২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৫শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / দুপুর ১:২৭
২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৫শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / দুপুর ১:২৭

ঢাকা দক্ষিণের মাননীয় মেয়রের কাছে শিশুকিশোরদের প্রাণের আকুতি-মাননীয় মেয়র মহোদয় লাইব্রেরী চাই …

জ্ঞান বিতরণ ও শিক্ষার প্রসারে পাঠাগার হতে পারে সামাজিক অবক্ষয় নিরসনের হাতিয়ার। একটি সামাজিক আন্দোলন। আমরা সবাই জানি, এই প্রজন্মের কিছু তরুণ সমাজ নৈতিক শিক্ষার অভাবে, সুস্থ সুন্দর পরিবেশে বেড়ে ওঠার সুযোগ না পেয়ে, সুস্থ জীবন থেকে কি করে ঝরে পড়ছে। এবং কিশোর গ্যাংয়ের খাতায় নাম লেখাচ্ছে। বখাটেপনায় জড়িয়ে করছে- হত্যাসহ নানান অপরাধমূলক কাজ।

ভালো সংশ্রব ও সংস্কৃতি, সেবামূলক সংগঠনের, নানা রকম মানবিক সেবামূলক কাজের সাথে সম্পৃক্ততাই পারে, বখে যাওয়া এই প্রজন্মকে রক্ষা করতে। পারে সাদা মনের মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে। শিশুকাল থেকেই বই পড়ার প্রতি উৎসাহ তৈরিতেও পাঠাগার বা লাইব্রেরী হচ্ছে- প্রকৃত মানুষ তৈরির প্রাণকেন্দ্র। আমরা একসময় একটি ভালো বই পড়ার জন্য, অনেকটা পথ পাড়ি দিয়ে, সেই বাংলা মোটর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে গিয়ে, বই সংগ্রহ করেছি। কেন্দ্রের পাঠাগারে বই পড়েছি। এখন গাড়িতে চড়ে বই মানুষের হাতের গোড়ায়। বই প্রেমীরা ডিজিটালাইড পাঠাগারও পাচ্ছে। কিন্তু পাড়া বা মহল্লায় দেশের আনাচে কানাচে আপনি কয়টা পাঠাগার খুঁজে পাবেন ? দেশের প্রতিটি ওয়ার্ডেই পাঠাগারের বড্ড অভাব। এমনকি নাই বললেও চলে। ব্যতিক্রম শুধু সম্প্রীতি ও সৌহাদ্য। এই সংগঠন লাইব্রেরী বা পাঠাগার গড়ার প্রত্যয়ে পাঠক সৃষ্টিতে কাজ করছে। ক্ষুদে শিশু ও শিশু কিশোর যুবকদের নিয়ে কাজ করছে। জ্ঞান-দৃপ্তীর আলো পাঠকের মনে, কোমলমতি শিশুদের প্রাণে ছড়িয়ে দিতে- উত্তর বাসাবো তথা সবুজবাগ-বাসাবো এলাকার শিশু কিশোর ও তরুণ প্রজন্মকে একই আলোর বন্ধনে নিয়ে আসতে চেয়েছেন, সম্প্রীতি সৌহাদ্যের প্রতিষ্ঠাতা- মোহাম্মদ আমিমুল এহসান খাঁন আহাদ।

