করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন নিয়ে অনেকটা দুশ্চিন্তায় সারা বিশ্ব। ভাইরাসের নতুন এই ধরনটি ঠিক কতটা ভয়ঙ্কর তা জানতে সারা বিশ্বেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হয়ে বলা যাচ্ছে ওমিক্রন রোধে কোন টিকা সবচেয়ে বেশি কার্যকর।
যুক্তরাজ্যের গবেষকরা গবেষণায় দেখেছেন, ডেলটা ভ্যারিয়েন্টের ক্ষেত্রে সুরক্ষার হার ৯৭ শতাংশ হলেও ওমিক্রনের মারাত্মক প্রভাব থেকে বাঁচাতে বুস্টার ডোজ ৮০ থেকে সর্বোচ্চ ৮৫ শতাংশ পর্যন্ত কার্যকর।
ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের গবেষকরা ওমিক্রন নিয়ে এ পর্যন্ত যত তথ্য পেয়েছেন সেগুলোর কম্পিউটার মডেলিং করে এ তথ্য পেয়েছেন। তাদের মতে, ওমিক্রনের মারাত্মক অবস্থা থেকে বুস্টার ডোজে কমপক্ষে ৮০ শতাংশ ও সর্বোচ্চ ৮৫ দশমিক ৯ ভাগ সুরক্ষা পাওয়া যাবে। অর্থাৎ বুস্টার ডোজ পাওয়া প্রতি ১০০ জনের মধ্যে কমপক্ষে ৮০ জনকে হাসপাতালে যেতে হবে না।
ওমিক্রনের বেলায় এ ধরনের গাণিতিক মডেলকে যথেষ্ট মনে করছেন না ইউকে ভ্যাকসিন টাস্কফোর্সের সাবেক চেয়ার ড. ক্লাইভ ডিক্স। বিবিসিকে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের মডেলে বিশাল অনিশ্চয়তা আছে। ওমিক্রনের কারণে হাসপাতালে ভর্তি, আইসিইউতে নিয়ে যাওয়া ও মৃত্যুর আরও অন্তত একমাসের তথ্য হাতে পাওয়ার পর বুস্টার ডোজ নিয়ে আমরা আত্মবিশ্বাসী হতে পারবো।’
ইমপেরিয়ালের গবেষণা দলের একজন প্রফেসর আজরা গনি জানালেন, ‘ওমিক্রনের সিভিয়ারিটির পরিসর সম্পর্কে জানতে আরও কয়েক সপ্তাহ প্রয়োজন। তবে সম্ভাব্য যেকোনও প্রভাব মোকাবিলায় সরকারকে পরিকল্পনা হাতে রাখতে হবে।’ আর এক্ষেত্রে বুস্টার ডোজকে বড় পরিসরে জনস্বাস্থ্যের সুরক্ষার একটি অংশ মনে করেন প্রফেসর আজরা।
বিশ্বে দ্রুত ছড়াচ্ছে করোনার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট। যুক্তরাজ্যে বৃহস্পতিবার শনাক্ত ছিল ১৬৯১ জন, শুক্রবারে তা প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে হয় ৩২০১ জন। এ পর্যন্ত দেশটিতে ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়েছে ১৪ হাজার ৯০৯ জন। ওমিক্রনের রি-ইনফেকশনের হার, অর্থাৎ একবার পুনরায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অন্য ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি বলেও জানা গেছে ইমপেরিয়ার কলেজের গবেষণায়।
এদিকে বাংলাদেশে ট্রায়ালে করোনাভাইরাসের বুস্টার ডোজ দেওয়ার কার্যক্রম আগামী রোববার (১৯ ডিসেম্বর) থেকে শুরু হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেছেন, প্রথমে সম্মুখসারির ডাক্তার, নার্স, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, গণমাধ্যমকর্মী এবং বয়স্কদের এই বুস্টার ডোজের আওতায় আনা হবে। দেশের প্রায় সাত কোটি মানুষকে করোনাভাইরাসের প্রথম ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে এবং প্রায় সাড়ে চার কোটি মানুষকে দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেওয়া সম্পন্ন হয়েছে। ১২ কোটি মানুষকে টিকার আওতায় আনা হবে। তবে ইতোমধ্যে ৩০ ভাগ মানুষকে দুই ডোজ করে টিকা দেওয়া সম্ভব হয়েছে।