ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ ছাড়া বিএনপি কোনোভাবেই নির্বাচনে যাবে না বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, আন্দোলনের মাধ্যমে সরকার পতন ঘটানোর বিকল্প কোনো পথ নেই। এই সরকারের অধীনে কোনোভাবেই আগামী জাতীয় নির্বাচনে যাবে না বিএনপি। সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তবেই বিএনপি নির্বাচনে যাবে, নতুবা নয়।
শনিবার (১১ মার্চ) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত মানববন্ধনে এসব কথা বলেন তিনি। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে প্রধান অতিথি ছিলেন মির্জা ফখরুল।
যুগপৎ আন্দোলন কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ সারাদেশের জেলা ও মহানগরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে বিএনপি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার বিএনপিকে নির্মূল ও বিএনপি নেতৃত্বকে ধ্বংস করতে চায়। এরা পরিকল্পিতভাবে দেশের সকল প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করেছে। দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করে দেশের মানুষকে আর বোকা বানানো যাবে না। এরা আজকে ঘুষ দিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের ২০৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার খায়েশ হয়েছে। তাই তারা নীল নকশার মাধ্যমে ২০২৪ এর নির্বাচন করতে চায়। কিন্তু বিএনপি শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না।
ক্ষমতাসীনরা নতুন করে গ্রেফতারের ভয় দেখানো শুরু করেছে অভিযোগ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, তারা গ্রেফতার, মামলা দিয়ে দেশের মানুষকে দমিয়ে রাখতে চায়। সরকার দেশকে আজ নরকে পরিণত করেছে।
তিনি বলেন, সিদ্দিকবাজারে ভবন বিস্ফোরণ, চট্টগ্রামে ও সায়েন্স ল্যাবের বিস্ফোরণের ঘটনার দায় সরকারকে নিতে হবে।
দুর্নীতির কারণে সরকারের উন্নয়নের ফানুস চুপসে গেছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, অসৎ উদ্দেশ্যে ক্ষমতায় টিকে থাকতে সরকার দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করছে। জনগণকে জিজ্ঞেস করলে তারাও বলবে শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না।
বিএনপির আন্দোলনে সরকার উসকানি দিচ্ছে ও তাদের গাত্রদাহ হচ্ছে দাবি করে ফখরুল বলেন, অতীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য ১৭৩ দিন সহিংস আন্দোলন করেছে আওয়ামী লীগ। কিন্তু বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দেখে সরকারের গায়ে জ্বালা হচ্ছে।
তিনি বলেন, সরকার চক্রান্ত শুরু করেছে। পঞ্চগড়ে হামলার ঘটনায় বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে মামলা, গ্রেফতার করে হয়রানি করা হচ্ছে। এসব বন্ধ করতে হবে।
বিএনপি সংঘাতে যেতে চায় না জানিয়ে দলটির মহাসচিব বলেন, ১০ দফা দাবি মেনে নিয়ে পদত্যাগ করুন। নতুবা বিএনপির আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর হবে, এর মাধ্যমে সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুর সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বকুল প্রমুখ।
মানববন্ধনে বিএনপির ১০ দফা দাবি বাস্তবায়নে আগামী ১৮ মার্চ শনিবার সারাদেশের মহানগরে প্রতিবাদ সমাবেশের ঘোষণা দেন ফখরুল।