উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আবারো আগুনে ৩০ টি বসত ঘর এবং ১৫ টি দোকান ভস্মিভূত হয়েছে। তবে এতে কোন হতাহত নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে এটা চতুর্থ অগ্নিকান্ডের ঘটনা। ঘন ঘন আগুনের ঘটনা দূর্ঘটনা নাকি পরিকল্পিত নাশকতা তা তদন্তের দাবি জানিয়ে আসছে সচেতন মহল।
শুক্রবার দুপুর সোয়া ১ টায় উখিয়ার উপজেলার টিভি টাওয়ার সংলগ্ন কুতুপালং ৭ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অগ্নিকান্ডের এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফুল ইসলাম।
শরীফুল বলেন, শুক্রবার দুপুর সোয়া ১ টায় কক্সবাজার-টেকনাফ লাগোয়া উখিয়া উপজেলার টিভি টাওয়ার সংলগ্ন কুতুপালং ৭ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের একটি স্থাপনায় আকস্মিক আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। এতে আগুন আশপাশের বসত ঘর ও দোকানপাটে ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার পরপরই উখিয়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে খবর দেওয়া হয়।কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের উপ-সহকারি পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, আগুন লাগার খবরে উখিয়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের দুইটি ইউনিট দ্রæত ঘটনাস্থলে পৌঁছে। এছাড়াও কক্সবাজার ও রামু থেকে ফায়ার সার্ভিসের আরও দুইটি ইউনিট ঘটনাস্থলের দিকে রওনা দেয়। প্রায় এক ঘন্টা চেষ্টার পর ফায়ার সার্ভিসের কর্মিরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। প্রাথমিকভাবে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, আগুন লাগার ঘটনায় অন্তত ৩০ টি বসত ঘর ও ১৫ টি দোকান পুড়ে গেছে।তিনি বলেন, “ আগুনের সূত্রপাতের কারণ এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। এছাড়া চুড়ান্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নির্ধারণে কাজ চলছে। ”
সংশ্লিষ্টদের তথ্য মতে, এটি বছরের চতুর্থ অগ্নিকান্ডের ঘটনা। এর আগে ১৭ জানুয়ারি রাত ২ টায় উখিয়ার মুধুরছড়ায় বি বøকের আগুনে ৩০ টি ঘর পুড়ে গেছে। গভীর রাতে কোন রোহিঙ্গা ঘরে আগুন না জ্বালানোর পরও কিভাবে এই আগুনের ঘটনাটি ঘটেছে কেউ নিশ্চিত করতে পারেনি এখনো। গত ৯ জানুয়ারি উখিয়ার শফি উল্লাহ কাটা ১৬ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন লাগে। এতে কোনো হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও প্রায় ১২ শ ঘর পুড়ে যায়। তার আগে ২ জানুয়ারি উখিয়ার বালুখালী ২০ নম্বর ক্যাম্পে জাতিসংঘের অভিবাসন বিষয়ক সংস্থা (আইওএম) পরিচালিত করোনা হাসপাতালে আগুন লাগে। ওই আগুনেও কেউ হতাহত হয়নি। তবে হাসপাতালের আইসোলেশন সেন্টারের ১৬টি কেবিন পুড়ে যায়। এরও আগে ২০২১ সালের ২২ মার্চ উখিয়ার বালুখালীতে ক্যাম্পে লাগা আগুনে মৃত্যু হয় ১৫ রোহিঙ্গার। পুড়ে যায় ১০ হাজারের মতো ঘর।উখিয়ার হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরী জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রহস্যজনকভাবে ঘন ঘন আগুনের ঘটনাটি দূর্ঘটনা হিসেবে দেখার সুযোগ নেই। এটি পরিকল্পিত নাশকতা বলে মনে হচ্ছে। বিশেষ করে এনজিও সংস্থা সমুহ নতুন ঘর তৈরীর নামে বরাদ্ধ বাড়াতে এই আগুন লাগিয়ে দেয়া হচ্ছে কিনা তা তদন্ত করা জরুরী।নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এপিবিএন এর ১৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক পুলিশ সুপার মো নাঈমুল হক ইতিপূর্বে অবশ্য জানিয়েছিলেন, অগ্নিকাÐের পেছনে কোন দুস্কৃতিকারিদের সম্পৃক্ততা রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।