আজ (১৮ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস উদযাপিত হচ্ছে।
‘শতবর্ষে জাতির পিতা সুবর্ণে স্বাধীনতা/অভিবাসনে আনবো মর্যাদা ও নৈতিকতা’ প্রতিপাদ্যে দিবসের মূল ও জাতীয় অনুষ্ঠান সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ অতিমারি ও ভূ-রাজনৈতিক নানা কারণে অভিবাসন আজ কঠিন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। অভিবাসীদের অধিকার ও স্বার্থ রক্ষায় বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আইন, কনভেনশন ও সনদগুলোতে বর্ণিত বিধানাবলির যথাযথ প্রতিপালন আবশ্যক।’ তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন— অভিবাসী শ্রমিকরা যেন কোনোরূপ শোষণ, বঞ্চনা ও হয়রানির শিকার না হন, তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সবাই সচেষ্ট থাকবেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘শ্রম-অভিবাসন বিশ্বব্যাপী উন্নয়নের অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। আমাদের অভিবাসী কর্মীরা দেশের জন্য আয় করছেন বৈদেশিক মুদ্রা বা রেমিট্যান্স, অবদান রাখছেন দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে। অপরদিকে, দেশের অবকাঠামো উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের মাধ্যমে তারা দেশের সুনাম বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিচ্ছেন। রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়ন ও জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আমাদের অভিবাসী কর্মীরা বিশেষ অবদান রাখছেন।’
প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, ‘সরকার অভিবাসন ব্যবস্থায় সুশাসন, গুণগত মানসম্পন্ন বৈদেশিক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি এবং অভিবাসী কর্মী ও তাদের পরিবারের কল্যাণ নিশ্চিত করতে বহুমুখী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।’
তিনি বলেন, ‘‘বৈশ্বিক শ্রমবাজারে কোভিড-১৯ এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ায় অনেক অভিবাসী ইতোমধ্যে দেশে প্রত্যাবর্তন করেছেন। আমরা তাদের জন্য স্বল্প সুদে ও সহজ শর্তে ঋণ এবং পুনর্বাসন কার্যক্রম গ্রহণ করেছি। এ পর্যন্ত প্রায় তিন লাখ প্রবাসী কর্মীকে বিশেষ ব্যবস্থায় ‘সুরক্ষা’ অ্যাপের আওতায় এনে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে।’’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় আমরা ৫ মিলিয়ন নতুন বৈদেশিক কর্মসংস্থানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি। এজন্য উপজেলা পর্যায়ে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনসহ বিশ্ব চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ কোর্স চালু, আন্তর্জাতিক সনদায়নের মতো নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমাদের যুবসমাজকে এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে দক্ষ হতে হবে এবং বিশ্ব শ্রমবাজারে বাংলাদেশের সুনাম সমুন্নত রাখতে হবে।’
আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস প্রতি বছর ১৮ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সকল সদস্যভুক্ত দেশে পালিত হয়ে আসছে।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ২০০০ সালের ৪ ডিসেম্বর এ দিনটিকে বিশ্বব্যাপী উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেয়। মূলত বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ব্যাপক হারে অভিবাসন ও বিপুলসংখ্যক অভিবাসীর স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি ঘিরেই এ দিবসের উৎপত্তি। ১৯৯০ সালের ১৮ ডিসেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ অভিবাসী শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা এবং তাদের পরিবারের ন্যায্য অধিকার রক্ষায় আন্তর্জাতিক চুক্তি ৪৫/১৫৮ প্রস্তাব আকারে গ্রহণ করে।