সাপ্তাহিক ছুটির দিনে সৈকত শহর কক্সবাজারে নেমেছে পর্যটকের ঢল। কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে ওঠে যেন সাগর তীর।
যে যার মতো করে মেতে ওঠেন নোনাজলে। করোনার কারণে লকডাউনের আশংকায় অনেকে আগে ভাগেই যেন ঘুরে যাচ্ছেন বিশ্বের বৃহত্তম এ সমুদ্র সৈকত। পর্যটকদের সমুদ্রস্নানে নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ সজাগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন লাইফ গার্ড কর্মীরা। আর পর্যটকদের হয়রানি রোধে সবসময় মাঠে রয়েছে জেলা প্রশাসন।
সাপ্তাহিক ছুটির দিনে সৈকত শহর কক্সবাজারে পর্যটক আসবে না, তা কি হয়! শুক্রবার ( সকাল থেকেই প্রতিটি পয়েন্টে দলে দলে নামতে শুরু করেন ভ্রমণপিপাসুরা। সাগরের নোনাজলে নেমেই যেন সব প্রশান্তি। পর্যটকদের আনন্দ যেন আর ধরে না।সুগন্ধা পয়েন্টে আগত পর্যটক রহিম উদ্দিন বলেন, অনেক দিনের ইচ্ছে ছিল কক্সবাজার আসব। কিন্তু সময় হয়ে উঠেনি। তবে শত ব্যস্ততার মাঝেও সাপ্তাহিক ছুটির দিনে পরিবার-পরিজন নিয়ে আসতে পেরেছি এটাই ভালো লাগছে।আরেক পর্যটক হুমায়ারা বেগম বলেন, সমুদ্রের নোনাজলে গা ভাসিয়ে আলাদা শান্ত পাওয়া যায়। দেশের অন্যান্য স্থান থেকে কক্সবাজারের সমুদ্রেই সবচেয়ে ভালো লাগে। তাই ছুটি নিয়ে বার বারই কক্সবাজার আসি। কক্সবাজারে একটা আলাদা প্রশান্তি খুঁজে পাওয়া যায়।
আরেক পর্যটক রিয়াদ আহমেদ বলেন, শীতের এই পরিবেশ কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে অনেক ভালো লাগছে। কোন জায়গায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে না। যার কারণে কক্সবাজার ঘুরে বেশ আনন্দ পাচ্ছি।এদিকে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের আশঙ্কায় দেয়া হয়েছে নানা নির্দেশনা। সামনে আবারো আসতে পারে লকডাউন। তাই আগেভাগে অনেকে ঘুরে যাচ্ছেন কক্সবাজার।লাবণী পয়েন্টে আগত পর্যটক রুমিনা খান বলেন, করোনার বিধি-নিষেধ সামনে কঠোর হতে পারে। তাই পরিবার নিয়ে ঘুরতে চলে এলাম। বেশ ভালোভাবে সমুদ্র সৈকতে গোসল ও ঘুরাঘুরি করছি স্বামী-সন্তান নিয়ে।আরেক পর্যটক হাবিবুর রহমান বলেন, কক্সবাজার আসার ইচ্ছে ছিল ফেব্রুয়ারি মাসে। কিন্তু দেখছি, করোনা যে হারে বাড়ছে, তাতে লকডাউন দিতে পারে। তাই সাপ্তাহিক ছুটির দিনকে কেন্দ্র করে কক্সবাজার চলে এলাম। অনেক মানুষ, খুব ভালো লাগছে, বেশ আনন্দ করছি। সমুদ্রস্নানে পর্যটকদের নিরাপত্তায় সার্বক্ষণিক নজরদারি বাড়িয়েছেন লাইফ গার্ড কর্মীরা।সী সেইফ লাইফ গার্ড সংস্থার ইনচার্জ মো. শুক্কুর বলেন, নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহে লাখেরও বেশি পর্যটকের সমাগম হয়েছে। সৈকতের শৈবাল পয়েন্ট হতে কলাতলী পয়েন্টের সাগরতীর জুড়ে মানুষ আর মানুষ। সবাই বেশ মজা করছে, নোনাজলে গোসল করছে। তাই পর্যটকদের সমুদ্রস্নানে নিরাপত্তায় ৩টি পয়েন্টেই লাইফ গার্ড কর্মীরা সার্বক্ষনিক নিয়োজিত রয়েছে। যাতে পর্যটকরা কোন ধরণের দুর্ঘটনার শিকার না হয়।কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পর্যটন ও প্রটোকল শাখার নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট সৈয়দ মুরাদ ইসলাম বলেন, হোটেল মোটেল ও পর্যটন সংশ্লিস্টদের হিসেব অনুযায়ী কক্সবাজারে আনুমানিক এক লাখেরও বেশি পর্যটকের সমাগম হয়েছে। আগত পর্যটকদের হয়রানি রোধে সার্বক্ষনিক বেশ কয়েকজন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মাঠে রয়েছে। প্রশাসন সবসময় পর্যটকদের পাশে রয়েছে।সমুদ্র সৈকতের পাশাপাশি পর্যটকরা ঘুরে বেড়ান ইনানী, হিমছড়ি, পাটুয়ারটেক ও প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনও।