২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / রাত ৯:২২
২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / রাত ৯:২২

রাসেল জন্মের পর আমিই প্রথম তাকে কোলে নিয়েছিলাম: প্রধানমন্ত্রী

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট ছেলে শেখ রাসেলের জন্মের দিনের আনন্দঘন স্মৃতি রোমন্থন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রাসেল জন্মের পর আমিই প্রথম তাকে কোলে নিয়েছিলাম। আমাদের সেই আনন্দ খুব বেশিদিন টেকেনি। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রচারণা চালানোর সময় চট্টগ্রাম থেকে আব্বা ঢাকায় ফিরলেন। রাসেলকে দেখলেনও। তার পরপরই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন শেষ হওয়ার পরই তাকে মুুক্তি দেওয়া হয়।

মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) শেখ রাসেল দিবস-২০২২ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

শেখ রাসেলকে নিয়ে বলতে গিয়ে বড় বোন শেখ হাসিনা বলেন, আজকে শেখ রাসেলের বয়স হতো ৫৯ বছর। হয়ত সে জীবনে অনেক বড় হতে পারত। তার জীবনের একটা স্বপ্ন ছিল। ছোটো বেলা থেকে বলত সেনা অফিসার হবে। বেঁচে থাকলে হয়ত আমরা দেখতাম, কিন্তু তাকে বাঁচতে দেওয়া হয়নি।

শেখ হাসিনা বলেন, ছোট্ট রাসেল সেনা সদস্যদের দেখে বড় হয়ে নিজেও সেনাসদস্য হতে চাইত। টুঙ্গিপাড়ায় গেলে সে সমবয়সী শিশুদের জড়ো করত। তাদের প্যারেড করাত। তারপর চাচার কাছ থেকে টাকা নিয়ে শিশুদের হাতে এক টাকা করে দিত। মা ওইসব শিশুদের জন্য চকলেট-বিস্কুট নিয়ে যেতেন। এছাড়া নতুন জামা-কাপড় নিয়ে যেতেন। রাসেল সেগুলো ওই শিশুদের দিত। সেই রাসেলসহ আমার পুরো পরিবারকে ঘাতকরা নির্মমভাবে হত্যা করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৬৬ সালে জাতির পিতা যখন ছয় দফা ঘোষণা দিলেন, সেই ছয় দফা নিয়ে সারা বাংলাদেশ ঘুরে বেড়ালেন, প্রচার-প্রচারণার জন্য। ফেব্রুয়ারি মাসে ঘোষণা দিলেন, মে মাসেই তাকে গ্রেপ্তার করা হলো। তখন ছোট্ট রাসেল কিছুই বুঝতো না, সে এতোটাই ছোট ছিল। বাবার সঙ্গে দেখা হতো কারাগারে, সেখানে গেলে সে আসতে চাইতো না। তাকে অনেক কষ্ট করে ভুলিয়ে-ভালিয়ে নিয়ে আসতে হতো। 

শেখ হাসিনা বলেন, তারপর যখন আস্তে আস্তে কথা বলতে শুরু করলো, বাবাকে বাবা বলে ডাকবে…। আমার মা বলতো আমাকেই আব্বা বলে ডাক। আবার কারাগারে গেলে আব্বাকে আব্বা বলতো, সঙ্গে সঙ্গে মাকেও আব্বা বলতো। আমরা মাসে দুইবার কারাগারে যাওয়ার সুযোগ পেতাম। যেদিন কারাগার থেকে আসতাম সেদিন রাতে সে ঘুমাতো না, কিছু বলতেও পারতো না, শুধু কান্নাকাটি করতো। আমরা ভাই-বোনরা তার কাছে ছুটে আসতাম। এমনই পিতৃস্নেহ বঞ্চিত হয়ে সে বড় হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারে এসে ১৫ আগস্ট জাতির পিতাসহ শেখ রাসেল এবং যারা নির্মম হত্যার শিকার হয়েছিলেন তাদের খুনিদের বিচার করতে পেরেছি। এর মাধ্যমে দেশ অভিশাপমুক্ত হয়েছে।

এর আগে প্রযুক্তিনির্ভর গুণগত শিক্ষার মানোন্নয়নে সারা দেশের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বা সমমানের সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৫ হাজারটি শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবের উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে প্রতিটি সংসদীয় আসনে একটি করে মোট ৩০০টি শেখ রাসেল স্কুল অব ফিউচারেরও উদ্বোধন করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।

Facebook
Twitter
LinkedIn