সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্সের আইপিও তহবিলের অর্থ ব্যবহার সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় নথিপত্র দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে কোম্পানিটি পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু করলেও আইপিও তহবিলের অর্থ ব্যবহার সম্পর্কিত নথিপত্র জমা দেয়নি।
সম্প্রতি এ বিষয়ে সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠিয়েছে বিএসইসি। একই সঙ্গে বিষয়টি ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই-সিএসই) কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
বিএসইসির চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্সের আইপিও’র মাধ্যমে সংগৃহীত তহবিল ব্যাংকে এককালীন স্থায়ী আমানত (এফডিআর), করপোরেট বন্ড ও সরকারি টি-বন্ড বা মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ এবং আইপিও খরচ খাতে ব্যবহার করবে। কিন্তু কোম্পানি এ বিষয়ে কোনো সহায়ক নথি দেয়নি। ফলে কোম্পানিটিকে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯ এর ধারা ১১(২) অনুযায়ী সহায়ক নথিগুলো জমা দিতে বলা হলো। এ চিঠি জারির সাত কার্যদিবসের মধ্যে তথ্যগুলো বিএসইসিতে দাখিল করতে হবে।
আইপিও তহবিলের ব্যবহার সংক্রান্ত নথিপত্র দাখিলের জন্য চারটি নির্দেশনার বিষয়ে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে—কোম্পানিকে এফডিআর ও টি-বন্ডে বিনিয়োগের জন্য এফডিআর ফরমগুলো এবং টি-বন্ডের সার্টিফিকেশনের কপি জমা দিতে হবে। মিউচুয়াল ফান্ড এবং করপোরেট বন্ডে বিনিয়োগের সর্বশেষ পোর্টফোলিও (২০২১ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত) সিডিবিএল ডিপি এ৬ রিপোর্টসহ বিস্তারিত তথ্য জমা দিতে হবে। এছাড়া, আইপিও খরচের জন্য পে-অর্ডার বা ব্যাংক ড্রাফ্ট বা চেক বা ক্যাশ ভাউচারের কপি জমা দিতে হবে। ট্রাস্ট ব্যাংকে কোম্পানিটির আইপিও হিসাবের ব্যাংক স্টেটমেন্ট দাখিল করতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্সের কোম্পানি সচিব ফিরোজ সরকার বলেছেন, ‘বিএসইসি আমাদের কাছে যেসব তথ্য চেয়েছে, তা আমরা আগেই নিরীক্ষকের কাছে দিয়েছি। তবে, ওই তথ্যগুলো বিএসইসিতে দেওয়া হয়নি। বিএসইসির নির্দশনা অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ওই তথ্যগুলোর বিএসইসিতে দাখিল করা হবে।’
উল্খ্যে, আইপিও প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে গত বছরের ৭ নভেম্বর শেয়ারবাজারের লেনদেন শুরু করে সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্স। শেয়ারবাজার থেকে ১৬ কোটি টাকা উত্তোলনের জন্য প্রতিটি ১০ টাকা মূল্যে ১ কোটি ৬০ লাখ শেয়ার ইস্যু করে প্রতিষ্ঠানটি। উত্তোলিত অর্থ সরকারি সিকিউরিটিজ ক্রয়, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ, নিজস্ব অফিস স্পেস ক্রয়, তফসিলি ব্যাংকে স্থায়ী আমানত এবং আইপিও খরচ খাতে ব্যয় করা কথা রয়েছে কোম্পানিটির।
‘এন’ ক্যাটাগরির বিমা খাতের এ কোম্পানিটির মোট পরিশোধিত মূলধন ৪০ কোটি টাকা। সে হিসেবে কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ৪ কোটি। এর মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালক বা পরিচালকের হাতে ৬০ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ১৫.৯৫ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ২৪.০৫ শতাংশ শেয়ার আছে। মঙ্গলবার ডিএসইতে সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার সর্বশেষ ৮০ টাকায় লেনদেন হয়েছে।