চাকরির নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মকবুল হোসেনকে ‘বাধ্যতামূলক’ অবসরে পাঠানোর যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, সেই তালিকায় আরও যোগ হয়েছে তিন পুলিশ সুপারের নাম।
তিন পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা সরকারবিরোধী বিভিন্ন তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আদান–প্রদান করতেন। এছাড়া কোনো কাজ করতেন না তারা।
অবসরে পাঠানো পুলিশ সুপাররা হলেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) মীর্জা আবদুল্লাহেল বাকী ও মো. দেলোয়ার হোসেন মিঞা এবং পুলিশ সদর দপ্তরের এসপি (টিআর) মুহম্মদ শহীদুল্লাহ চৌধুরী। তাঁদের মধ্যে মীর্জা আবদুল্লাহেল বাকী ১৫তম ব্যাচের কর্মকর্তা এবং অন্য দুজন ১২তম ব্যাচের।
মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আলাদা প্রজ্ঞাপনে এই তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে চাকরির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই অবসরে পাঠানোর কথা জানানো হয়েছে।
পৃথক তিনটি প্রজ্ঞাপনে সরকারি চাকরি আইন ২০১৮-এর ৪৫ ধারার বিধান অনুযায়ী জনস্বার্থে সরকারি চাকরি থেকে অবসর প্রদানের কথা বলা হয়। এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও জানানো হয় প্রজ্ঞাপনে।
এর আগে রোববার (১৬ অক্টোবর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মকবুল হোসেনকে ‘বাধ্যতামূলক’ অবসরে পাঠানো হয়।
অবসরে পাঠানো সিআইডির এসপি আবদুল্লাহেল বাকী তার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ সম্পর্কে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি ফেসবুক ব্যবহার করি না। এখন তারা (সরকার) অনেক কিছু বলতেই পারেন। কিন্তু আমি কাজ না করলে তো আমাকে কয়েক দিন আগেও দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নিতে দুবাই পাঠাতেন না। দীর্ঘদিন আমাকে পদোন্নতি দেয়া হয়নি। কেন দেয়া হয়নি, আমি জানি না।’
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান গণমাধ্যমকে জানান, তারা কোনো কাজ করেন না। হাজিরা দিয়ে চলে যান। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তারা ফেসবুকে ভুয়া সংবাদ আদান–প্রদান করেন। পুলিশ সদর দপ্তর তাদের অবসরে পাঠানোর প্রস্তাব পাঠালে তা বাস্তবায়ন করা হয়।
উল্লেখ্য, সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর ধারা ৪৫ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো সরকারি কর্মচারীর চাকরির মেয়াদ ২৫ বছর পূর্ণ হওয়ার পর যেকোনো সময় সরকার জনস্বার্থে প্রয়োজন মনে করলে কারণ দর্শানো ছাড়াই তাকে চাকরি থেকে অবসর দিতে পারবে। তবে যে ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ, সে ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন নিতে হবে।