দেশে দারিদ্র্য বেড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিয়ে সরকারের মন্ত্রীদের বক্তব্যকে ‘মিথ্যা’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়েছে শুধু আওয়ামী লীগের নেতাদের।’ গতকাল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের কারাবরণ দিবসের এক আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এরা (মন্ত্রীরা) উন্নয়নের কথা বলে, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির কথা বলে; কিন্তু এত মিথ্যা কথা বলে যে, মিথ্যাগুলো সত্যে পরিণত করতে চায়। কয়েক দিন আগে তারা বলেছে, এখানে নাকি কুঁড়েঘর শুধু কাব্যের মধ্যে, বাংলাদেশে নাকি দারিদ্র্য খুঁজে পাওয়া যায় না। অথচ পরিসংখ্যান বলছে, বাংলাদেশে দারিদ্র্য বেড়েছে। এটা শুধু আমাদের কথা নয়, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যে সংস্থাগুলো আছে তাদের জরিপ বলছে, বাংলাদেশে দারিদ্র্য দুই শতাংশ বেড়েছে। অর্থাৎ আরও দুই শতাংশ মানুষ গরিব হয়েছে।’
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ৭ মার্চ তারেক রহমানকে ঢাকা সেনানিবাসের শহিদ মইনুল সড়কের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে যৌথবাহিনী। এর পর থেকেই দিনটিকে কারাবন্দি দিবস হিসেবে পালন করছে বিএনপি। দিনটি উপলক্ষে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে উত্তরাঞ্চল ছাত্র ফোরাম ও বাংলাদেশ ছাত্র ফোরামের যৌথ উদ্যোগে আলোচনা সভা হয়।
সভায় মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়েছে? অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়েছে শুধু আওয়ামী লীগের। তারা এত বেশি অর্থশালী হয়েছে, তারা এত বেশি লুট করেছে, তারা এত বেশি ডাকাতির মধ্য দিয়ে অর্থ-সম্পদকে বিদেশে পাঠিয়ে ব্যবসা তৈরি করেছে যে, তাদের একেবারে গ্রামের ইউনিটের নেতা থেকে শুরু করে শীর্ষ পর্যায় পর্যন্ত তারা এখন দারিদ্র্য দেখতে পায় না।’
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ও ১৯৯০ সালে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রামের সব অর্জন হারিয়ে ফেলার অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ‘তাদের একটাই লক্ষ্যÑতারা চিরদিন ক্ষমতায় থাকবে এবং সেজন্য গণতন্ত্র বলুন, জনগণের ভোটের অধিকার বলুন, সব ধ্বংস করে দিয়ে এখানে একদলীয় শাসনব্যবস্থার জন্য তাদের মতো করে একটা নির্বাচন করতে চায়। সেই কারণে তাদের মতো করে ইসি গঠন করে, সার্চ কমিটি করে, সবকিছু প্রতারণার মধ্য দিয়ে করতে চায়।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের দাবিগুলো খুব পরিষ্কারÑগণতন্ত্রের মা বেগম খালেদা জিয়া, তাকে মুক্তি দিতে হবে। তাকে মুক্তি দেয়ার পরে এ সরকারকে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা দিতে হবে এবং সেই নিরপেক্ষ সরকার একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের মধ্য নিয়ে যে নির্বাচন পরিচালনা করবে, সেই নির্বাচনে জনগণের একটি পার্লামেন্ট ও সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়।’ বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কেন্দ ীয় নেতা শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, জহিরউদ্দিন স্বপন, শ্যামা ওবায়েদ, তাইফুল ইসলাম টিপু, সেলিমুজ্জামান সেলিম, ওবায়দুর রহমান চন্দন ও ছাত্রদলের ফজলুর রহমান খোকন প্রমুখ নেতা বক্তব্য রাখেন।