২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৩শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / রাত ১১:৫৭
২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৩শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / রাত ১১:৫৭

ই-নামজারি শুরু

ভূমি অফিসগুলোতে গ্রাহকদের নানা ধরণের সেবা নিতে যেন ভূমি অফিস বা সংশ্লিষ্ট দফতরে ছুটোছুটি করতে না হয় সে লক্ষ্যে এই মন্ত্রণালয়ের অধীনে বেশ কয়েকটি সেবার অনলাইন আবেদনের সুযোগ চালু করা হয়েছে। এ অনুযায়ী আজ থেকেই ভূমির নামজারির সব কাজ সম্পন্ন হবে অনলাইনে, যেটাকে বলা হচ্ছে ই-নামজারি।

ভূমি সচিব মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, ‘মানুষের ভোগান্তি লাঘব এবং জটিলতা এড়ানোর জন্য ই-নামজারি আবেদন ও নোটিশ ফির মত নামজারি অনুমোদনের পর রেকর্ড সংশোধন ও খতিয়ান সরবরাহ ফিও কেবল অনলাইনে নেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ফলে ৩০ সেপ্টেম্বরের পর থেকে নামজারি অনুমোদনের পর রেকর্ড সংশোধন ও খতিয়ান সরবরাহ ফি আর ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে বা ক্যাশে দেওয়া যাবে না। ফি-ও অনলাইনে জমা করতে হবে।

সচিব বলেন, নামজারির জন্য কারও যেন অতিরিক্ত অর্থ খরচ বা ত্রুটি সংশোধনের জন্য বাড়তি খরচ না হয় তা নিশ্চিত করতে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

নামজারি
কোন জমি কিনলে সেটি নিজের নামে নামজারি করতে হয়। এর মানে হল সরকারি ভূমি অফিসের রেজিস্ট্রারে আপনার নামে জমিটি লিপিবদ্ধ থাকে

ভূমি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাংলাদেশ সরকার প্রতি ১০ বা ১৫ বছর অন্তর ভূমি জরিপের মাধ্যমে ভূমির মালিকানা স্বত্বলিপি অর্থাৎ মৌজা ম্যাপ ও খতিয়ান প্রস্তুত করে থাকে।

জরিপ-পরবর্তী সময়ে যদি কোন জমির মালিকানা পরিবর্তন হয়। যেমন মালিকের মৃত্যুর পর তার উত্তরাধিকার জমি পেলে কিংবা প্রকৃত মালিক বা উত্তরাধিকারীরা জমি কেনা-বেচা করলে বা হস্তান্তর করলে সেই জমির নতুন মালিকানা বা ভূমিস্বত্বের তথ্য হালনাগাদের প্রয়োজন হয়।

এজন্য সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কাছে আগে হাতে-হাতে নামজারি আবেদন করতে হতো। ভূমির মালিকানা পরিবর্তনের সাথে সাথে সহজে ও দ্রুত নামজারি করার লক্ষ্যে ভূমি মন্ত্রণালয় অনলাইনে নামজারি ফি পরিশোধের ব্যবস্থাসহ ই-নামজারি সিস্টেম চালু করেছে।

এজন্য ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে অনলাইন নামজারি সিস্টেমে ‘অনলাইনে আবেদন করুন’ এবং ‘আবেদন ট্র্যাকিং’ নামে দুটি অংশ রয়েছে। বাম পাশে ‘অনলাইনে আবেদন করুন’ অংশের নীচে ‘নামজারি আবেদনের জন্য ক্লিক করুন’ লেখায় ক্লিক করলে আবেদন ফর্ম আসবে। নির্ভুলভাবে সেই ফরম পূরণ এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সংযুক্ত করে আবেদন জানাতে হবে।

আবেদন দাখিলের সময় আবেদন ফি ২০ টাকা ও নোটিশ জারি ফি ৫০ টাকা- মোট ৭০ টাকা শুধুমাত্র অনলাইনে পরিশোধ করতে হবে। এজন্য নগদ, রকেট, বিকাশ, উপায়, ভিসা কার্ড, মাস্টার্ড কার্ড সহ অন্যান্য ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থা ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

নামজারির জন্য আবেদন করা জমিটি আপনি ক্রয়, ওয়ারিশ, হেবা, ডিক্রি, নিলাম, বন্দোবস্ত, অন্যান্য কী সূত্রে পেয়েছেন তা চিহ্নিত করতে হবে। এখনে উল্লেখ্য যে ভূমি মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে অনলাইনে ক্রয়-সূত্রে নামজারি আবেদন ফরমটি আরও তথ্য সমৃদ্ধ হয়েছে, তাই ক্রয়সূত্রে সিলেক্ট করলে আপনার সামনে নতুন একটি ফর্ম আসবে, এতে আপনাকে কিছু বর্ধিত তথ্য দিতে হবে।

