২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৩শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / সকাল ৯:২২
২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৩শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / সকাল ৯:২২

ভারতে ১২০ জেলায় করোনা পরিস্থিতির অবনতি

ভারতে এখন করোনাভাইরাস মহামারীর তৃতীয় ঢেউ চলছে। এর মধ্যেই সরকারি তথ্যে জানা যায়, দেশটির ২৯টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ১২০টি জেলায় সাপ্তাহিক করোনা সংক্রমণের হার ১০ শতাংশ অতিক্রম করেছে। গত ২৪ ডিসেম্বরেও দেশটির মাত্র দু’টি জেলায় সংক্রমণের হার ১০ শতাংশের উপরে ছিল। সেখান থেকে ৬ জানুয়ারির মধ্যে ১৭টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৪১টি জেলায় সংক্রমণের হার ১০ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়। খবর এনডিটিভি।
সময়ের সাথে সাথে নতুন নতুন জেলায় করোনা সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পেতে থাকে। সর্বশেষ ১০ শতাংশ সংক্রমণ ছাড়িয়ে গেছে ১২০টি জেলায়। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ বা আইসিএমআর, সাপ্তাহিক পজিটিভিটির হারের বিবরণ দিয়ে প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘পরীক্ষাই হলো কোভিড সংক্রমণ রোধ করার মেরুদণ্ড, কারণ এর মাধ্যমে প্রাথমিকভাবেই আক্রান্ত ব্যক্তিকে শনাক্তকরণ এবং তাদের বিচ্ছিন্ন করে রাখার মাধ্যমে সংক্রমণ রোধ সম্ভব।
সব রাজ্যকে উপদেশ দেয়া হচ্ছে, তারা যেন পিছিয়ে থাকা অঞ্চল বিশেষ করে যেখানে আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করা সম্ভব নয়, সেসব গ্রামীণ এলাকায় দ্রুত অ্যান্টিজেন পরীক্ষার মাধ্যমে করোনাভাইরাস টেস্টের সংখ্যা বাড়ায়।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব এপিডেমিওলজির বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসন ডা: জয়প্রকাশ মুলিল বলেছেন, কোভিড-১৯-এর ওমিক্রন ধরন ‘প্রায় অপ্রতিরোধ্য’ এবং সবাই শেষ পর্যন্ত এতে সংক্রমিত হবে। বুস্টার ভ্যাকসিনের ডোজ ওমিক্রন ঠেকাতে পারবে না। তবে মুলিল দাবি করেন, ‘করোনাভাইরাসের ধরন ওমিক্রন এখন আর ভয়ঙ্কর রোগ নয়। এটি এখন এমন একটি রোগ, যা আমরা সহজেই মোকাবেলা করতে পারি।’
কোভিডকে সাধারণ ফ্লু বিবেচনার সময় আসেনি : ডব্লিউএইচও
করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট ইউরোপের অর্ধেক মানুষকে আক্রান্ত করার পথে রয়েছে। তবে এটিকে সাধারণ ফ্লু ভাইরাসের মতো অসুস্থতা বিবেচনার সময় এখনো আসেনি বলে মঙ্গলবার জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-ডব্লিøউএইচও। সংস্থাটির ইউরোপ অঞ্চলের পরিচালক হ্যান্স ক্লুজ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ২০২২ সালের প্রথম সপ্তাহে অঞ্চলটিতে ৭০ লাখের বেশি মানুষ নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন, যা তার আগের দুই সপ্তাহের তুলনায় দ্বিগুণ।
হ্যান্স ক্লুজ বলেন, ‘ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিক্স অ্যান্ড ইভালুয়েশনের পূর্বাভাস হলোÑ এই হারে আক্রান্ত হতে থাকলে আগামী ছয় থেকে আট সপ্তাহে অঞ্চলটির অর্ধেক জনগোষ্ঠী ওমিক্রনে আক্রান্ত হবে।’ তিনি জানান, ইউরোপ ও মধ্য এশিয়ার ৫৩টি দেশের মধ্যে ৫০টিতে আরো বেশি সংক্রামক ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত রোগী আছে। তবে এমন প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে, ওমিক্রন ফুসফুসের চেয়েও শ্বাসযন্ত্রের উপরের অংশকেই বেশি আক্রান্ত করছে, এতে আগের ভ্যারিয়েন্টগুলোর তুলনায় এর উপসর্গ মৃদু হচ্ছে। তবে এটি প্রমাণে আরো গবেষণা প্রয়োজন বলে সতর্ক করে দিয়েছে ডব্লিউএইচও।
