২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৩শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / রাত ৮:৪৭
২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৩শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / রাত ৮:৪৭

সবজির দামে স্বস্তি

বাজারে শীতের সবজির সরবরাহ বেড়েছে। ফলে কয়েক দিন ধরে উত্তাপ ছড়ানোর পর কমতে শুরু করেছে দাম। এতে ভোক্তারা কিছুটা স্বস্তি পেলেও দুশ্চিন্তা রয়ে গেছে অন্যান্য নিত্যপণ্যে। আগে থেকে বাড়তি দরে বিক্রি হওয়া বহু পণ্যের দামে এখনও সুখবর মেলেনি।
রাজধানীর বাজারে গত সপ্তাহের তুলনায় শীতের কয়েকটি সবজি তুলনামূলক কম দামে বিক্রি হচ্ছে। গতকাল কারওয়ান বাজার, মালিবাগ ও তেজগাঁওয়ের কলোনি বাজারসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে এই তথ্য জানা গেছে। তবে ভোক্তারা বলছেন, এখন শীতের সবজির ভরা মৌসুম। এ সময় সবজির কেজি ২০ থেকে ২৫ টাকার মধ্যে থাকার কথা। সেই তুলনায় দাম ঢের বেশি।
মালিবাগ বাজারে সালেহা বেগম নামে একজন ক্রেতা সমকালকে বলেন, শিমের দাম কমেছে। তবে গাজর, টমেটোসহ অনেক সবজির দামই চড়া। শীতের সময় সবজির দাম যেই পর্যায়ে থাকা উচিত, এখনও তার চেয়ে বেশি দাম নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
শিমের কেজিতে দাম কমেছে অর্ধেকেরও বেশি। বাজারে এক কেজি শিম পাওয়া যাচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে। যা গত সপ্তাহে কিনতে খরচ হতো ১০০ থেকে ১১০ টাকা। প্রতিটি ফুলকপি ও বাঁধাকপির দাম ১০ থেকে ১৫ টাকা কমেছে। এই সবজি দুটির পিস বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়, যা এতদিন বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা।
বাজারে কাঁচা টমেটো এসেছে। বিক্রেতারা কেজিপ্রতি দাম নিচ্ছেন ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। তবে পাকা টমেটো কিনতে ক্রেতাদের খরচ হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা। কলিসহ পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। গত সপ্তাহে এই সবজিটির কেজিপ্রতি দর ছিল ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। এ সপ্তাহে দাম ৫ টাকা কমেছে। এ ছাড়া দেশি পেঁয়াজ ৫৮ থেকে ৬০ টাকায় এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ৪৫ থেকে ৪৮ টাকায় বিক্রি করছেন খুচরা বিক্রেতারা।
নতুন আলুর দামও কিছুটা কমতির দিকে। প্রতি কেজি আলুর দাম রাখছেন বিক্রেতারা ১০০ থেকে ১২০ টাকা। তবে পুরোনা আলুর দাম আগের মতোই; প্রতি কেজি দাম পড়বে ২০ থেকে ২৫ টাকা। গাজরের দাম ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়। এ ছাড়া বরবটি, পটোল, করলা, শসাসহ বেশিরভাগ সবজি ৩০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
তবে অন্যান্য নিত্যপণ্যের দামে কষ্টে আছেন সীমিত আয়ের মানুষ। তেজগাঁওয়ের কলোনি বাজারে হান্নান নামে একজন অটোরিকশাচালক সমকালকে জানান, আটা, চিনি ও তেলের দাম এত বেশি, সেগুলোতে হাত দেওয়া যায় না। দিনে যা পরিমাণ আয় করেন তা দিয়ে প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে পারেন না তিনি।
কারওয়ান বাজারে বেলাল হোসেন নামে একজন বেসরকারি চাকরিজীবী বলেন, সবজি থেকে শুরু করে নিত্যপণ্যের সব ব্যবসায়ীরা জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিকে পুঁজি করে পণ্যের দাম বাড়াচ্ছেন। এতে কষ্ট বাড়ছে নিম্ন আয়ের মানুষের। চাহিদার তুলনায় কম পণ্য কিনতে হচ্ছে তার মতো বহু ক্রেতার।
আটা-ময়দা, চিনি, মসুর ডাল, সয়াবিন তেল চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে। চালের দামে খুব বেশি হেরফের দেখা যায়নি। কারওয়ান বাজারের একজন মুদি দোকানদার জানান, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে পরিবহন ভাড়া বেড়ে গেছে। বিভিন্ন কোম্পানি তাদের পণ্যের দাম আরও বাড়ানোর ইঙ্গিত দিচ্ছেন। গত সপ্তাহে কয়েকটি কোম্পানি আটা-ময়দার দাম বাড়িয়েছে। সামনের দিনগুলোতে নিত্যপণ্যের দাম আরেক দফা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা তার। দুই থেকে তিন মাস ধরে ব্রয়লার মুরগির আকাশচুম্বী দামে নাকাল ছিলেন রাজধানীবাসী। শীতের মৌসুমে বাজারে সাধারণত ব্রয়লারের দাম কম থাকার কথা। কিন্তু ব্রয়লারের কেজিতে ভোক্তাকে গুনতে হচ্ছে ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা। বাজারভেদে ডিমের ডজন ১০৫ থেকে ১১৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

Facebook
Twitter
LinkedIn