অন্যান্য সূত্রের ক্ষেত্রে আগের ফরমটিই চলমান আছে। তবে পৃথক পৃথক ফরম ক্রমান্বয়ে উন্নয়ন করার কথা রয়েছে।

খতিয়ান বা পর্চা
সাধারণত একটি ভূমির নামজারি প্রক্রিয়া ২৮ দিনে নিষ্পত্তি হয়ে থাকে।

সহকারী কমিশনার ভূমি এই আবেদনের চূড়ান্ত অনুমোদন দিলে অফিস সহকারী অনলাইনে এর খতিয়ান প্রস্তুত করে।

খতিয়ান প্রস্তুত হলে ডিসিআর (ডুপ্লিকেট কার্বন রিসিট) ফি দেয়ার জন্য সিস্টেমে দেয়া মোবাইলে এসএমএস পাঠানো হবে।

এ পর্যায়ে land.gov.bd ঠিকানায় গিয়ে ই-নামজারি পেজে আবেদন ট্র্যাকিং অপশনে বিভাগ সিলেক্ট করে আবেদন নম্বর জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর দিয়ে ট্র্যাকিং করে আবেদন মঞ্জুর হয়েছে কিনা যাচাই করতে পারবেন। পাতায় দেয়া মোবাইল ওয়ালেট কিংবা ইন্টারনেট ব্যাংকিং থেকে সুবিধাজনক একটি অপশনে ক্লিক করে অগ্রসর বাটন চেপে নির্দেশনা অনুসরণ করে আপনি নগদ, রকেট, বিকাশ, উপায়,ভিসা কার্ড, মাস্টার্ড কার্ড সহ অন্যান্য ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থা ব্যবহার করে অনলাইনে ডিসিআর ফি ১,১০০ টাকা পরিশোধ করার সুযোগ পাবেন।

অনলাইনে টাকা পরিশোধ করলে অনলাইনেই চালান প্রক্রিয়া শুরু হবে। স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালান পরিশোধিত হলে https://mutation.land.gov.bd/ এই লিঙ্ক এ গিয়ে আবেদন ট্র্যাকিং করে খতিয়ান প্রিন্ট এবং ডিসিআর প্রিন্ট কপিটি পাওয়া যাবে।

ভূমি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুসারে কোডযুক্ত (কুইক রেসপন্স কোড) অনলাইন ডিসিআর ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে দেয়া ডিসিআর-এর সমতুল্য এবং আইনগতভাবে বৈধ ও সর্বক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য ও ব্যবহারোপযোগ্য হবে।

তাই ভূমি অফিসে গিয়ে কোন ম্যানুয়াল ডিসিআর সংগ্রহ করতে হবে না। এভাবে জমির খতিয়ান বা পর্চা ডাক বিভাগের মাধ্যমে হাতে চলে আসবে। এজন্য ডাক বিভাগের ফি-ও কাটা হবে অনলাইনে।

কয়েকদফা ভূমির জরিপ হয়েছে – একটি ব্রিটিশ আমলে, একটি পাকিস্তান আমলে, এবং স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে যা এখনও চলমান। এছাড়া ঢাকায় মহানগর জরিপও হয়েছে। সবশেষ রেকর্ডে যে তথ্য থাকে সেটাই চূড়ান্ত বলে ধরা হয়।

জরিপের পরে প্রিন্টেড আকারে যে খতিয়ান আসে সেটা জেলা প্রশাসনের অফিসের রেকর্ড রুমে থাকে।

কোন জমি কেনার আগে ওটার কোন খতিয়ান আছে কিনা, কার নামে আছে সেটা রেকর্ড রুম থেকে জানা যায়। সেই রেকর্ড রুমের তথ্য পেতে land.gov.bd ঠিকানায় অনলাইনে আবেদন করা যাবে।

খতিয়ান বা পর্চা বিভিন্ন কাজে লাগে- জমি কেনাবেচা, ব্যাংক লোনের জন্য সার্টিফাইড কপি লাগে। ওয়েবসাইটে অনলাইনে আবেদন করলে ও অনলাইনে পেমেন্ট দিলে গ্রাহকের ঠিকানায় পর্চার কপি পাঠিয়ে দেয়া হবে।

শুনানি
ক্রয়, উত্তরাধিকার বা হেবাসূত্রে যিনি জমির নতুন মালিক হয়েছেন এবং নামজারির আবেদন করেছেন তাকে এবং এই জমির পূর্ববর্তী মালিককে শুনানির জন্য ডাকা হয়।