ওমিক্রনের মধ্যেও স্কুল খোলা রাখতে চায় বাইডেন প্রশাসন : করোনাভাইরাসের অধিক সংক্রমণ ক্ষমতাসম্পন্ন ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের প্রাদুর্ভাব সত্ত্বেও শিক্ষার্থীদের জন্য স্কুল খোলা রাখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। এ জন্য স্কুলগুলোর কোভিড পরীক্ষার সক্ষমতা বাড়াতে চায় বাইডেন প্রশাসন। এর অংশ হিসেবে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে বিদ্যালয়গুলোকে দেয়া সহায়তার পরিমাণ বাড়ানো হবে। খবর আলজাজিরার। হোয়াইট হাউজ ঘোষণা করেছে, স্কুলগুলো ফের নিরাপদে খোলার জন্য এ মাস থেকেই বিদ্যালয়গুলোর জন্য ৫০ লাখ র্যাপিড টেস্ট এবং ৫০ লাখ ল্যাব-ভিত্তিক পিসিআর পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হবে।
এ দিকে যুক্তরাষ্ট্র করোনাভাইরাসের সাথে বসবাসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ড. অ্যান্থনি ফাউচি। ওমিক্রনের সংক্রমণ ছড়ানোর অস্বাভাবিক, নজিরবিহীন দক্ষতার কারণে চূড়ান্তভাবে সবাই আক্রান্ত হবে। কোভিডের সংক্রমণ ক্ষমতা, নতুন ভ্যারিয়েন্টে পরিবর্তনের দক্ষতা এবং বিপুলসংখ্যক টিকা না নেয়া মানুষের কথা উল্লেখ করে ড. ফাউচি বলেন, ‘এই ভাইরাস নির্মূলের কোনো উপায় নেই।’
যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনে দ্রুত কমতে পারে ওমিক্রন সংক্রমণ : ব্রিটেনে করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ চূড়ায় পৌঁছে যাওয়ার ইঙ্গিত পেতে শুরু করেছেন বিজ্ঞানীরা। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রেও করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা নাটকীয়ভাবে কমে যেতে পারে। তারা বলছেন, এর কারণ হলো অতিমাত্রায় সংক্রমণশীল ওমিক্রন হয়তো মানুষকে আক্রান্ত করার ক্ষমতা হারাচ্ছে। মার্কিন বার্তা সংস্থা এপি এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে। সিয়াটলের ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনের হেলথ মেট্রিক্স সায়েন্সেসের অধ্যাপক আলি মোকদাদ বলেন, যত দ্রুত এর সংক্রমণ বাড়ছিল তত দ্রুত কমে আসবে।
সৌদি আরবে দৈনিক সংক্রমণের নতুন রেকর্ড : সৌদি আরবে করোনাভাইরাসে দৈনিক সংক্রমণের নতুন রেকর্ড তৈরি হয়েছে। বুধবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে আরো পাঁচ হাজারেরও বেশি মানুষের কোভিড শনাক্ত হয়েছে। এ বছরের গোড়ার দিকে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের প্রাদুর্ভাব শুরুর পর থেকে দেশটিতে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা নাটকীয়ভাবে বেড়ে যেতে শুরু করে। বুধবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশজুড়ে পাঁচ হাজার ৩৬২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। একই সময়ে করোনায় মৃত্যু হয়েছে আরো দুইজনের। এর আগে দৈনিক সংক্রমণের সর্বোচ্চ রেকর্ড ছিল ২০২০ সালের জুনে। সে সময় কোভিড শনাক্ত হওয়া রোগীর সংখ্যা ছিল চার হাজার ৯১৯ জন।

Facebook
Twitter
LinkedIn