ভূমধ্যসাগরের উপকূল থেকে পাঁচ শতাধিক বাংলাদেশিকে আটক করেছে লিবিয়ার পুলিশ। ত্রিপোলির পূর্ব উপকূল থেকে ইউরোপে পাড়ি দেয়ার প্রস্তুতিকালে শনিবার, ২৩ এপ্রিল তাদের আটক করা হয়। লিবিয়াস্থ বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল এস এম শামীম উজ জামান এই খবরের সত্যতা স্বীকার করে বলেছেন, ”প্রাথমিকভাবে লিবিয়ার পুলিশ আমাদেরকে ৫০০ জন বাংলাদেশিকে আটকের কথা জানিয়েছে। তবে, আমরা এ পর্যন্ত ২৪০ জনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পেরেছি।” তিনি বলেন, ”এটা এখন নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
২০১৬ সালের পর একদিনে উপকূল থেকে বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশিকে আটকের ঘটনা এটাই প্রথম। সে বছর ছয় শতাধিক অভিবাসীকে সাগর থেকে উদ্ধার করা হয়। ২০২০ সালে দালালদের নিয়ন্ত্রিত এক বন্দিশালায় ২৬ জন অভিবাসন প্রত্যাশীকে হত্যা করা হয়। এর পর এই রুটে অবৈধ অভিবাসীদের যাতায়াতে কিছুটা ভাটা পড়েছিল। করোনাকালে যাতায়াত অনেকটাই বন্ধ ছিল।
লিবিয়া কোস্ট গার্ডের বরাতে সে দেশের সংবাদমাধ্যম খবর দিয়েছে, এক সময় ত্রিপোলির পশ্চিম উপকূল ব্যবহার করে অবৈধ অভিবাসীরা ইউরোপের সাগর পাড়ি দেয়ার চেষ্টা করতো।
উল্লেখ্য যে, যুদ্ধবিদ্ধস্ত লিবিয়ায় চার বছরেরও বেশি সময় বাংলাদেশিদের ভ্রমণ নিষিদ্ধ ছিল। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই মর্মে ২০১৬ সালে একটি ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করে। বাংলাদেশের উচ্চ আদালতে এই নিষেধাজ্ঞা চ্যালেঞ্জ করা হয়। কিন্তু আদালত মন্ত্রণালয়ের নোটিশের পক্ষেই রায় দেয়। এ বছরের শুরুতে এই ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়া হয় রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে। এর পর থেকে কর্মসংস্থান ভিসা নিয়ে অনেকেই লিবিয়ায় যাচ্ছেন। যদিও এই বাংলাদেশিদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ লিবিয়াতে কর্মসংস্থান না খুঁজে সাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা জানিয়েছে, গত তিন মাসে পাঁচ শতাধিক বাংলাদেশিকে সাগর থেকে উদ্ধার করে দেশে পাঠানো হয়েছে।
সুত্র: ভয়েস অব অ্যামেরিকা