কিন্তু অত্যন্ত ব্যথা বেদনা ও আকুতিমাখা হৃদয়ে সদ্য প্রকাশিত Save the Childrean’র কার্যকর কলরব’ ফেসবুক পেজে উঠে এসেছে অত্র এলাকায় সম্প্রীতি ও সৌহাদ্যকে পাঠাগার করতে না দেয়ার পেছনে, একটি মহলের বিরূপ ভূমিকার পেছনের গল্প। আন্তর্জাতিক মানের এই ক্যাম্পেইনে Save the Children International in Bangladesh’ র যোগাযোগ মাধ্যমের সচেতন পাঠকদের কাছে এই বিষয়টি নিয়ে ভার্চুয়ালী মতামতও জানতে চেয়েছে। কি কারণে এবং কেন সম্প্রীতি ও সৌহাদ্য নিয়ে কাজ করা একটি শিশু সংগঠনকে এলাকায় নির্ধারিত স্থান বরাদ্দ থাকার পরও ঢাকা সিটি কর্পোরেশন (দক্ষিণ) সবুজবাগ থানার অধীনে, উত্তর বাসাবো কমিউনিটি সেন্টারে তাদের লাইব্রেরী সেবা চালু করতে দিচ্ছে না ? সিটি কর্পোরেশনের এমন আচরণ যা আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও আমাদের শিক্ষা-সংস্কৃতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে নিশ্চিত ? এমনকি, দেশের পাঠক সমাজ শুধু অবাকই হচ্ছে না। সবাই হতাশও বটে ! কার্যকর কলরব এর  সামাজিক যোগাযোগে প্রকাশিত অভিযোগের ভিত্তিতেই, অভিযোগ নিউজ বিডি ২৪ বিষয়টি প্রতিবেদনের মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করেছে – কেন এবং কি কারণে উত্তর বাসাবো কমিউনিটি সেন্টারের বরাদ্দকৃত স্থানে শিশু-কিশোরদের পাঠাগার ‘ আলোর সোপান’ প্রতিষ্ঠিত হতে পারছে না ? বিষয়টি খতিয়ে দেখার পর বোঝা যায়, নির্ধারিত স্থান সরকারীভাবে বরাদ্দ থাকার পরও সিটি কর্পোরেশনের অধীনে এলাকার স্থানীয় পূর্ব জনপ্রতিনিধির অনীহা ও বর্তমান জনপ্রতিনিধির শিশুকিশোরদের জ্ঞান ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় উৎসাহবিমুখতাও অনেকটা দায়ী। আর সবচেয়ে প্রধান যে কারণ, সেটা হচ্ছে, সরকারী এই কমিউনিটি সেন্টারে দৃশ্যমান ও অদৃশ্যমান কিছু মানুষের অবৈধ দখলদারিত্ব ! দেখা গেছে, অবৈধ দখলবাজদের দৌরাত্বে লাইব্রেরী করার মত তিল পরিমাণ জায়গাটি পর্যন্ত টিকে নেই। আর শিশুকিশোরদের জন্য নির্ধারিত ও বরাদ্দকৃত স্থানটি তো সেই কমিউনিটি সেন্টারের সূচণালগ্ন থেকেই তারা কব্জা করে নিয়েছে। সাবেক ও বর্তমান কোন কাউন্সিলরই এই বিষয়টির ন্যয্য  পাওনাদারকেই প্রকৃত স্থানটি হস্তান্তরে এগিয়ে আসেনি ? কিন্তু কেন ? এটা আজও রহস্যময় !

সেই কারণেই সম্প্রীতি ও সৌহাদ্য প্রাণান্ত ইচ্ছে থাকার পরও উত্তর বাসাবো কমিউনিটি সেন্টারে কোন পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। শিশু কিশোররা আজও লাইব্রেরী সেবা থেকে বঞ্চিত। এবং আজও সামাজিক আন্দোলনে তাদের পাঠাগারের স্থানটির জন্য জোড় দাবী নিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছে।

