২০১৬ সালের ইডেন গার্ডেনের সেই কান্না এখনও ভুলেন নি এই ইংলিশ অলরাউন্ডার। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ষষ্ঠ আসরের ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে শেষ ওভারে বল হাতে নিজ দেশের হয়ে লড়াই করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন বেন স্টোকস।
ইডেনের সেই কান্না মেলবোর্নে মুছে দিলেন এই ইংলিশ ক্রিকেটার। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অষ্টম আসরের ফাইনালে স্টোকসের ব্যাটে পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়ে বিশ্বকাপ জিতল ইংল্যান্ড। এ জয়ে দীর্ঘ ১২ বছর পর পল কলিংউডের উত্তরসূরি হিসেবে ইংলিশদের হয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণের শিরোপা জিতল জস বাটলারের নেতৃত্বাধীন ‘থ্রি লায়ন্স’।
১৩৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শাহিনের বলে বোল্ড হয়ে ১ রান করে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন হেলস। এরপর জস বাটলার রীতিমত চড়াও হন পাকিস্তান বোলারদের উপর। নাসিম শাহর করা দ্বিতীয় ওভারে ১৪ রান তুলে আগ্রাসী শুরুর ইঙ্গিত দেয় ইংল্যান্ড।
কিন্তু হারিসের করা পাওয়ার প্লের চতুর্থ ও শেষ ওভারে দুইটি উইকেটের পতন ঘটে। সাজঘরে ফিরে যান অধিনায়ক জস বাটলার ও ফিল সল্ট। পাওয়ার প্লে শেষে ইংল্যান্ড ৩ উইকেট হারিয়ে ৪৯ রান সংগ্রহ করে।
মিডেল ওভারে পাকিস্তান বোলারদের দেখেশুনে খেলতে থাকে বেন স্টোকস ও হ্যারি ব্রুকস। শাদাব খানদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে চাপে পড়ে ইংলিশ ব্যাটাররা। ১৩তম ওভারে ব্রুকস বিদায় নিলে ম্যাচে ফিরে পাকিস্তান।
কিন্তু এক প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা বেন স্টোকস আগ্রাসী ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। ৪৯ বলে অপরাজিত ৫২ রানের ইনিংস খেলে ইংলিশদের টি-টোয়েন্টিতে দ্বিতীয় শিরোপা নিশ্চিত করেছেন তিনি।
এর আগে মেলবোর্নে হাইভোল্টেজ এই ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নেমে পাওয়ার প্লেতে মোহাম্মদ রিজওয়ানকে হারায় ২০০৯ বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়নরা। ইনিংসের অষ্টম ওভারে মোহাম্মদ হারিসকে হারিয়ে আরো বিপাকে পড়ে বাবর আজমরা। তবে তৃতীয় উইকেট জুটিতে ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দেন শান মাসুদ ও বাবর। লিভিংস্টোনের করা ১১তম ওভারে ১৬ রান তুলে বড় সংগ্রহের আভাস দেয় পাকিস্তান।
কিন্তু ইংলিশ বোলারদের জোড়া আঘাতে ৮৪ রানে ২ উইকেট থেকে ৮৫ রানে ৪ উইকেটের পতন ঘটে বাবরদের। ৩২ রান করে সাজঘরে ফিরেন পাকিস্তান অধিনায়ক। অপরদিকে ক্রিজে নেমে ৬ বল খেলে রানের খাতায় খুলতে পারেন নি ইফতিখার আহমেদ।
পঞ্চম উইকেট জুটিতে শাদাব খান ও মাসুদ আবারও ইনিংসের হাল ধরেন। তাদের ২৫ বলে ৩৬ রানের জুটিতে বড় সংগ্রহের ভীত পায় পাকিস্তান। কিন্তু আবার আনপ্রেডিক্ট্যাবল খ্যাত পাকিস্তান নিজেদের সরুপে ফিরে আসে। শেষ দিকে ইংলিশ বোলারদের তোপে মাত্র ১৩৭ রান করতে সক্ষম হয় তারা। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৮ রান করেন শান মাসুদ।
ইংলিশদের হয়ে তিনটি উইকেট নেন স্যাম কারান। আদিল রশিদ ও ক্রিস জর্ডান নেন দুইটি করে উইকেট। বল হাতে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হন কারান।
২০১০ সালে বার্বাডোজের সেই বিজয় উল্লাস ১২ বছর পর মেলবোর্নে আবারও রাঙালেন ইংলিশরা।