২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৪শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / সকাল ১০:৩৯
২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৪শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / সকাল ১০:৩৯

নিপুনকে নিয়ে যা বললেন ফারুকী

বেশ কিছু দিন ধরেই দেখছি ফেসবুক নিপুণময়। এফডিসিতে শিল্পী সমিতির নির্বাচনে প্রার্থী নায়িকা নিপুণ নির্বাচনের আগে ও পরে আলোচনার তুঙ্গে।

কথাগুলো নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন চলচ্চিত্র নির্মাতা আশফাক নিপুণ। 

তবে শুধু আশফাক নিপুণই নন, এই নিপুন বিশ্বাসকে নিয়ে লিখেছেন আরেক জনপ্রিয় চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী। 

তিনি তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন— যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় টিকেও ভর্তি হতে পারছেন না নিপুন বিশ্বাস। নিপুন দরিদ্র ঘরের সন্তান। তার বাবা নাপিতের কাজ করে বহু কষ্টে সংসার চালান। ফলে নিপুণের কোনো স্মার্টফোন নেই। স্মার্টফোন এবং নেট কানেকশন না থাকাতে তার পক্ষে বারবার ওয়েবসাইটে ঢুকে জানা সম্ভব হচ্ছিল না সে টিকেছে নাকি টিকেনি।

নিয়ম ছিল কর্তৃপক্ষ মেসেজ দিয়ে জানাবে। কিন্তু তার মোবাইলে মেসেজও আসেনি। যে দিন ভর্তি হওয়ার শেষ তারিখ ছিল তার আগের দিন সে কারও একজনের কাছে জানতে পারে, সে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। তার পরই দ্রুত টাকা জোগাড় করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশে রওনা হয় সে। যেহেতু ওটা ছিল শেষ দিন, সে বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় ভাই মারফত ফোন করে ডিনকে জানায় যে সে পথে আছে। যাই হোক তার পৌঁছতে পৌঁছতে দেরি হয়ে যায় এবং বিশ্ববিদ্যালয় তাকে ভর্তি করতে অপারগতা জানায়। 

এ পর্যন্ত পড়ে আমি চোখ বন্ধ করে নিপুনকে দেখতে পাই। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকের বাইরে জীর্ণ স্যান্ডেল পায়ে নিপুণ দাঁড়িয়ে। তার চোখ দিয়ে ঝরঝর করে পানি পড়ছে। তার গলা আটকে আসছে। সে বুঝতে পারছে না সে কাকে দোষ দেবে? তার মোবাইল না থাকাকে? মেসেজ না আসাকে? পথে দেরি হওয়াকে? নাকি তার দরিদ্র পিতাকে? 

আচ্ছা কবে থেকে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এত নিষ্ঠুর হয়ে উঠল? কবে থেকে শিক্ষকরা হয়ে উঠল এ রকম বেরহম? আমি কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়িনি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু শিক্ষকের নিবিড় সান্নিধ্য পেয়েছি। আমি তো দেখেছি তারা ছাত্রদের বিপদেআপদে কীভাবে পাশে দাঁড়ান। আইনকে ছাত্রের পথের কাঁটা না করে, আইনের হাত মচকে দিয়ে ছাত্রের জন্য রাস্তা বানান। সেসব শিক্ষকের দিন কি তবে শেষ? আমরা তবে কাদের শিক্ষক বানাচ্ছি? কি শিক্ষা দেবেন তারা আমাদের? 

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। এখনও সময় শেষ হয়ে যায়নি প্রমাণ করার যে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা হৃদয়ও থাকা লাগে।

তবে এই নিপুন বিশ্বাস অবশ্য নায়িকা নিপুণের মতো হেরে যাননি। যথাসময়ে উপস্থিত হতে না পারলেও মানবিক দিক ও নিপুণের পারিবারিক অবস্থা বিবেচনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে উপাচার্যের ওপর অর্পিত ক্ষমতাবলে একটি আসন বৃদ্ধি করে তাকে ভর্তির ব্যবস্থা করা হয়। 

Facebook
Twitter
LinkedIn