আর মাত্র একদিন পরেই পর্দা নামবে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের পূর্বাচলে চলা ২৭তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার। শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে মেলা। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানই দিচ্ছে বিভিন্ন অফার। ক্রেতা-দর্শনার্থীরাও ভিড় জমাচ্ছেন স্টলগুলোতে। ইলেকট্রনিকস, কাপড়, আসবাবপত্র, রান্না সামগ্রী, প্রসাধন থেকে শুরু করে খাদ্যপণ্যের ওপর রয়েছে বিশেষ ছাড়। সেই সঙ্গে দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের উপহার।
আজ (সোমবার) মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিদিন সকাল থেকেই দর্শনার্থী বাড়তে থাকে বাণিজ্যমেলায়। কেউ সপরিবারে, কেউ বন্ধু-বান্ধবী, স্কুল-কলেজের সহপাঠীদের নিয়ে দলবেঁধে মেলায় এসেছেন। এদের একটি অংশ মেলায় ঘুরতে এলেও বেশিরভাগই ব্যস্ত কেনাকাটায়।
এদিকে, মেলায় ক্রেতাদের বেশি আগ্রহ দেখা গেছে গৃহস্থালি বিভিন্ন পণ্যের প্রতি। প্লাস্টিক পণ্যের পাশাপাশি রয়েছে প্রেসার কুকার, জুস মেকার, ওভেন, রাইস কুকার, ইস্ত্রি, ইন্ডাকশন চুলা, ফ্যানসহ নানা ধরনের ইলেকট্রনিক ও গৃহস্থালি পণ্য। মেলায় বিভিন্ন স্টলগুলোতে চলছে নানান অফার। যেসব স্টলে ছাড় বেশি সেখানে ক্রেতাদের ভিড়ও বেশি।
ক্রেতাদের আকর্ষণে বিভিন্ন ধরনের লোভনীয় অফার দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। মূল্য ছাড়, তিনটি কিনলে একটি ফ্রি- এই রকমের অফারে হুমড়ি খেয়ে পণ্য কিনছেন ক্রেতারাও। সব বয়সের ক্রেতা ও দর্শনার্থীর পদচারণায় জমে উঠেছে এবারের বাণিজ্য মেলা। মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থী বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে কেনাকাটাও। মেলা পুরোদমে জমে ওঠায় ব্যবসায়ীদের মুখে ফুটেছে স্বস্তির হাসি।
তবে ক্রেতাদের অভিযোগ, মেলায় সব পণ্যের দাম বেশি। অনেক কোম্পানি ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে মূল্যছাড় দিলেও পণ্যের দাম বেশি রাখছে। পণ্যের দাম বাড়িয়ে এর সঙ্গে অন্যান্য পণ্য ফ্রি দেওয়া হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, মেলায় এখন যারা আসছেন তাদের বেশির ভাগই কিছু না কিছু কিনছেন। ফলে বেনাকেনাও হচ্ছে প্রচুর।
বাণিজ্যমেলা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে শেষ করতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সচিব ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘দিন যতই যাচ্ছে মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থী সমাগম বাড়ছে। মেলা শেষের দিকে হওয়ার কারণে দর্শনার্থীর সংখ্যা ছুটির দিন ছাড়াও অনেক রয়েছে। মেলায় দর্শনার্থীরা যাতে হয়রানির শিকার না হন সে কারণে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের টিম ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রয়েছে। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তৎপর রয়েছেন মেলায় দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা দিতে।’
উল্লেখ্য, এবার দেশি-বিদেশি মিলে মেলায় মোট ৩৫১টি স্টল, প্যাভিলিয়ন, মিনি প্যাভিলিয়ন রয়েছে। গতবার এই সংখ্যা ছিল ২২৫টি। দেশি প্রতিষ্ঠান ছাড়াও সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, কোরিয়া, ভারতসহ ১০টি বিদেশি রাষ্ট্রের ১৭টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। মেলায় প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ৪০ টাকা এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ২০ টাকা প্রবেশ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রতিবন্ধীদের জন্য প্রবেশ মূল্য ফ্রি। মেলা খোলা থাকে সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। মেলা চলবে ৩১শে জানুয়ারি পর্যন্ত।