দশ বছরেও সুরাহা হয়নি বহুল আলোচিত বেসিক ব্যাংকে ঋণ জালিয়াতির। ব্যাংকের তিন শাখা থেকে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা লুটপাটের রহস্য উদঘাটন করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
অনুসন্ধান ও তদন্তে অগ্রগতি বলতে দুদক কেলেঙ্কারির ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৫৬টি মামলা করেছে। এর মধ্যে দুই মামলার চার্জশিট জমা হলেও তদন্ত প্রতিবেদন অসম্পূর্ণ হওয়ায় তা গ্রহণ করেননি আদালত। ফলে এই কেলেঙ্কারির সমাপ্তি কবে ঘটবে এ নিয়ে দুদক চিন্তিত। যদিও ঋণের প্রায় ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা পুনরুদ্ধারকে সাফল্য হিসেবে দাবি করছে দুদক। তবে আইন অনুযায়ী দুদক এখন পর্যন্ত এই ঘটনায় প্রকৃত অপরাধীদের শনাক্ত করে বিচারের মুখোমুখি করতে পারেনি।
কেলেঙ্কারির বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মঈন উদ্দিন আব্দুল্লাহ বলেছেন, কোনো ঘটনাই অনন্তকাল ধরে চলতে পারে না। বেসিক ব্যাংকের ঘটনারও সুরাহা হবে। রোববার সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুর্নীতি প্রমাণ করা খুবই দুরূহ ব্যাপার। কারণ এক সময় অভিযোগকারী, সাক্ষী কেউই সঠিক তথ্য দেয় না। তারা নানা কারণে এড়িয়ে যায়। তবে কোনো কিছুই আটকে থাকবে না বলে জানান তিনি।
বেসিক ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতির ঘটনা নিয়ে ২০১৮ সালের ৩০ মে দেশের সর্বোচ্চ আদালত হাইকোর্ট বিভাগ দুদকের ১০ জন তদন্ত কর্মকর্তাকে তলব করে ক্ষোভ, উষ্মা ও হতাশা প্রকাশ করেন। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিম সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ ওই সময় প্রকৃত হোতাসহ দোষীদের আসামি করে তদন্ত শেষ করার নির্দেশনা দেন। কিন্তু এরপরও কেটে গেছে দুই বছর।
সেই সময় বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আলোচিত আবদুল হাই বাচ্চুকে পাঁচ দফা এবং বিভিন্ন সময়ে দায়িত্বে থাকা পরিচালনা পর্ষদ সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও মামলার চার্জশিট দেয়া হয়নি। মামলা তদন্তের একপর্যায়ে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে জানা যায়, বেসিক ব্যাংকে দুর্নীতির কিছু টাকা মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশে পাচার হয়েছে। সে বিষয়ে দুদকের পক্ষ থেকে মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স রিকোয়েস্ট (এমএলআর) পাঠানো হলেও এখনও যথাযথ জবাব মেলেনি বলে জানা গেছে।