সারাদেশে হেলথ আইডি প্রদান করা হবে জানিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ১০৬টি উপজেলার প্রতিটি কমিউনিটি ক্লিনিক কর্ম এলাকায় ৫ থেকে ৭ জন করে মোট ২১ হাজার ৫৬ জন মাল্টিপারপাস হেলথ ভলান্টিয়ার (এমএইচভি) নির্বাচন করা হয়েছে। কমিউনিটি পর্যায়ের খানা সদস্যদের স্বাস্থ্য-তথ্য সংগ্রহ করে প্রতিটি ব্যক্তির জন্য হেলথ আইডি প্রদান কার্যক্রম ৩২ উপজেলায় চলমান রয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের সরকারের এই পদক্ষেপসমূহ গ্রহণের ফলে স্বাস্থ্যখাতে অর্জিত ব্যাপক সাফল্য আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে। স্বাস্থ্যখাতে আমাদের সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ এমডিজি পুরস্কার, সাউথ-সাউথ পুরস্কার, গ্যাভি পুরস্কার ও ভ্যাক্সিন হিরো পুরস্কারের মতো অনেক সম্মানজনক আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেছি।
মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) কমিউনিটি ক্লিনিকের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে এসব কথা বলেন তিনি।
কমিউনিটি ক্লিনিকের ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গৃহীত সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে কমিউনিটি ক্লিনিকের ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করায় আমি আনন্দিত। এ উপলক্ষে আমি সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সদ্য স্বাধীন দেশের তৃণমূল পর্যায়ে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কমিউনিটি ক্লিনিকের ধারণা প্রবর্তন করেন। মাত্র সাড়ে ৩ বছরেই দেশের সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে তৎকালীন মহকুমা ও থানা পর্যায়ে স্বাস্থ্য অবকাঠামো গড়ে তুলেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদের শুরুতেই আমরা দেশব্যাপী প্রতি ৬ হাজার গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জন্য একটি করে মোট ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। সেই আলোকে ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল জাতির পিতার জন্মস্থান গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতী ইউনিয়নে আমি দেশের সর্বপ্রথম ‘গিমাডাঙ্গা কমিউনিটি ক্লিনিক’ প্রতিষ্ঠা করে এর শুভ সূচনা করি এবং ২০০১ সালের মধ্যেই আমরা ১০ হাজার ৭ শত ২৩টি অবকাঠামো স্থাপনপূর্বক প্রায় ৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিকের কার্যক্রম চালু করি।
‘বর্তমানে মোট ১৪ হাজার ১৫৮টি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে এবং ১৪ হাজার ১২৭টি কমিউনিটি ক্লিনিকে কোভিড ভ্যাকসিন প্রদানসহ প্রাথমিক স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা ও পুষ্টিসেবা কার্যক্রম চালু রয়েছে,’ বলেন তিনি।
সরকার প্রধান বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকের একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো- এটি সরকার ও জনগণের সম্মিলিত অংশীদারত্বের একটি সফল কার্যক্রম যার ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখা এবং স্থায়িত্বের লক্ষ্যে আমাদের সরকার ‘কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট আইন’ মহান জাতীয় সংসদে পাস করেছে।
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনের মাধ্যমে কমিউনিটি ক্লিনিকে সেবার পাশাপাশি করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন গ্রহণ এবং স্বাস্থ্য-সুরক্ষা বিষয়ক নিয়মনীতি মেনে চলার বিষয়ে জনগণকে অবহিত করতে হবে। আমি আশা করি, দেশের স্বাস্থ্যখাতের সব ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিক অগ্রণী ভূমিকা রাখবে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ২০৪১ সালের মধ্যেই আমরা বাংলাদেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের ‘সোনার বাংলাদেশ’ হিসেবে গড়ে তুলব, ইনশাল্লাহ্।