কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে সাজানো হচ্ছে গাবতলীর স্থায়ী পশুর হাট। প্রস্তুত করা হচ্ছে নতুন নতুন অস্থায়ী শেড। আকর্ষণীয় ডিজাইনে সাজানো হচ্ছে প্রধান ফটক। বসানো হচ্ছে ওয়াচ টাওয়ার। বিকাশ ও রকেটের মতো মোবাইল ব্যাংকিংয়ের জন্যও বুথ তৈরি করা হচ্ছে। গাবতলী পশু হাটের এমন চিত্র ফুটে উঠেছে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে।
সাধারণত ঈদের ১০-১৫ দিন আগে থেকে স্থায়ী ও অস্থায়ী পশুর হাটগুলো সাজানোর প্রস্তুতি নেন ইজারাদাররা। গাবতলীর স্থায়ী পশুর হাটে শুরু হয়েছে সেই প্রস্তুতি; চলছে শেষ মুহূর্তের তোড়জোড়।
বাঁশ ও ত্রিপল দিয়ে তৈরি হচ্ছে বিশাল ছাউনি। হাটের ভেতরের রাস্তা পরিষ্কার করা হচ্ছে। কোথাও কোথাও অপ্রয়োজনীয় কাদামাটি অপসারণ করা হচ্ছে। একই সঙ্গে গণশৌচাগারের আশপাশে মাটি ফেলে তা ব্যবহার উপযোগী করার কাজও চলছে।
এমন সাজ সাজ রবের মধ্যে দাম নিয়ে ভাবছেন সংশ্লিষ্টরা। ধারনা করছেন , সিলেট-সুনামগঞ্জ আর উত্তরাঞ্চলের বন্যায় খামারিদের প্রচুর গরু মারা গেছে। খাবারের অভাবে অনেকে অল্প টাকায় গরু-ছাগল বিক্রি করে দিচ্ছেন। তাই কোরবানির সময় এবার পশুর দাম বেড়ে যাবে। অর্থাৎ গরুর দাম এবার বেশি হতে পারে।
গাবতলী স্থায়ী পশুর হাট পরিচালনা কমিটির সদস্য সানোয়ার হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, প্রতিবারের মতো তারা এবারও প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কোরবানির হাট নিয়ে কোনো বিষয়েই গাফিলতির সুযোগ নেই। হাটে ব্যবসায়ীদের টাকা জমা দেওয়ার ভোগান্তি কমাতে এবার কমপক্ষে ৫০টি হাসিল কাউন্টার তৈরি করা হবে। এছাড়া হাটে দেড় হাজার স্বেচ্ছাসেবী কাজ করবেন। গত কোরবানিতে হাসিল ছিল শতকরা সাড়ে তিন শতাংশ। তবে ঈদের পাঁচ দিন পাঁচ শতাংশ হাসিল আদায় করা হয়। একইভাবে এবারও হাসিল আদায় করা হবে।’
তিনি জানান, হাটের পশুর চিকিৎসা আর ব্যবসায়ীদের তাৎক্ষণিক চিকিৎসায় বসানো হচ্ছে আলাদা চেম্বার। যেখানে পশু চিকিৎসকসহ বসবেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকও। এছাড়া জাল টাকার লেনদেন প্রতিরোধে আনা হবে মেশিন।
রাজধানীতে প্রতি বছর এই ঈদে ক্রেতাদের সবচেয়ে বেশি ভিড় জমে প্রধান ও স্থায়ী বাজার গাবতলী পশুর হাটে।
উল্লেখ্য, এ বছর রাজধানীতে মোট ১৯টি কোরবানির পশুর হাট বসানোর উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। এর মধ্যে দুটি হলো স্থায়ী হাট, যেগুলোতে বছরের অন্য সময়ও পশু বিক্রি হয়। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে রয়েছে গাবতলী স্থায়ী হাট আর দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে রয়েছে সারুলিয়া স্থায়ী হাট। এই হাট দুটি ছাড়া ১৭টি অস্থায়ী হাট বসানো হবে।
অস্থায়ী হাটগুলোর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় বসবে ১০টি আর উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় বসবে ৭টি। এছাড়া ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ডিজিটাল হাট চালু থাকবে।
করোনা পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণে থাকায় পশুর হাট এবার বেশ জমজমাট হবে বলে আশা করছেন হাট সংশ্লিষ্টরা। গত বছর বেপারিরা ক্ষতির মুখে পড়ে ছিলেন। এবার ভালো লাভের আশা করছেন তারা।