খোলাবাজারে মার্কিন ডলারের দাম আরও বেড়েছে। গতকাল সব রেকর্ড ভেঙে খোলাবাজারে প্রতি ডলার বিক্রি হয়েছে ১১২ টাকায়। নগদে ডলার কেনাবেচায় জড়িত ব্যবসায়ীরা জানান, গত কয়েক সপ্তাহে দেশে খোলাবাজারে দ্রুত ডলারের দাম বেড়েছে। গত সোমবারও সাধারণ মানুষ ১০৭ টাকায় ডলার পেয়েছেন। এক দিনের ব্যবধানে ডলারের দাম পাঁচ টাকা বেড়েছে।
বৈদেশিক মুদ্রা কেনাবেচার ব্যবসায় যুক্ত একজন বলেন, চলতি বছর শুরু থেকে খোলাবাজারে নিয়মিত ডলারের দাম বেড়েছে। গত ঈদুল আজহার আগেও বাজারে ডলারের দাম ১০০ টাকার নিচে ছিল। আমরা বিভিন্ন ব্যক্তি ও এক্সচেঞ্জ থেকে ডলার কিনে থাকি। বিদেশগামী যাত্রীদের জন্য চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় আমরা প্রয়োজনীয় ডলার সরবরাহ করতে পারছি না।
খোলাবাজারের পাশাপাশি আন্তঃব্যাংক লেনদেনেও ডলারের দর বাড়তির দিকে। গতকাল আন্তঃব্যাংক লেনদেনে ডলারের দর ছিল ৯৪ টাকা ৭০ পয়সা। গত ২১ জুলাই এই দর ছিল ৯৪ টাকা ৪৫ পয়সা। গত বছর ২৬ জুলাই প্রতি ডলারের দর ছিল ৮৪ টাকা ৮০ পয়সা। এর বিপরীতে গত এক বছরে টাকার মূল্য কমেছে ১১ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
খুচরা ডলার ব্যবসায়ী আব্দুল জব্বার জানান, খোলাবাজারে ডলারের চাহিদা বেশি, সরবরাহ কম। তীব্র সংকট চলছে। সে কারণে দর বাড়তির দিকে। গতকাল নগদ ডলার বিক্রি করেছি ১১১ টাকায়। কিনেছি ১১০ টাকার নিচে।
এর আগে গত ২৫ জুলাই, ব্যাংকের এমডিদের সংগঠন এবিবি’র সঙ্গে বৈঠক শে?ষে কেন্দ্রীয় ব্যাং?কের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম সাংবা?দিক?দের বলেন, ডলার সংকটের কারণে এই মুহূর্তে আমরা ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছি। এখন পর্যন্ত মার্কেট স্বাভাবিক রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে সাত বিলিয়ন ডলার সাপোর্ট দেয়া হয়েছে। এখনও দেড় বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স বিদেশে আটকে রয়েছে, যেটা এখনও আনা হয়নি। এছাড়া ব্যাংকগুলোর নস্ট্রো অ্যাকাউন্টে প্রায় ৯ বিলিয়ন ডলার এক্সপোর্ট রিকনসলেশন হিসাবে আটকে আছে। সবমিলিয়ে আমরা ব্যাংকগুলোকে সাড়ে ১০ বিলিয়ন ডলার আনার নির্দেশ দিয়েছি। এখন ব্যাংকগুলো যদি এসব ডলার বিদেশ থেকে না নিয়ে আসে, তাহলে বাংলাদেশ ব্যাংক আর ডলার সাপোর্ট দেবে না। ব্যাংকগুলোর সাপোর্টের ওপর ভিত্তি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।
তিনি আরও বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আমাদের আয়নার মতো। রিজার্ভকে একেবারে কমিয়ে ফেলা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। রেমিটেন্স আনার ক্ষেত্রে আপনারা যেভাবে সহযোগিতা করবেন, ঠিক একইভাবে এক্সপোর্টের টাকা ফেরত আনার জন্য আপনাদের একই রকম সহযোগিতা প্রত্যাশা করি। নিয়মের মধ্যে থাকলে যেকোনো ধরনের ঝুঁকি নেয়ার জন্য প্রস্তুত বাংলাদেশ ব্যাংক। যদি নিয়মের মধ্যে না থাকেন, তাহলে আমাদের আর কিছু করার থাকবে না।