প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আপনি চায়ের দাওয়াত দিচ্ছেন। হঠাৎ আপনার স্বর এত নিম্নগামী হল কেন? এটাতো অদ্ভুত ব্যাপার। আর আপনার স্বর যখন নিম্নগামী হয় তখন বুঝতে হবে বিরোধীদলের ওপর আরো ভয়ঙ্কর নিপীড়ন নির্যাতন চলবে।’
সোমবার (২৫ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, আমরা এর আগেও দেখেছি আপনি বলেছিলেন বিএনপির নেতাকর্মীদের নামের মামলার কাগজ দেন। তারপরে আরো বেশি মামলা দিয়ে ছিলেন। যে মারা গেছে সেই লাশের নামে, যে হজে গেছে তার নামে, যে অসুস্থ হাসপাতালে ভর্তি তার নামে। এই চায়ের দাওয়াতের মধ্যে যে কি আছে? এই চায়ের কাপের মধ্যে ধুতুরার ফুল থাকবে নাকি হেমলকের রস থাকবে? আপনারা জানেন হেমলক রস পান করিয়ে প্রাচীন গ্রীকের একজন দার্শনিককে হত্যা করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, গুম খুন দিয়ে দেশের রাজনীতিকে কলুষিত করেছে। আমেরিকা থেকে কয়েকজন কর্মকর্তার নামে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হল। আর আপনি (শেখ হাসিনা) কি করলেন এই গুম খুনের সঙ্গে যারা জড়িত এবং সবাই বলে শেখ হাসিনার ডেথ স্কোয়াড, মৃত্যু পরোয়ানা স্কোয়াড দুজনকে পদোন্নতি দিয়েছে সম্প্রতি। সুতরাং আপনার চায়ের দাওয়াত, সে চায়ের মধ্যে কি থাকবে এটা জনগণের মনে বড় প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনি রাষ্ট্রীয়ভাবে জনগণের টাকা লুটপাট করছেন। আপনার মনে দয়া মায়া কিছুই নাই। আপনার সাধারণ সম্পাদক কে দিয়ে বলাচ্ছেন দেশে কোন সংকট নাই আর নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার কেন? নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার এর জানার জন্য জনগণ বা বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের কোন বিশ্ববিদ্যালয় যাওয়ার দরকার নেই। আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনা ১৯৯৫/৯৬ সালে যা করেছে তাই দেখলেই শিক্ষা পাওয়া যাবে।
বিএনপির মুখপাত্র বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেন সংকট নেই। সংকট আসলে আপনার মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেররা আপনার বিরুদ্ধে কিন্তু সাক্ষী দিবে। এটা কিন্তু এর আগেও আমরা দেখেছি। ওবায়দুল কাদের, সেলিম গোয়েন্দাদের কাছে সব বলে দিয়েছে আপনি কোথা থেকে চাঁদা নিয়েছিলেন। এই মন্ত্রীরাই সাক্ষী দিবে কুইক রেন্টালের টাকা, মেগা প্রোজেক্টের টাকা, ব্যাংক লুট করেছে কারা।
তিনি বলেন, রূপপুর আণবিক প্রকল্প এটা কমপ্লিট হয়ে যেত সাড়ে তিন বিলিয়ন ডলারে। সেটা এখন করেছেন ১৩ পয়েন্ট ৫ ডলারে অর্থাৎ ১০ বিলিয়ন ডলার আত্মসাৎ করেছেন। এগুলো কার টাকা? জনগণের টাকা। এই টাকা জনগণকে পরিশোধ করতে হবে। বর্তমানে একটি শিশু বাচ্চার ওপর এক লাখ টাকা ঋণ চেপে বসে আছে। আর এর জন্য দায় প্রধানমন্ত্রী আপনি। আর এর জন্য নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে চান না।
রিজভী বলেন, বর্তমানে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বাবা সন্তান বিক্রি করে খাবারের টাকা জোগাড় করতে হয়। এই পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে আসতে হলে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য দুর্বার আন্দোলন চলমান থাকবে খালেদা জিয়া ও দেশ নেতা তারেক রহমানের নেতৃত্বে।
আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মাওলানা মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার এর সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ,স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু প্রমুখ।