অনেক কিশোর যুবক, খেলার মাঠের অপর্যাপ্ততায় দেখা গেছে, মহল্লার খারাপ ছেলেদের সাথে মিলেমিশে সমাজে আজ পিতা মাতা ও পরিবারের জন্য খুবই চিন্তার কারণ। অনেক বখাটে সন্তান আজ পরিবারের জন্য বোঝা। সামাজিক সন্মান ও মর্যাদা থেকেও এরা আজ বঞ্চিত। অথচ দেশের সর্বত্র পাঠাগার গড়ে তুললে, ভালো সাংগঠনিক অভিভাবকের ছায়ায় এরা- মানবিক মানুষরূপে গড়ে উঠতে পারতো। শিশু কিশোর তরুণ প্রজন্মকে সুন্দর মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতেও পাঠাগারের বিকল্প নেই। কিন্তু এই ক্ষুদে পাঠক সমাজ আজ বঞ্চিত। অবহেলিত। সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন উত্তর বাসাবো কমিউনিটি সেন্টারের- দখলদারদের বিরুদ্ধে পাঠাগারের স্থান দখল ছাড়াও আরও একচেটিয়া অব্যবস্থাপার অভিযোগও উঠে এসেছে। এরা বছরের পর বছর ধরে পানি ও বিদুৎতের যাচ্ছেতাই অপচয় করে আসছে। বিলের বকেয়া, সরকারকে কোন প্রকার ভাড়াবিহীন এখানের দ্বিতীয় তলায় বসবাস করছে। সরকারী স্থাপনা দখল করে তারা সরকারকে রাজস্ব থেকেও করছে বঞ্চিত। তাদের দৌরাত্বে এলাকার স্থানীয় মুরুব্বীরাও ভুক্তভোগী। এরা সরকারী দাপট নিয়ে মানুষের সাথে খারাপ আচরণও করে থাকে। যা স্থানীয়রাও নিজের মুখে বলেছে। অনেকে মনে করেন, সিটি কর্পোরেশনের সরকারী কোন না কোন কর্মকর্তার উৎকোচ গ্রহণ অথবা যোগসাজসে এরা লাইব্রেরীর জায়গা দখল করে, তাদের দাপুটে কর্মকান্ড অদ্যবধি চালিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রীতি ও সৌহাদ্য’র মুক্তমনা অভিলাষের সুস্থ জ্ঞান চর্চা ও কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট এর অংশ হিসেবে এই পাঠাগারের স্থানটিকে দখলদারমুক্ত করা জরুরি।

শিশু কিশোররা সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই আজ একত্রিত হয়েছে। তাদের স্থানটি উদ্ধারে, পাঠাগার করার প্রত্যয়ে বাসাবো-সবুজবাগ এলাকায় লিফলেট বিতরণ করেছে। পাঠক মানববন্ধন করেছে। মোড়ে মোড়ে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করেছে। ব্যানার ফেসটুনে তাদের অধিকারের কথা আপামর দেশবাসী ও প্রশাসনকে অবগত করেছে। কিন্তু কোন কিছুতেই কোন কিছু হচ্ছে না। কেউ তাদের পাশে এসে দাঁড়ায় না। পাঠাগারের জন্য এখনও কোন সুরাহা তো হয়নি বরং রঞ্জন নামক এক দখলবাজের রোষানলেই তাদের এই পরিকল্পনা আজ হুমকীর মুখে।

কে এই রঞ্জন ?

২০০২ সাল থেকে শুরু করা এই কমিউনিটি সেন্টার ২০২১ সালে যখন অফিসিয়ালি উদ্ধোধন করা হয়, তখন থেকেই সিটি কর্পোরেশনের মদদপুষ্টরা এই কমিউনিটি সেন্টার সম্পূর্ন করায়ত্ত করে, অবৈধভাবে ভোগ দখল করে আসছে। সে কারণেই এখানে মাষ্টাররুলে কাজ করা এমন রঞ্জনের জন্ম হয়েছে।

জানা যায়, বিএনপির সাবেক কাউন্সিলর গোলাম হোসেন থেকে শুরু করে বর্তমান সরকারী দলের কমিশনার জাহাঙ্গীর হোসেনও জানেন, রঞ্জন এখানে জায়গা দখল নিয়ে বসবাস করছে। কিন্তু ওর বসবাসের স্থানটি যে দেশের আগামীর ভবিষৎ কোমলমতি শিশু কিশোরদের। এটা হয়ত কেউই পাত্তা দিচ্ছে না। আর সে কারণেই আজ এই প্রতিবেদন। ওদের প্রাণের আকুতি। সরাসরি ওরা ঢাকা দক্ষিণের মাননীয় মেয়রের কাছে বলছে ওদের মনের অভিলাষঃ

মাননীয় মেয়র মহোদয় লাইব্রেরী চাই …

মারুফ আহমেদ, বিশেষ প্রতিনিধি

Facebook
Twitter
LinkedIn