সরকারের কোনো হুঁশিয়ারি ও অভিযানে তেলের সংকট কাটছে না। চাহিদা অনুযায়ী বাজারে তেলের সরবরাহ কম, যা রয়েছে তাও কিনতে হচ্ছে বাড়তি দামে। কৃত্রিম সংকটের জন্য একে অন্যকে দুষছেন খুচরা বিক্রেতা থেকে আমদানিকারকরা।
এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন জায়গায় তেল মজুদ করার প্রমাণ মিলেছে। শনিবার রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে তেল মজুদ করে বেশি দামে বিক্রি করায় আবুল খায়ের ট্রেডার্স নামের একটি ডিলারের দোকান সিলগালা করা হয়েছে।
এই ডিলারের কাছে থাকা ৬০ ব্যারেল ভোজ্যতেল জব্দ এবং দুই লাখ টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। সেখানে খোলা সয়াবিন তেল ১৪৩ টাকা লিটার বিক্রির নির্দেশনা থাকলেও বিক্রি হচ্ছিলো ১৭৩ টাকায়। অভিযানের সময় দোকানে থাকা কর্মী রিয়াদ বলেন, ‘প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১৭১ টাকা ৮০ পয়সা আমাদের কেনা পড়েছে। আমরা এক থেকে দুই টাকা বেশিতে খুচরা বিক্রি করছি।’
এদিকে সংকট সমাধানে সোমবারের মধ্যে ব্যবসায়ীদের কাছে তেলের আমদানি, বিক্রি ও মজুদের তথ্য চেয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এর আগে গত বুধবারের সচিবালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রীর বৈঠকে জানানো হয়, রমজান সামনে একে কেন্দ্র করে কোন ধরনের কারসাজি কেউ করলে ছাড় দেয়া হবে না। এছাড়া আগামী ৩১ মের পর বাজারে খোলা তেল বিক্রি হবে না, সব প্যাকেটে হবে।
তবে, বাণিজ্যমন্ত্রীর এমন হুঁশিয়ারিতেও ভীত নন ব্যবসায়ীরা। বরং আগের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে বোতলজাত সয়াবিন তেল। আবার খোলা তেল বিক্রির সময় ৩১ মে পর্যন্ত বেঁধে দেয়া হলেও বাজার থেকে এখনই উধাও। রাজধানীর মেরাদিয়া, রামপুরা, মোহাম্মদপুর টাউন হল, কৃষি মার্কেটসহ সব বাজারের চিত্র একই।
সয়াবিন ও পাম মিলিয়ে দেশে বছরে ভোজ্যতেলের চাহিদা ২০ লাখ টন। তিন মাসের ভোজ্যতেল আমদানি, মজুদ ও বিক্রির তথ্য চেয়ে তেল বিপণন প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে চিঠি দিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
এতে বলা হয়, প্রত্যেক রিফাইনারি গত তিন মাসে কি পরিমাণ সয়াবিন তেল আমদানি, পরিশোধন, সরবরাহ করেছে এবং কি পরিমাণ মজুত আছে তা কাস্টমসের কাগজপত্রসহ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে জমা দিতে হবে। ৭ মার্চের মধ্যে এই সব তথ্য জমা দিতে বলা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার অজুহাতে হঠাৎ করেই সয়াবিন তেলের সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে রিফাইনারি কোম্পানিগুলো। ফলে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি হয়েছে। এমন পরিস্থিতি তেলের দাম প্রতিনিয়ত বাড়ছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এই তথ্য চেয়েছে অধিদপ্তর।