২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৩শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / রাত ৮:৪৭
২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৩শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / রাত ৮:৪৭

শিক্ষক থেকে ভয়ংকর সিএনজি ছিনতাইকারী চক্রের নেতা শ্রীনগরের হাবীব

শিক্ষক থেকে ভয়ংকর সিএনজি ছিনতাইকারী চক্রের নেতা শ্রীনগরের হাবীব

মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ
শ্রীনগর উপজেলার বিবন্দী বাগবাড়ি গ্রামের মারফত আলী শেখের ছেলে হাবীবুর রহমান শামীম। পড়ালেখা শেষ করে নিজ গ্রামের বর্ণমুখর কিন্ডার গার্টেনে শিক্ষকতা শুরু করে। পাশাপাশি কোচিং সেন্টারে পড়াত। ২০০৪ সালে কিন্ডার গার্টেনের শিক্ষকতা পাশাপাশি বন্ধু খোকনের বাড়ি থেকে মোবাইল চুরি করে ধরা পরে এবং চাচা জাব্বার ডাক্তারের নৌকা চুরি করে ধরা পরলে এলাকা ছেড়ে চলে যায় ঢাকার কেরাণীগঞ্জে। সেখানে কখনো শামীম কখনো শাকিল সহ বিভিন্ন ছদ্ম নাম ধারণ করে জড়িয়ে পরে নানা অপকর্মে। এক সময় নিজেই গড়ে তুলে সিএনজি ছিনতাইকারী চক্র। মাঝে মাঝে এলাকায় আসত। এলাকার লোকজন তাকে শিক্ষিত ভদ্রলোক হিসাবেই চিনে। কিন্তু হাবীব এই কাজের হোতা এটা জানার পর এলাকার লোকজনের কাছে তা অবিশ্বাস্য মনে হয়।

হাবীবের সংগঠিত করা চক্রটি ঢাকা-কেরাণীগঞ্জ ও পাশর্^বর্তী এলাকা থেকে যাত্রী সেজে সিএনজি ভাড়া করে নির্জন এলাকায় নিয়ে তা ছিনতাই করত। ছিনতাইয়ের আগে কখনো কখনো চালককে কোমল পানীয়ের সাথে খাওয়ানো হতো ঘুমের ঔষধ। সিএসজি চালক যাতে সন্দেহ করতে না পারে এজন্য হাবীব তার ৪র্থ স্ত্রী মায়ানুর সুমীকে ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য করে নেয়।

বুধবার দুপুরে শ্রীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ হেদায়াতুল ইসলাম ভূঞা সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য দেন। তিনি জানান, হাবীব ও তার স্ত্রী সহ এই চক্রের ৪ সদস্যকে মঙ্গলবার দুপুরে শ্রীনগর উপজেলার কেসি রোডের তন্তর ইউনিয়নের সুফিগঞ্জ এলাকায় সিএনজি চালককে অস্ত্রের মুখে ছিনতাইয়ের সময় স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় পুলিশ আটক করে।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে হাবীব জানায়, তারা কয়েকদিন আগে প্ল্যান করে সিএনজি ভাড়া করে শ্রীনগর উপজেলার আলমপুর-বাড়ৈখালী সড়কের নির্জনস্থানে এনে তা ছিনতাই করবে। পরিকল্পনা মতো মঙ্গলবার সকাল ১০ টার দিকে চালক রানা হাওলাদারের সিএনজিটি কেরাণীগঞ্জের খোলামোড়া থেকে ৫ জন মিলে ভাড়া করে। বেলা ১১ টার দিকে আলমপুর-বাড়ৈখালী সড়কের মাঝা মাঝি এসে তারা সিএনজি থেকে নামে। এসময় হাবীবের স্ত্রী সুমী চালক রানা হাওলাদারকে ঘুমের ঔষধ মিস্ত্রিত মজো খেতে বললে সে তা প্রত্যাখান করে। পরে তারা পরিকল্পনা পরিবর্তন করে। হাঁসাড়া বাজারে এসে চালক রানার হাত-পা বাধার জন্য লাইলনের রশি কিনে। সেখানে কিছুক্ষন অবস্থান করার পর তারা সিএনজিতে উঠে কিসে রোডের তন্তর এলাকার নির্জন স্থানে নিয়ে আসে। এসময় হাবীব চালক রানার গলায় ছুরি ধরে রাখে। বাকীরা তার হাত-পা বাধা শুরু করলে সে সিএনজি থেকে লাফ দিয়ে পরে চিৎকার শুরু করে। রাণার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে পাভেল,ফজলুল করিম ও সুমীকে আটক করে। হাবীব ও শান্ত ওরফে জিএম পুকুরে ঝাপ দিয়ে কচুরি পানায় লুকিয়ে থাকে। বিকাল ৪টার দিকে হাবীব কচুরি পানা থেকে উঠে আসার সময় স্থানীয়রা তাকে আটক করে পাশেই অবস্থান নেওয়া পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

অফিসার ইনচার্জ হেদায়াতুল ইসলাম আরো বলেন, হাবীব ও তার স্ত্রী সুমির বিরুদ্ধে কেরাণীগঞ্জ থানায় দ্রুত বিচার আইনে মামলা রয়েছে। হাবীব শুভাঢ্যা পশ্চিম পাড়ার সুমন মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া। স্ত্রী সুমীর বাবার বাড়িও ওই এলাকায়। তার বাবার নাম আলী হোসেন। ছিনতাইকারী চক্রের বাকী ৩ জনের মধ্যে পাভেলের বাড়ি ময়মনসিংহের ওয়ারলেছ গেট এলাকায়। ফজলুল করিমের (৩য় স্ত্রীর ভাই) বাড়ি শরিয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার গৌড়িসার বাজার গ্রামে। পলাতক শান্ত কামরাঙ্গীন চরের বাদশা মিয়ার গলির ভাড়াটিয়া। অনেকদিন ধরে হাবীবের নেতৃত্বে চক্রটি একই কায়দায় সিএনজি ছিনতাই করে আসছে। তাদের বিরুদ্ধে শ্রীনগর থানায় মামলা হয়েছে।

Facebook
Twitter
LinkedIn