এ প্রজন্মের মেধাবী অভিনয় শিল্পীদের অন্যতম নাজিয়া হক অর্ষা। হালে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা ওভার দ্য টপ তথা ওটিটি প্ল্যাটফর্মে তাকে দেখা যায় হরদম। যে কাজ করছেন তাতেই দর্শকের প্রশংসা কুড়াচ্ছেন। মিজানুর রহমান আরিয়ানের ওয়েব ফিল্ম ‘নেটওয়ার্কের বাইরে’ ও আশফাক নিপুণের ওয়েব সিরিজ ‘সাবরিনা’ তাকে নিয়ে এসেছে আলোচনায়। সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া সাজ্জাদ খান পরিচালিত ‘সাহস’ ছবিতেও আলাদা মাত্রা যোগ করেছে তার অভিনয়। চরকি-তে মুক্তি পাওয়া এ ছবি নিয়ে কম ঝক্কি পোহাতে হয়নি সাজ্জাদকে। সেন্সর বোর্ডে নিষেধাজ্ঞা, নতুন করে সম্পাদনা, সবশেষে ওটিটিতে ‘আনসেন্সরড’ মুক্তি।
ছবি দেখার পর নেটাগরিকরা জানাচ্ছেন তাদের মতামত। অধিকাংশই খুঁজে পাননি ছবি নিষিদ্ধের সঠিক কারণ। অর্ষাও দর্শকের মন্তব্য দেখেছেন এবং বলেন, ‘দর্শকের প্রতিক্রিয়া ইতিবাচক। কারিগরি দিক নিয়ে প্রশ্ন তুললেও অভিনয় ও গল্প অধিকাংশের পছন্দ হয়েছে। তারা ছবিতে অশালীন কিছু খুঁজে পাননি। বাজেট কম ও নির্মাতার প্রথম কাজ বলে কারিগরি বিষয়গুলোয় দুর্বলতা রয়ে গেছে। শুটিং করার সময়ও তা মনে হয়েছে। তবে বিশ্বাস ছিল, কাজ ভালো হচ্ছে। দর্শকের প্রতিক্রিয়াও পেলাম ধারণা অনুযায়ী।’
নীলা’ চরিত্রে অভিনয় করা অর্ষা যোগ করলেন, ‘এ ছবিতে কেন্দ্রীয় চরিত্রকে আলাদাভাবে দেখানো হয়নি। কস্টিউম ও মেকআপে বিষয়টি খেয়াল রাখা হয়েছে। যাতে করে মনে হয় মফস্বলের খাঁটি গল্প। মোস্তাফিজুর নূর ইমরান ও বাগেরহাটের স্থানীয় শিল্পীদের অভিনয়ও দর্শকের ভালো লাগার কারণ।’
সাধারণ দর্শক শুধু নয়, শোবিজের গুণী ব্যক্তিবর্গও তাদের ভালো লাগার কথা জানিয়েছেন পোস্ট করে। বিষয়টি অর্ষাকে আপ্লুত করেছে। তার ভাষ্য, ‘টেলিভিশনে বিজ্ঞাপনের জন্য সময়মতো নাটক দেখা যায় না। পরবর্তী সময়ে ইউটিউবে এলে পরিচিত মানুষজন তাদের মতামত জানায়। ওটিটিতে সেটা নেই। তাত্ক্ষণিকভাবে দেখে কিছু বলা যায়। যখন দেখি সহকর্মীরা কাজের প্রশংসা করেন তখন দায়িত্ববোধ বেড়ে যায়। পরবর্তী সময়ে আরও ভালো কাজের অনুপ্রেরণা পাই। কাজের প্রতি উত্সাহ বাড়ে। আবার তাদের কাজে পাশে থাকাটাও দায়িত্বের মধ্যে পড়ে যায়। আমি বিষয়টিকে ঐক্য হিসেবে দেখছি।’
গত বছরের ১৪ জুন সেন্সরবোর্ড ‘সাহস’ নিষিদ্ধ করে। ফের সম্পাদনা শেষে ছবিটি জমা দিলে ৬ সেপ্টেম্বর ছাড়পত্র পায়। চলতি বছর মার্চে সিনেমা হলে মুক্তির কথা থাকলেও তা এসেছে ওটিটিতে। অর্ষাও চেয়েছিলেন ছবিটি ওটিটিতে আসুক। তিনি বলেন, ‘কাজটি করার সময় মনে হয়েছে আমরা যা বলছি, যেভাবে দৃশ্যধারণ করছি তাতে সেন্সরবোর্ড ছবিটি সহজে ছাড়বে না। এই গল্পে কাটা-ছেঁড়া করলে কষ্টটাই বৃথা যাবে। যা বলতে চেয়েছি তা প্রকাশ পাবে না। তাই খুব করে চাচ্ছিলাম ছবিটি ওটিটিতে আসুক।’
জানা গেছে, অর্ষা এ ছবিতে কাজের সময় সংশয়ে ছিলেন। পরবর্তী সময়ে সংশ্লিষ্টরা যখন জানালেন অর্ষা অভিনয় করলে স্থানীয় থিয়েটারকর্মীদের একটি ওয়ার্কশপ হয়ে যাবে, তখন রাজি হয়ে গেলেন। অর্ষার কাছে, ছবিটি যেন একটি মঞ্চনাটক। ব্যাপক প্রস্তুতির পর যা মঞ্চস্থ হয়েছে।
ওটিটির ডামাডোলের মাঝেই ঈদের নাটকের কাজ করছেন অর্ষা। এরই মধ্যে মোশাররফ করিম ও খায়রুল বাশারের বিপরীতে দুটো কাজ সমাপ্ত করেছেন।