কদিন আগেও যার নাম ছিল প্রায় সবারই অজানা। রুশ আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর প্রেসিডেন্ট পুতিনের পরেই সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত ভলোদিমির জেলেনস্কির নাম। টিভি অভিনেতা থেকে রাজনীতিতে আসেন ৩ বছর আগে তিনি। ভলোদিমির জেলেনস্কি ৭৩ শতাংশ ভোটে হন ইউক্রেনের রাষ্ট্রপ্রধান। এখন তিনি ক্রেমলিনের প্রধান টার্গেট।
ইউক্রেন আজ একতাবদ্ধ, আর এটিই আমাদের বিজয়- সার্ভেন্ট অব দ্য পিপল নামক টিভি সিরিয়ালে স্কুলশিক্ষকের ভূমিকায় এ বক্তব্য রেখেছিলেন ভলোদিমির ওলেক্সান্ড্রোভিচ জেলেনস্কি।
সেই সিরিয়ালে ইউক্রেন প্রেসিডেন্টের চরিত্রে অভিনয় করা ভলোদিমির জেলেনস্কি বাস্তবেও হন দেশটির রাষ্ট্রনায়ক।
২০১৪ সালে ইউক্রেনে রুশপন্থী সরকার পতনের পর ক্ষমতায় আসেন পেত্র পোরাশেঙ্কা। ২০১৮তে দুর্নীতি-অর্থপাচার ইস্যুতে বিদায় নিতে হয়েছিল তাকে। ২০১৯-এ সেই সিরিয়াল শেষে এক মাসের মাথায় অভিনেতা থেকে রাজনীতিবিদ, সবশেষে নির্বাচত হন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।
এর ৩ বছরের মাথায় শুরু রুশ আগ্রাসন। এর আগে ন্যাটো-ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন পাশে থাকলেও, দুর্যোগে পাশে দাঁড়ায়নি কেউ। সেই টিভি নাটকের চূড়ান্ত মুহূর্তগুলো যে এমন বাস্তব হয়ে উঠতে পারে, তা হয়তো কখনো ভাবেননি তিনি।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হিটলারের নাৎসি বাহিনী, ইহুদি বলে পরিবারের ৪ সদস্যকে হত্যা করলে, প্রতিশোধ নিতে রেড আর্মিতে যোগ দেন তার প্রপিতামহ।
চলমান সংকটের মধ্যে সেজন্যই হয়তো অনড় অবস্থানে আছেন তিনি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপদে সরিয়ে নেয়ার প্রস্তাবের জবাবে জানিয়েছেন, ইউক্রেনেই থাকবেন তিনি। তার দরকার গোলাবারুদ।
আমাদের সৈন্যরা এখানে, নাগরিকরা এখানে, আমরা সবাই এখানে আমাদের দেশের স্বাধীনতা রক্ষা করছি। আর এভাবেই সংগ্রাম চালিয়ে যাবো। এটাই ইউক্রেনের বীরদের গৌরব বলে আশ্বস্ত করেছেন ইউক্রেনের রাষ্ট্রনায়ক।
জেলেনস্কির জন্ম ১৯৭৮ সালের ২৫ জানুয়ারি, তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নে। তার বাবা অধ্যাপক ওলেক্সান্দ্র জেলেনস্কি পেশায় সাইবারনেটিকস ও কম্পিউটার হার্ডওয়ারের অধ্যাপক। মা রঈমা জেলেনস্কা, প্রকৌশলী।