২৯শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১৪ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / রাত ২:৪৩
২৯শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১৪ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / রাত ২:৪৩

ইসি গঠনের বিল সংসদে উত্থাপন

সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের জন্য জাতীয় সংসদে বিল উত্থাপন করা হয়েছে। একইসঙ্গে আগে গঠিত সব নির্বাচন কমিশনের বৈধতাও দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে এ বিলে।

রোববার (২৩ জানুয়ারি) একাদশ জাতীয় সংসদের ষোড়শ অধিবেশনে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২’ উত্থাপন করেন। পরে বিলটি সাত দিনের মধ্যে পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।

বিগত ২০১২ এবং ২০১৭ সালে যে প্রক্রিয়া অনুসরণ করে রাষ্ট্রপতি ইসি নিয়োগ করেছিলেন, সে প্রক্রিয়াকেই আইনের অধীনে আনা হচ্ছে এ বিলের মাধ্যমে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার পদে যোগ্যতা-অযোগ্যতা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রস্তাবিত এ আইনে।

এ আইন করার উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে আইনমন্ত্রী বিলে বলেছেন, ‘প্রস্তাবিত বিলটি আইনে পরিণত হলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগদান স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হবে, গণতন্ত্র সুসংহত ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করবে এবং জনস্বার্থ সমুন্নত হবে বলে আশা করা যায়।’

বিলে বলা হয়েছে, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগদানের উদ্দেশে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক ইতোপূর্বে গঠিত অনুসন্ধান কমিটির ও তৎকর্তৃক সম্পাদিত কার্যাবলী এবং উক্ত অনুসন্ধান কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনারের নিয়োগ বৈধ ছিল বলিয়া গণ্য হইবে এবং উক্ত বিষয়ে কোনো আদালতে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করা যাবে না।’

বিলটির ওঠানোর জন্য আইনমন্ত্রী স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর অনুমতি চাইলে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ খসড়া আইনটিকে ‘প্রশ্নবিদ্ধ’ আখ্যা দিয়ে বিরোধিতা করেন। যদিও হারুনের আপত্তি সংসদের ভোটে টেকেনি।

হারুনের বক্তব্যের পাল্টা জবাব দেন আইনমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘অন্যকিছু না পেয়ে উনারা এইটা নাই, ওইটা নাই বলে নাচ-গান শুরু করেছেন’।

নির্বাচন কমিশন গঠনের আইনে যা আছে—

সিইসি ও নির্বাচন কমিশনারদের যোগ্যতা

বিলে বলা হয়েছে সিইসি এবং নির্বাচন কমিশনার পদে কোনো ব্যক্তিকে সুপারিশ করার ক্ষেত্রে তিনটি যোগ্যতা থাকতে হবে- তাকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। ন্যূনতম ৫০ বছর বয়স হতে হবে। কোনো গুরুত্বপূর্ণ সরকারি, বিচার বিভাগীয়, আধা সরকারি বা বেসরকারি পদে তার অন্যূন ২০ বছর কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

সিইসি ও নির্বাচন কমিশনারদের অযোগ্যতা

প্রস্তাবিত আইনে সিইসি এবং নির্বাচন কমিশনার পদের জন্য ছয়টি অযোগ্যতার কথা বলা হয়েছে। যদি আদালত কর্তৃক অপ্রকৃতিস্থ বলে ঘোষিত হন। দেউলিয়া হওয়ার পর দায় হতে অব্যাহতি না পেয়ে থাকেন। কোনো বিদেশি রাষ্ট্র্রের নাগরিকত্ব নেন বা বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা বা স্বীকার করেন। নৈতিক স্খলনজনিত ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে অন্যূন দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন। ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস (ট্রাইব্যুনালস) অ্যাক্ট-১৯৭৩ বা বাংলাদেশ কোলাবরেটরস (স্পেশাল ট্রাইব্যুনালস) অর্ডার-১৯৭২ এর অধীনে কোনো অপরাধেন জন্য দণ্ডিত হয়ে থাকেন। আইনের দ্বারা পদাধিকারীকে অযোগ্য ঘোষণা করছে না, এমন পদ ছাড়া প্রজাতন্ত্রের কর্মে লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত থাকেন।

বিলে বলা হয়েছে, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ অনুসন্ধান কমিটির কাজে সাচিবিক সহায়তা দেবে।

সার্চ কমিটি

খসড়া আইনে সার্চ কমিটির (অনুসন্ধান কমিটি) কাজ সম্পর্কে বলা হয়েছে, এই কমিটি স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার নীতি অনুসরণ করে দায়িত্ব পালন করবে। আইনে বর্ণিত যোগ্যতা, অযোগ্যতা অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও সুনাম বিবেচনা করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করবে।

এই অনুসন্ধান কমিটি সিইসি এবং কমিশনারদের প্রতি পদের জন্য দুই জন করে ব্যক্তির নাম সুপারিশ করবে। কমিটির গঠনের দশ কার্যদিবসের মধ্যে সুপারিশ রাষ্ট্রপতির কাছে দেবে বলে খসড়া আইনে বলা হয়েছে।

কারা থাকবেন সার্চ কমিটিতে

বিলে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি সিইসি ও নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগের জন্য যোগ্য ব্যক্তিদের নাম সুপারিশের জন্য ছয় সদস্যের অনুসন্ধান কমিটি গঠন করবেন।

এ কমিটির সভাপতি হবেন প্রধান বিচারপতি মনোনীত আপিল বিভাগের একজন বিচারক। সদস্য হিসেবে থাকবেন- প্রধান বিচারপতির মনোনীত হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারক, মহা-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, সরকারি কমিশনের চেয়ারম্যান এবং রাষ্ট্রপতি মনোনীত দুই জন বিশিষ্ট নাগরিক। তিন জন সদস্যের উপস্থিতিতে কমিটির সভার কোরাম হবে।

Facebook
Twitter
LinkedIn