ঘড়ির কাটায় যখন ঠিক বেলা ১২টা, পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। সেতুর উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বিশ্ববাসী আরেকবার জানলো বাংলাদেশের অহং, আবেগ ও আভিজাত্যের জৌলুশ। শুরু থেকেই দেশের গণমাধ্যম সেতুর খবর নিয়ে সজাগ থেকেছে। এবার আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতেও উঠে আসছে বাংলাদেশের সক্ষমতার প্রতীক হয়ে ওঠা পদ্মা সেতু উদ্বোধনের খবর।
শনিবার (২৫ জুন) পশ্চিমবঙ্গের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা লিড শিরোনাম করেছে, ‘পদ্মা সেতু: জ্বলে পুড়ে-মরে ছারখার, তবু মাথা নোয়াবার নয়! পদ্মা সেতু উদ্বোধনে হাসিনার কণ্ঠে সুকান্ত’। এমনকি তাদের ফেসবুক পেজে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছে এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠান।
ভারতের আরেক গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের বাংলা সংস্করণও লাইভ আপডেট জানিয়েছে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের। স্মারক নোট প্রকাশ থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রীর টোল পরিশোধের খবর ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছে তাদের প্রতিবেদনে।
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি পদ্মা সেতুর উদ্বোধন নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেছে, দুর্নীতির অভিযোগ, মানব বলির গুজব ছড়িয়ে পিটুনির মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডসহ নানা ঘটন-অঘটনের পর শনিবার রাজধানী ঢাকার কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু খুলে দিয়েছে বাংলাদেশ।
এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের এই প্রকল্পে কর্মকর্তাদের ঘুষের অভিযোগে কানাডিয়ান ইঞ্জিনিয়ারিং ফার্ম এসএনসি-লাভালিনকে এক দশকের জন্য বিশ্বব্যাংকের প্রকল্পে দরপত্রে অংশ নেওয়া থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত কানাডার প্রসিকিউটররা এই কোম্পানির নির্বাহীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের প্রমাণ পাননি।
‘বাংলাদেশের দীর্ঘতম রেল-সড়ক সেতুর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
এতে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার দেশের দীর্ঘতম এবং সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেছেন। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ চার লেনের সড়ক-রেল সেতুটি রাজধানী এবং অন্যান্য অঞ্চলের সাথে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সংযোগকারী পদ্মা নদীর ওপর নির্মাণ করা হয়েছে।
বহুমুখী সড়ক-রেল সেতুটি বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ৩ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে। এনডিটিভি লিখেছে, বাংলাদেশের এই সেতুর উদ্বোধন অনেক তাৎপর্য বহন করে। অনেক অর্থনৈতিক বিশ্লেষক বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে সেতু নির্মাণের সক্ষমতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করলেও তা উড়িয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে।
মার্কিন বার্তা সংস্থা এসোসিয়েট প্রেস (এপি) ‘বাংলাদেশের দীর্ঘতম সেতুর উদ্বোধন’ শিরোনামে এক প্রতিবেদনে বলেছে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার দেশের দীর্ঘতম সেতুর উদ্বোধন করেছেন। রাজনৈতিক সংঘাত আর দুর্নীতির অভিযোগের মধ্যে এই সেতু তৈরি করতে সময় লেগেছে আট বছর।
এপি লিখেছে, জনসাধারণের জন্য রোববার খুলে দেওয়া হবে সেতুটি। এর মাধ্যমে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর মোংলার দূরত্ব ১০০ কিলোমিটার কমে যাবে।
দ্য ইকোনমিক টাইমস, টাইমস অব ইন্ডিয়া, এএনআই একই শিরোনাম করেছে। তারা লিখেছে, বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষের স্বপ্ন সত্য হলো : পদ্মা সেতু উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’
কলকাতার জাতীয় দৈনিক আজকালের শিরোনাম, ‘বাংলাদেশ আজ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে বিশ্বের বুকে: শেখ হাসিনা’।
ভারতের বার্তা সংস্থা এএনআই লিখেছে, বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষের স্বপ্ন সত্য হলো: পদ্মা সেতু উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’।