ঠাকুরগাঁও জেলায় এ বছর শীতের সবজির ভালো ফলন হওয়ায় বাড়তি মুনাফার আশা করছেন কৃষকরা। চলতি মৌসুমে ফুলকপি ও বাঁধাকপি, বেগুন, মুলা, শিম, কচু, করলা, পেঁপেসহ শাকসবজির ভালো ফলন হয়েছে। বাজারে এসব সবজির ভালো দাম থাকায় হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে।
ঠাকুরগাঁওয়ের কালিবাড়ী, আলাদী হাট, রোড বাজার ঘুরে দেখা যায়, আগাম শীতকালীন সবজি হিসেবে ফুলকপির দাম কেজিপ্রতি ৫৫-৬৫ টাকা ও বাঁধাকপি ৫০-৬০ টাকা, বেগুন ৫৫-৬০, করলা ৩০ টাকা, লাউ ২০, শিম ৬০, আলু ৪০, মুলা ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
জেলার রানীশংকৈল উপজেলার হোসেনগাঁ ইউনিয়নের পদমপুর (মিলপাড়া) গ্রামের লিটন আলী বলেন, গত বছরের চেয়ে এবার এলাকায় অনেকে বেশি ফুলকপি ও বাঁধাকপি আবাদ করেছে। প্রতি মণ ফুলকপি পাইকারি দরে দুই হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ এবং বাঁধাকপি ১ হাজার ৮০০ থেকে দুই হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খরচ বাদ দিয়ে এবার বেশ মুনাফা পাচ্ছেন বলেও জানান তিনি।
গত শনিবার সকালে রানীশংকৈল উপজেলার ডায়াবেটিক মোড়, পদমপুর, রাউতনগড়সহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মাঠ থেকেই সবজি ব্যবসায়ীরা কপি ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া রংপুর, বগুড়া, ঢাকা ও সিলেটের পাইকাররা এ উপজেলা থেকে আগাম সবজি হিসেবে বাঁধাকপি ও ফুলকপি ভোর থেকে প্রতিদিন ট্রাকযোগে ক্রয় করে নিয়ে যান বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।
জানা গেছে, এবার উপজেলার বিরাশী, উমরাডাঙ্গী, উত্তরগাঁও মহলবাড়ী, কলিগাঁ, ভাণ্ডারাসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক কপি চাষ হয়েছে। সংশ্লিষ্ট এলাকার উপ-সহকারী কৃষি অফিসাররা এসব কৃষকদের সঙ্গে সার্বিক যোগাযোগের মাধ্যমে পরামর্শ দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন প্রান্তিক কৃষকরা।
তারা জানান, মারবেল, মুক্তি, ম্যাগনেট-১২, ভিক্টোরি জাতের ফুলকপি ও কেকে ক্রশ, ট্রপিকল্যান্ড, কুইকার, সুপার সেট জাতের বাঁধাকপি এ অঞ্চলে বেশ জনপ্রিয়। এছাড়া বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার উত্তর বালীয়াডাঙ্গী, লাইরি, সদর উপজেলার ফারাবাড়ি, বটিনা, রহিয়া ইত্যাদি এলাকায় বেগুন, করলা, লাউসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি প্রচুর পরিমাণে আবাদ হয়েছে।
কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সঞ্জয় দেবনাথ বলেন, ‘এ জেলার মাটি ফুলকপি ও বাঁধাকপি চাষের জন্য বেশ উপযোগী। এজন্য আমরা চাষিদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। আশা করা যায়, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চাষিরা বেশি দামে এসব সবজি বিক্রি করে যথেষ্ট লাভবান হবেন।’
ঠাকুরগাঁও কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, টানা ঝড়-বৃষ্টির মধ্যেও এবার জেলায় আলুসহ সবজি হয়েছে আট হাজার ১৩২ হেক্টর জমিতে। এতে উৎপাদন হবে প্রায় চার লাখ মেট্রিক টন শাকসবজি।