কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে আফগানিস্তানের ক্রিকেট। দেশটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর তালেবানরা মেয়েদের ক্রিকেটে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় অনিশ্চয়তায় ঝুলছে তাদের ভবিষ্যৎ। তবে হুট করে কোনো সিদ্ধান্ত না নিয়ে আপাতত সেখানকার ক্রিকেট পর্যবেক্ষণ করতে চায় আইসিসি।
বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্তা সংস্থাটির চেয়ারম্যান গ্রেগ বার্কলে জানালেন, পরিস্থিতি তাদের জন্যও চ্যালেঞ্জিং। জটিলতার শুরু তালেবানরা নতুন করে আফগানিস্তানে ক্ষমতা দখলের পর থেকে। আগের মেয়াদে দেশে ছেলে-মেয়ে সবার জন্যই ক্রিকেট নিষিদ্ধ করে রেখেছিল তারা। এবার ছেলেদের ক্রিকেট চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিলেও মেয়েদের ক্রিকেট নিয়ে অটল থাকে আগের অবস্থানেই। কিন্তু আইসিসির পূর্ণ সদস্য হওয়ার একটি মানদণ্ড হলো, নারী ক্রিকেটের একটি কার্যকর প্রোগ্রাম থাকতে হবে। ২০১৭ সালে আফগানিস্তানের ছেলেদের দলকে টেস্ট মর্যাদা দেওয়ার সময় শর্ত দেওয়া হয়েছিল যে, সেখানে মেয়েদের দল গড়তে হবে এবং মেয়েদের ক্রিকেটের উন্নয়নে কাজ করতে হবে। মেয়েদের ক্রিকেট নিয়ে আফগানিস্তানের কঠিন অবস্থানে প্রতিবাদ করে অস্ট্রেলিয়া।
‘সবার জন্য খেলা’ নীতিতে বিশ্বাসী ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া স্থগিত করে দেয় আফগানিস্তান ছেলে দলের বিপক্ষে তাদের একমাত্র টেস্ট ম্যাচটি। হোবার্টে আগামী ২৭ নভেম্বর হওয়ার কথা ছিল ওই ম্যাচ। শুধু তাই নয় এমন পদক্ষেপের সমালোচনা করেছেন সাবেক-বর্তমান অনেক ক্রিকেটারই। আফগানিস্তান নারী ক্রিকেটে তালেবানদের হস্তক্ষেপের কারণে দাবি উঠছে দেশটির টেস্ট মর্যাদা বাতিলের। কোনো দেশের টেস্ট মর্যাদা কেড়ে নিতে হলে ১৭ সদস্যের আইসিসি বোর্ডের দুই-তৃতীয়াংশ ভোট প্রয়োজন। এখনই সে পথে এগোচ্ছে না আইসিসি। আফগান ক্রিকেট পর্যবেক্ষণের জন্য সম্প্রতি হওয়া বোর্ড সভায় একটি কমিটি গঠন করে তারা। যার প্রধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ইমরান খাওয়াজাকে। তার সঙ্গে আছেন রস ম্যাককলাম, লসন নাইডু ও রমিজ রাজা। আফগানিস্তান ক্রিকেট নিয়ে আগামী মাসে তারা প্রতিবেদন জমা দিবেন। এর ওপর অনেকটাই নির্ভর করবে আফগানদের ক্রিকেট ভাগ্য। এই মুহূর্তে অপেক্ষা করা ছাড়া আর কোনো পথ নেই বলে জানালেন আইসিসি প্রধান বার্কলে।
“আইসিসির সদস্য থাকার জন্য, যে কোনো দেশকে কিছু মানদণ্ড মেনে চলতে হবে। এই মুহূর্তে তাদের কোনো সীমালঙ্ঘন দেখিনি, তাই সদস্য হিসেবে তাদের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখব আমরা।” পরিস্থিতি কঠিন হলেও ইতিবাচক কিছুরই ইঙ্গিত দিয়েছেন বার্কলে। তার মতে, নারীদের ক্রিকেট নিয়ে আফগানিস্তানের অবস্থান পরিবর্তনের আভাস মিলছে। “এটা (আফগানিস্তানের ক্রিকেট) চ্যালেঞ্জিং একটি পরিস্থিতি, (গত) অগাস্টের আগেও তা ছিল। আমরা এখন যা করতে পারি, তা হলো পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা। আশা করি, এই বিষয়গুলো সমাধান হয়ে যাবে।
আমরা দেখতে পাব, নারী ক্রিকেটের উন্নতি অব্যাহত আছে।” “অগাস্টের আগে মন্থর তবে প্রত্যক্ষ উন্নতি হয়েছিল। আমরা সেটা অব্যাহত দেখতে চাই। আমরা কিছু বার্তা পাচ্ছি, নারীদের ক্রিকেট নিয়ে একটা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হবে। দেখা যাক কী হয়।”