তবে পূর্ববর্তী মালিক মৃত হলে বর্তমান মালিককে শুনানিতে থাকতে হয়।

এই শুনানি জমির মালিকার সত্যতা যাচাইয়ে কিংবা কারও কোন অভিযোগ থাকলে সেগুলো ফয়সালা হয়ে থাকে।

এখন থেকে সেই শুনানি অনলাইনে দেয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এজন্য একজন ব্যক্তি ঢাকায় বসে পটুয়াখালীর জমি কিংবা বিদেশে বসেই বাংলাদেশের জমির শুনানিতে অংশ নিতে পারবেন।

অনলাইনে শুনানি করতে চাইলে নামজারির সময় পেমেন্ট করার পর্যায়ে এই প্রশ্নে হ্যাঁ নির্বাচন করতে পারেন অথবা http://oh.lams.gov.bd লিঙ্কে গিয়ে অনুরোধ জানাতে হবে।

এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত প্রদান করবেন এবং অনলাইন শুনানির জন্য একটি লিঙ্ক আবেদনে উল্লেখ করা মোবাইল নাম্বারে পাঠাবেন।

শুনানির আগে খসড়া খতিয়ানটি নাগরিক কর্নার থেকে দেখা যাবে। খসড়া খতিয়ানে কোন তথ্য ভুল থাকলে শুনানির সময় সহকারী কমিশনার (ভূমি)কে জানানো যাবে।

ভূমি ব্যাংক
বাংলাদেশে জমি বা জায়গা সংক্রান্ত সমস্যার জটিলতার অবসান ঘটাতে সব মালিকের তথ্য নিয়ে গত বছর ভূমি তথ্য ব্যাংক চালু করা হয়েছে।

এই তথ্য ব্যাংকে সকল ভূমি মালিকের তথ্য সংরক্ষিত থাকবে। ফলে যে কোন নাগরিক যেকোনো স্থান থেকে তার জমি সংক্রান্ত তথ্য যাচাই বা সংগ্রহ করতে পারবেন।

বাংলাদেশের ভূমি অফিসে হয়রানি, অনিয়ম, দীর্ঘসূত্রিতা, দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে গ্রাহকদের। ডিজিটাল পদ্ধতির ফলে সেটি বন্ধ হয়ে যাবে বলে আশা করছে কর্তৃপক্ষ।

ভূমি তথ্য ভাণ্ডারে সরকারি জমির তথ্য, খাস জমি, অর্পিত সম্পত্তি, পরিত্যক্ত সম্পত্তি, হাটবাজার, বালুমহাল, জলমহাল, চা বাগান, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে বরাদ্দকৃত জমি – সকল তথ্য সংরক্ষিত থাকবে।

সেই সঙ্গে থাকবে বর্তমান অবস্থাসহ এসএ খতিয়ান ও আরএস খতিয়ানের বর্ণনা।

ফলে বহু পুরাতন দলিলদস্তাবেজ হারিয়ে গেলে বা নষ্ট হয়ে গেলেও সরকারি রেকর্ড নিয়ে কোন জটিলতা থাকবে না। আবার অনলাইনে সংরক্ষিত থাকায় এসব রেকর্ড কেউ জালিয়াতি করতে পারবে না বলে কর্মকর্তারা উল্লেখ করছেন।

ভূমি উন্নয়ন কর
যাদের জমি রয়েছে, বাড়ি বা ফ্ল্যাটের মালিকানার অংশ হিসাবে জমি পেয়েছেন, তাদের সবার জন্য ভূমি কর দেয়া বাধ্যতামূলক। প্রতিবছর সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিসে ভূমি কর জমা দিয়ে রসিদ নিতে হয়। তবে এখন থেকে এই কর অনলাইনেই দেয়া যাবে বলে কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন। যারা অনলাইনে ভূমি কর দেবেন, সেটা স্বয়ংক্রিয়ভাবে তার জমির অনুকূলে তালিকাবদ্ধ হয়ে যাবে।

ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের জন্য বাংলাদেশের ভূমি মন্ত্রণালয় একটি অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করেছে।

প্রথমে ভূমির মালিককে এই অ্যাপের সঙ্গে নিজেকে নিবন্ধন করতে হবে। একবার নিবন্ধিত হলে তার পরবর্তীতে আর নিবন্ধন প্রয়োজন হবে না।

তিনটি প্রক্রিয়ায় এই নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন করা যাবে:

