও আপ্লুত হয়ে তাঁকে চিঠি লিখেছেন। এমন এক চিঠি সেঁজুতিকে নিয়ে ল্যানসেটের লেখায় উঠে এসেছে। যেখানে অভিভাবকেরা লিখেছেন, ‘আমাদের সন্তানেরা বিজ্ঞানী হোক, এটা চাই। আমরা কখনো ভাবিনি, এটা একটা পেশা হতে পারে। কারণ, আমরা কোনো দিন বিজ্ঞানী দেখিনি। সত্যি বলতে কি, কোনো নারী বিজ্ঞানী দেখিনি।’

Facebook
Twitter
LinkedIn