২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / সকাল ৬:০৫
২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / সকাল ৬:০৫

শক্তি বাড়িয়ে এগোচ্ছে ‘অশনি’, শঙ্কামুক্ত নয় বাংলাদেশ

দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’ শক্তি বাড়িয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। এটি ঘণ্টায় ১৪ কিলোমিটার বেগে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে। আপাতত এটি ভারতের অন্ধ্র ও ওড়িশা উপকূলের দিকে এগোলেও গতি বদলে বাংলাদেশের দিকে আসারও সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।

রোববার (৮ মে) সন্ধ্যায় আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’ বাংলাদেশ থেকে এক হাজার ১৪৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। এর প্রভাবে আগামী দুই দিনে সারাদেশে বৃষ্টির প্রবণতা বাড়বে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়ার সাথে প্রবল বিজলি চমকানোসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। 

আনন্দবাজারের খবরে বলা হয়, কলকাতার আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ১০ মে সন্ধ্যায় অন্ধ্র উপকূলে পৌঁছানোর কথা ‘অশনি’র। এরপর সামান্য বাঁক নিয়ে উত্তর দিকে ওড়িশা উপকূলের দিকে এগোবে। তবে কোন পথে স্থলভাগে প্রবেশ করবে তা এখনও স্পষ্ট নয়।

আলিপুর আবহাওয়া অফিস রোববার (৮ মে) সন্ধ্যায় জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি বিশাখাপত্তনম পোর্ট ব্লেয়ার থেকে ৫০০ কিলোমিটার পশ্চিমে, বিশাখাপত্তনম থেকে ৮১০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পুরী থেকে ৮৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থান করছে।

বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ আব্দুল মান্নান বিবিসিকে জানিয়েছেন, বর্তমানে সাগরের যে আবহাওয়া পরিস্থিতি, তাতে এটি আরও ঘনীভূত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে এটির প্রবল ঘূর্ণিঝড় আকারে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

আবহাওয়াবিদ জানান, বঙ্গোপসাগর এই মুহূর্তে বিক্ষুব্ধ হয়ে রয়েছে। বাংলাদেশের উপকূলের আবহাওয়াতেও পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে।

এই ঝড়ের ‘অশনি’ নামকরণ করেছে শ্রীলঙ্কা, বাংলায় যার অর্থ ‘ক্ষুব্ধ বা বিপদ’।

আগামী বৃহস্পতিবার নাগাদ এটি উপকূলের কাছাকাছি পৌঁছবে বলে আবহাওয়াবিদরা ধারণা করছেন। বাংলাদেশের সমুদ্র বন্দরগুলোকে ইতোমধ্যে দুই নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এদিকে দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মোহাম্মদ এনামুর রহমান রোববার ঘূর্ণিঝড় পূর্ব প্রস্তুতি বিষয়ক একটি সভা শেষে জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় হলে তা মোকাবেলার সব প্রস্তুতি তাদের আছে। তবে এই ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশে আঘাত হানার আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন তিনি।

সারাদেশে বাড়বে বৃষ্টির প্রবণতা

রোববার সন্ধা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায়; ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে প্রবল বিজলি চমকানোসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

এছাড়াও দেশের মাদারীপুর, রাঙামাটি, কুমিল্লা, মাইজদীকোর্ট, ফেনী, খুলনা ও যশোর জেলাসহ সিলেট বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা কিছু জায়গা হতে প্রশমিত হতে পারে।

আবহাওয়াবিদ মো. তরিকুল নেওয়াজ কবির জানিয়েছেন, দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ আন্দামান সাগর এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি ঘনীভূত ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে প্রথমে গভীর নিম্নচাপ এবং পরবর্তী সময়ে ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’- এ পরিণত হয়ে আজ  সন্ধ্যা ৬টায় দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় (অক্ষাংশ: ১১.৮° উত্তর, দ্রাঘিমাংশ: ৮৮.৮° পূর্ব ) অবস্থান করছে। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।

এই আবহাওয়াবিদ জানান, সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীতে সর্বোচ্চ ২৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আজ সন্ধ্যায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল তেঁতুলিয়া ও পটুয়াখালীতে ২২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল যশোরে ৩৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

রোববার ঢাকায় দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হচ্ছিল। সন্ধা ৬টায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৬৪ শতাংশ। ঢাকায় আজ সূর্যাস্ত সন্ধ্যা ৬টা ৩১ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ভোর ৫টা ১৯ মিনিটে।

Facebook
Twitter
LinkedIn