১. Land.gov.bd অথবা ldtax.gov.bd এই পোর্টালে প্রবেশ করে জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্ম তারিখ ও মোবাইল ফোন নম্বর দিয়ে নিবন্ধন করতে হবে।

২. ভূমি মন্ত্রণালয়ের কল সেন্টার ৩৩৩ অথবা ১৬১২২ নম্বরে ফোন করে এনআইডি নম্বর, জন্ম তারিখ, ফোন নম্বর ও জমির তথ্য দিতে হবে।

৩. যেকোনো ইউনিয়ন ডিজিটাল অফিসে এনআইডি কার্ড, জন্ম তারিখ ও খতিয়ান নম্বর ব্যবহার করেও নিবন্ধন করা যাবে।

নিবন্ধনের পর এই পোর্টালে লগইন করে অথবা ইউনিয়ন ডিজিটাল অফিসে গিয়ে ভূমির উন্নয়ন কর দিতে পারবেন। এই সময় বিকাশ বা নগদের মতো মোবাইল ওয়ালেট ব্যবহার করে করের টাকা পরিশোধ করা যাবে।

কর দেয়ার পর ইমেইলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে একটি জমার রসিদ চলে আসবে। এটিই ভূমি উন্নয়ন করের রসিদ।

মৌজা ম্যাপ
প্রতিটি মৌজার একটি ম্যাপ রয়েছে, যেটা https://www.eporcha.gov.bd/ লিঙ্কে গেলেই পাওয়া যাবে। সরকারি বিভিন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে কিংবা ব্যাংক লোন পেতে, জমি কেনা-বেচা করতে এই মৌজা ম্যাপ লাগে।

আপনার জমি ওই মৌজার কোন দিকটায় আছে সেটা জানার জন্য অনলাইনে ম্যাপের আবেদন করলে সেটিও আপনার ঠিকানায় কাগজে প্রিন্ট পাঠিয়ে দেয়া হবে। এক্ষেত্রে অর্থ পরিশোধ হবে অনলাইনে।

ইজারা ও টেন্ডার
হাওর, বাওর, বিলের মতো যেসব জলমহাল বা যেসব বালিমহাল (যেসব জলাশয় থেকে বালু তোলা হয়) এসব ভূমি এতদিন ম্যানুয়ালি ইজারা দেয়া হতো।

এখন থেকে ইজারার আবেদন করা যাবে অনলাইনে। ইজারা বাবদ টেন্ডারও জমা নেয়া হবে অনলাইনে।

কাস্টমার কেয়ার
নামজারি খতিয়ান আবেদন বিষয়ক তথ্যের জন্য কল সেন্টারের ১৬১২২ নম্বরে সার্বক্ষণিক সেবা পাওয়া যাবে বলে কর্মকর্তারা জানাচ্ছে। এছাড়া পৃথিবীর যেকোনো প্রান্ত থেকে +৮৮ ০৯৬১২ ৩১৬১২২ নম্বরে ফোন করা যাবে।

বিশেষ করে কেউ যদি নামজারি, খতিয়ানের মতো যাবতীয় প্রক্রিয়াটি বেশ জটিল মনে করেন তাহলে তারা এসব নম্বরে কল করে অপারেটরের সহায়তা নিতে পারেন।

অপারেটর আপনার থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র অনলাইনে সংগ্রহ করে আপনার হয়ে আবেদনের কাজ সম্পন্ন করবেন। এজন্য বাড়তি কোন ফি দিতে হবে না।

আবেদন সংক্রান্ত যেকোনো অভিযোগ যেমন: যেমন নামজারির আবেদন করার এক মাস পরও নিষ্পত্তি হচ্ছে না, অনলাইনে পেমেন্ট করতে ঝামেলা হচ্ছে কিংবা সার্ভার জটিলতার বিষয় কল-সেন্টারে ফোন করে জানানো যাবে।

এছাড়া ভূমি-সেবা সংক্রান্ত সমস্যা জানানোর জন্য https://hotline.land.gov.bd লিঙ্কে এবং যেকোনো পরামর্শ পেতে সোশ্যাল মিডিয়ার লিঙ্ক facebook.com/land.gov.bd-তে গেলে সমাধান পাওয়া যাবে। প্রয়োজনে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের সাহায্য নেয়া যাবে।

অ্যাপ
গুগল প্লে স্টোর থেকে ভূমিসেবা অ্যাপ, উত্তরাধিকার অ্যাপ, ই-নামজারি অ্যাপ, আর এস খতিয়ান অ্যাপ, ভূমি উন্নয়ন কর ক্যালকুলেটর নামিয়ে নেয়া যেতে পারে। ভূমি সেবা প্রত্যাশীদের চাহিদা মেটাতে এই অ্যাপটি চালু করা হয়েছে।

