গত কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে সুরমা, যাদুকাটা, রক্তি, বৌলাই কুশিয়ারা পাটলাইসহ সকল নদ-নদীর পানি বেড়েছে। গত কয়েক দিনের বৃষ্টিপাতেও ভাটির উপজেলা তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, জামালগঞ্জ, ধর্মপাশার পানি বেড়েছে অনেক। হাওর এলাকার নদ-নদীতে মেঘালয়ের পাহাড়ি ঢলের পানি নেমে আসছে হু হু করে।
এর ফলে বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে আকস্মিক বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড পূর্বাভাস দিয়েছে। আজ সোমবার (১৬ই মে) সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার কয়েকটি নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। ইতোমধ্যে বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের সুরমা, অমলশীদে কুশিয়ারা ও সারিঘাটের সারিগোয়াইন নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। সিলেটে প্রবাহিত সুরমা ইতোমধ্যে বিপদসীমার ১২২ সেন্টিমিটার অতিক্রম করেছে।
তাহিরপুর উপজেলার রতনশ্রী, গোলাবাড়ি, মান্দিয়াতা, জয়পুরসহ টাংগুয়া ও মাটিয়ান হাওর তীরবর্তী বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায় পাহাড়ি ঢলের পানিতে গ্রামের ছোট ছোট খালগুলো পরিপূর্ণ। ঢলের পানিতে ভেসে আসা পলির কারণে হাওরের পানির রঙও বদলেছে। পানিশূন্য হাওরগুলোতে বিভিন্ন স্লুইসগেট রেগুলেটর ও বাঁধের ফাঁক-ফোকর দিয়েও পানি প্রবেশ করতে দেখা গেছে।
ভারতের মেঘালয় রাজ্যে ভারী বর্ষণের কারণে সৃষ্ট ঢলের পানি ইতোমধ্যেই সিলেট ও সুনামগঞ্জের হাওরগুলোতে ঢুকে হাওরে চাষ করা ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ওপরের দিকের পানি আসা অব্যাহত থাকায় প্রায় প্রতিদিনই হাওর অঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে এবং বোরো ধানের ক্ষেত ডুবিয়ে খাদ্য নিরাপত্তাকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলছে।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, প্রতি বছরই সিলেট অঞ্চলের হাওরে মেঘালয় পাহাড়ের বর্ষণের পানি এসে পড়ছে আকস্মিকভাবে এবং ফসলের ক্ষতি করছে। এই ক্ষতির হাত থেকে কৃষকের ধান রক্ষা করা যেতে পারে বন্যার আগাম পূর্বাভাস দিয়ে। তা ছাড়া কৃষককে আগে থেকেই বন্যা বিষয়ক সতর্কতা দিয়ে আগাম চাষে উদ্বুদ্ধ করা যেতে পারে যেন পানি আসার আগেই কৃষক ধান কেটে গোলায় তুলতে পারেন। সে জন্য কৃষি বিভাগ এগিয়ে আসতে পারে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে প্রতি বছরই পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে কৃষকের ধান, কোনো ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে প্রতিদিনের পূর্বাভাস মানুষের মধ্যে পৌঁছে দিতে কমিউনিটি রেডিও ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অনলাইন সংবাদমাধ্যমের সহযোগিতা নিয়ে কাজটি করা যায় বলে পরামর্শ দিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।