শুক্রবার (৫ আগস্ট) মাঝরাত থেকে ১১৪ টাকা লিটার বিক্রি হচ্ছে ডিজেল। এক লাফে ৩৪ টাকা বেড়েছে প্রতি লিটারে। আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে জ্বালানি তেলের মূল্যের ঊর্ধ্বগতির সঙ্গে সমন্বয় করতেই এই দাম বাড়ানো হয়েছে।
শনিবার (৬ আগস্ট) এক বিজ্ঞপ্তিতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ পেট্রলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) লোকসান কমানোসহ পাচার হওয়ার আশঙ্কা থেকে জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়েছে সরকার।
ব্যাখ্যায় বলা হয়, গত বছরের নভেম্বর ডিজেল ও কেরোসিন লিটারে ১৫ টাকা বাড়িয়ে করা হয়েছিল ৮০ টাকা। তার আগে এই দুই জ্বালানি তেলের দাম ছিল লিটারে ৬৫ টাকা। তখন আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার প্রবণতা থাকলেও অকটেন ও পেট্রলের দাম বাড়ায়নি সরকার।
বিশ্ব পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ২০২১-২২ অর্থবছরের শুরুতে করোনার প্রকোপ কিছুটা কমায় বৈশ্বিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বেড়ে যায়। আর এ বছর ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর ধারাবাহিকভাবে পরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম বাড়তে থাকে। গত বছরের ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি ব্যারেল ডিজেলের দাম ছিল ৮৩.৩৫ মার্কিন ডলার। গত জুলাই মাসে যা ছিল ১৩৯.৪৩ মার্কিন ডলার। আর একই সময়ে অকটেনের দাম ছিল প্রতি ব্যারেল ৮৫.২৫ মার্কিন ডলার, গত জুলাইয়ে ছিল ১১৪.৯৬ মার্কিন ডলার। তবে গত মে ও জুন মাসের তুলনায় এ দাম কিছুটা কম।
ব্যাখ্যায় আরও বলা হয়েছেড, আন্তর্জাতিক বাজারে ডিজেল প্রতি ব্যারেল ৭৪.০৪ ও অকটেন ৮৪.৮৪ মার্কিন ডলারে নেমে এলে ডিজেল ও অকটেন প্রতি লিটার যথাক্রমে ৮০ ও ৮৯ টাকায় বিক্রি সম্ভব হতো, তবে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেশি হওয়ায় এই দামে বিক্রি এখন প্রায় অসম্ভব।
আরও বলা হয়েছে, গত জুলাইয়ে ডিজেল ও অকটেনে বিপিসি প্রায় ৭৮ কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে। এর আগের দুই মাসে লোকসানের পরিমাণ ছিল শতাধিক কোটি টাকা। এ বছর ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত বিপিসি ৮ হাজার ১৪ কোটি টাকার ওপরে লোকসান দিয়েছে।
এখন প্রতি লিটার ডিজেল ১১৪ টাকায় বিক্রি হলেও বিপিসিকে ৮ দশমিক ১৩ টাকা করে লোকসান গুনতে হবে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।
মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভারতের কলকাতায় ডিজেল প্রতি লিটার ৯২ দশমিক ৭৬ রুপিতে (১১৮.০৯ টাকা) বিক্রি হয়। ওই সময়ের হিসাবে কলকাতার প্রতি লিটার ডিজেলের দাম বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৩৪ দশমিক শূন্য ৯ টাকা বেশি ছিল। আর পেট্রলের দম বেশি ছিল প্রতি লিটার প্রায় ৪৪ দশমিক ৪২ টাকা। এ পার্থক্যের কারণে জ্বালানি পণ্যের পাচার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই মূল্য সমন্বয়ে পার্শ্ববর্তী দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের জ্বালানি পণ্যের মূল্যের পার্থক্যজনিত পাচার রোধ বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।