এই অ্যাপটির মূল উদ্দেশ্য হল ভূমির বিভিন্ন সেবার বিষয়ে যেমন নামজারি, খতিয়ান, মৌজা ম্যাপ, খাস জমি বন্দোবস্ত, অর্পিত/পরিত্যক্ত সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা, মহাল বিষয়ক তথ্য, জমি কর ইত্যাদি বিষয়ে অবহিত করা।

কোন সার্ভিস পেতে কতো সময় লাগবে, কতো খরচ পড়বে, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র কী কী লাগবে, সম্পদের বণ্টন কিভাবে হয়ে থাকে এবং ভূমি অফিস সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যও পাওয়া যাবে।

প্রশাসনিক কাজ
ভূমি মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন প্রশাসনিক কাজ সম্পূর্ণ অনলাইনে হচ্ছে। এর নাম দেয়া হয়েছে প্রশাসন ব্যবস্থাপনা সিস্টেম।

মন্ত্রণালয়ের সবার তথ্য অনলাইনে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। কোন কর্মকর্তার, বদলি,পদোন্নতি, বেতন বৃদ্ধি,পুরস্কার, শাস্তি সব তথ্য অনলাইনে হওয়ায় মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কাজ এবং মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনার কাজ পরিচালনা সহজ হয়েছে বল কর্মকর্তারা উল্লেখ করছেন।

এছাড়া কমিউনিটি টুল-‘বার্তা’ তৈরি করা হয়েছে। এর মাধ্যমে দেশের পাঁচ শতাধিক সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কাছে বার্তা পাঠানো যায়।

প্রক্রিয়াধীন
কিছু অনলাইন সেবার কাজ চলমান আছে। সেগুলো হল:

দলিলের পর সব অনলাইনে
জমি কেনার পর সাব রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে জমিটি নিজের নামে রেজিস্ট্রেশন করিয়ে দলিল সংগ্রহ করতে হয়।

পরে নামজারির জন্য ওই দলিলের কপি এসি ল্যান্ডে নিয়ে যেতে হয়।

এই পুরো প্রক্রিয়াটি অনলাইনে সম্পন্ন করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে বলে ভূমি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গিয়েছে।

পরিকল্পনা রয়েছে ভূমি নিবন্ধনের সময় দলিলটিকে ইলেকট্রনিক উপায়ে সম্পাদন করে, বায়োমেট্রিকসহ অন্যান্য তথ্য নিয়ে, এই কপি ইলেকট্রনিক উপায়ে এসি ল্যান্ডে পাঠানোর ব্যবস্থা করা।

এতে আলাদা দুটো অফিসে গ্রাহকের ধর্না দেয়ার প্রয়োজন নেই।

ডিজিটাল ল্যান্ড রেকর্ড
বাংলাদেশের ৬১ জেলায় ১ লাখ ২০ হাজারের মতো মৌজা ম্যাপ আছে যার সবই কাগজে ছাপা অবস্থায় রেকর্ড করা হয়েছে।

এই মৌজা ম্যাপগুলোকে হাই রেজোল্যুশন ডিজিটাইজেশন করে সংগ্রহ করার প্রক্রিয়া হাতে নেয়ার কথা জানিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র। ডিজিটাল ডায়নামিক ওই ম্যাপের ওপর স্যাটেলাইট ইমেজ বসানো হবে।

এভাবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ওই ম্যাপ ও ছবির ওপর বিভিন্ন রঙ বসিয়ে জমির শ্রেণীবিন্যাস করা হবে। এতে করে এদিকে যেমন মৌজার প্লটের ভাগগুলো স্পষ্ট হবে। সেই সাথে সংরক্ষিত জলাশয়, লেক, নদী, কৃষি জমির দখল ঠেকানো সম্ভব হবে বলে মনে করা হয়। এছাড়া ভূমি জরিপের কাজও হবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে।

আগে ম্যাপ ও খতিয়ান কাগজে ছাপা থাকতো। এখন ড্রোন দিয়ে জমির জরিপ করে মালিকের তথ্য নিয়ে ডিজিটাল ম্যাপ করা হবে।

সেখানকার তথ্য অটো কারেক্ট করা যাবে। ধরুন আপনি একখণ্ড জমি কিনলেন, সেটা ডিজিটাল পদ্ধতিতে ম্যাপে পুরনো মালিকের নাম তুলে আপনার নাম বসানো হবে। সূত্র: বিবিসি বাংলা।

Facebook
Twitter
LinkedIn