পুব আকাশে নতুন সুর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে দিনপঞ্জিতে নতুন তারিখ—পহেলা বৈশাখ। বর্ষবরণে বাঙালির ঐতিহ্যবাহী মঙ্গল শোভাযাত্রা, খাবারের আয়োজনে পান্তা-ইলিশ আর গ্রামে কিংবা শহরে বৈশাখী মেলা যোগ করে ভিন্ন মাত্রা। করোনায় বদ্ধ সময় কাটানোর পর এবার আবার পুরনো সাজে ফিরছে বৈশাখ।
করোনার কারণে গত দুই বছর বন্ধ ছিল বর্ষবরণের অনুষ্ঠান। ১৯৭১ সালের পর থেকে কেবল গত দুই বছরই বন্ধ ছিল পহেলা বৈশাখে রমনার বটমূলের অনুষ্ঠান। তাই এবার রমনা বটমূলে পহেলা বৈশাখের উৎসবে এসে আনন্দিত সাধারণ মানুষ।
বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) সকালে রমনা বটমূলে আসা মানুষের মাঝে খুশির আমেজ দেখা যায়।
রমনা বটমূলে সকাল সোয়া ৬টায় নববর্ষের অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর সম্মিলিত কণ্ঠে ছায়ানটের শিল্পীরা রবীন্দ্রসংগীত ‘মন, জাগ মঙ্গললোকে’ গানের মধ্য দিয়ে এবারের আয়োজন শুরু করেন। ছায়ানটের ৮৫ জন শিল্পী এবারের বর্ষবরণ উৎসবে অংশ নেন। এ সময় একে একে মঞ্চের সামনে প্রবেশ করে মানুষ। বটমূলের সামনে এসে উপস্থিত হন দর্শক শ্রোতারা।
রমনায় অনুষ্ঠান দেখতে আসা রাজধানীর ইস্কাটনের বাসিন্দা ইসরাত জাহান বলেন, করোনা ও অনেক দিন পর এবারের পহেলা বৈশাখের আয়োজন হচ্ছে। তাই ভেবেছিলাম মানুষ কম হবে। কিন্তু এখানে এসে দেখছি অনেক মানুষ এসেছে। পান্তা ইলিশ না থাকলেও দীর্ঘদিন পর এমন আয়োজন হচ্ছে, তাতেই ভালো লাগছে।
পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ধানমন্ডি থেকে আসা রামচন্দ্র দাস বলেন, করোনার কারণে গত দুই বছর মানুষ ভালোভাবে কোনো উৎসব পালন করতে পারেনি। দীর্ঘদিন পর এবার জাতীয়ভাবে এমন একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অন্যান্য বছর অনেক মানুষ হয়ে থাকে নববর্ষের এই অনুষ্ঠানে। রোজা রাখার কারণে অনেকে হয়তো আসতে পারেননি।
তিনি বলেন, নববর্ষের অনুষ্ঠানে অনেক ধরনের অনুষঙ্গ থাকে। পান্তা-ইলিশ তার একটি। এবার এটি না থাকলেও বাকি সবই আছে। নানা রঙের পোশাক পরে মানুষের উপস্থিতি বেশ ভালো লাগছে।
এদিকে ১৪২৯ সনের বাংলা নববর্ষের মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হয়েছে। সকাল ৯টায় টিএসসির রাজু ভাস্কর্য প্রাঙ্গণ থেকে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে মঙ্গল শোভাযাত্রাটি বের হয়েছে। শোভাযাত্রা স্মৃতি চিরন্তন হয়ে পুনরায় টিএসসিতে গিয়ে শেষ হবে।