ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেডের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের দুটি মামলার একটির রায় ঘোষণা করা হবে আজ। বৃহস্পতিবার (১২ মে) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলমের আদালত আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করবেন।
এর আগে গত ২৭ মার্চ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে এ মামলার রায়ের জন্য ১২ মে দিন নির্ধারণ করেন আদালত।
এ রায়ে আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা আশা করছেন স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম। তবে আসামিপক্ষ বলছে, দুদক আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি। তাদের আশা তারা খালাস পাবেন।
মানিলন্ডারিং আইনের দুটি মামলায় ২০১৪ সালের ৪ মে চার্জশিট দাখিল করে দুদক। চার্জশিটে কো-অপারেটিভ সোসাইটির মামলায় ৪৬ জন এবং ট্রি প্ল্যানটেশন মামলায় ১৯ জনকে আসামি করা হয়। ডেসটিনির এমডি রফিকুল আমিনসহ ১৪ জনের নাম দুই মামলায় থাকায় মোট আসামি ৫১ জন। যাদের মধ্যে রফিকুল আমীন, প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেন ও লে. কর্নেল (অব.) মো. দিদারুল আলম গত দশ বছর ধরে কারাগারে আছেন।
জামিনে আছেন আসামি লে. জেনারেল (অব.) হারুন-অর-রশিদ, মিসেস জেসমিন আক্তার (মিলন), জিয়াউল হক মোল্লা ও সাইফুল ইসলাম রুবেল। বাকি ৪৪ জন এখনও পলাতক।
পলাতক আসামিরা হলেন, ডেসটিনির উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোফরানুল হক, পরিচালক মেজবাহ উদ্দিন, ফারাহ দীবা, সাঈদ-উর-রহমান, সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেন, মো. ফিরোজ আলম, সুনীল বরণ কর্মকার ওরফে এসবি কর্মকার, ফরিদ আকতার, এস সহিদুজ্জামান চয়ন, আবদুর রহমান তপন, মেজর (অব.) সাকিবুজ্জামান খান, এসএম আহসানুল কবির (বিপ্লব), এএইচএম আতাউর রহমান রেজা, গোলাম কিবরিয়া মিল্টন, মো. আতিকুর রহমান, খন্দকার বেনজীর আহমেদ, একেএম সফিউল্লাহ, শাহ আলম, মো. দেলোয়ার হোসেন ও মো. শফিকুল হক, জমশেদ আরা চৌধুরী, ইরফান আহমেদ, শেখ তৈয়বুর রহমান, নেপাল চন্দ্র বিশ্বাস, জাকির হোসেন, জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া, এসএম আহসানুল কবির, জুবায়ের হোসেন, মোসাদ্দেক আলী খান, আবদুল মান্নান, আবুল কালাম আজাদ, আজাদ রহমান, মো. আকবর হোসেন সুমন, মো. সুমন আলী খান, শিরীন আকতার, রফিকুল ইসলাম সরকার, মো. মজিবুর রহমান, ড. এম হায়দারুজ্জামান, মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন, কাজী মো. ফজলুল করিম, মোল্লা আল আমীন, মো. শফিউল ইসলাম, ওমর ফারুক, সিকদার কবিরুল ইসলাম।
মামলা সূত্রে জানা যায়, মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভের নামে ডেসটিনি বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ১ হাজার ৯০১ কোটি টাকা সংগ্রহ করে। সেখান থেকে আত্মসাৎ করা হয় ১ হাজার ৮৬১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। যার কারণে ক্ষতির মুখে পড়েন সাড়ে ৮ লাখ বিনিয়োগকারী। ডেসটিনি ট্রি প্লান্টেশন প্রোজেক্টের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ২ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে ২ হাজার ২৫৭ কোটি ৭৮ লাখ ৭৭ হাজার টাকা করা হয় আত্মসাৎ। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হন সাড়ে ১৭ লাখ বিনিয়োগকারী।
অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, ডেসটিনি গ্রুপের নামে ২৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেশ কয়েকটি ছিল নাম সর্বস্ব। আসামিরা প্রথমে প্রোজেক্টের টাকা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হিসাবে জমা করতেন। তারপর বিভিন্ন ব্যাংকের হিসাবে তা স্থানান্তর করা হতো। দুদক ৩৪টি ব্যাংকে এমন ৭২২টি হিসাবের সন্ধান পায়, যেগুলো পরে জব্দ করা হয়।