দক্ষিণ-পূর্ব ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’ শক্তি সঞ্চয় করে প্রবল রূপ ধারণ করেছে। ঘূর্ণিঝড়টি উত্তর-পশ্চিমে ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ ও উড়িষ্যা উপকূলের দিকে আরও এগিয়েছে। বাংলাদেশের উপকূল থেকেও কমেছে এর দূরুত্ব। তাতে অশনি নিয়ে শঙ্কা কাটছে বাংলাদেশের।
এদিকে ‘অশনি’ ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করলেও সাইক্লোন এটি শেষ পর্যন্ত স্থলভাগে আছড়ে পড়বে কিনা এ নিয়ে সংশয় রয়েছে। আবহাওয়াবিদদের একাংশের মতে, সমুদ্রেই শক্তি হারিয়ে ফেলবে ‘অশনি’। সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, এটি ঘণ্টায় ১৯ কিলোমিটার বেগে উত্তর-পশ্চিম দিকে এগোচ্ছিলো। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় সোমবার (৯ই মে) বৃষ্টি বাড়বে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সমুদ্রবন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে অধিদপ্তর জানিয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’ উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে বর্তমানে পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। এটি গত মধ্যরাতে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ১১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৭০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার, যা দমকা বা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ১১৭ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় খুবই উত্তাল রয়েছে সাগর।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।
এদিকে, ভারতের আবহাওয়া বিভাগ (মৌসুম ভবন) জানিয়েছে, আগামী ১০ মে ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের উত্তর অন্ধ্র প্রদেশ ও উড়িষ্যা উপকূলের কাছাকাছি গিয়ে উত্তর ও উত্তর-পূর্বদিকে বাঁক নিতে পারে। ১২ মে’র দিকে এটি দুর্বল হয়ে উড়িষ্যা, পশ্চিমবঙ্গ হয়ে বাংলাদেশের খুলনা-সাতক্ষীরা-বরিশাল উপকূল অতিক্রম করতে পারে।