২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৪শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / রাত ১০:৪৯
২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৪শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / রাত ১০:৪৯

দ. আফ্রিকার কাছে বড় ব্যবধানে হারলো বাংলাদেশ

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ক্রিকেটের মূলপর্বে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে বড় ব্যবধানে হারলো বাংলাদেশ। মাথার ওপর রানের পাহাড় নিয়ে লড়াইটাও করতে পারলো না সাকিব বাহিনী। প্রোটিয়াদের কাছে ১০৪ রানের বিশাল ব্যবধানে হারলো টাইগাররা। 

এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকার ছুঁড়ে দেওয়া ২০৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৬.৩ ওভারে ১০১ রানেই গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশের ইনিংস। বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো হওয়া দরকার ছিল বাংলাদেশের। সৌম্য সরকারের ব্যাটে তেমন কিছুর ইঙ্গিতও ছিল। প্রথম ওভারের শেষ দুই বলে কাগিসো রাবাদাকে টানা দুই ছক্কা হাঁকান বাঁহাতি এই ব্যাটার।

প্রথম ওভারে ১৭ আর পরের ওভারে ৯, ২ ওভার শেষে বাংলাদেশের বোর্ডে ছিল ২৬ রান। কিন্তু এমন ভালো শুরু ধরে রাখতে পারেনি টাইগাররা। সৌম্য আউট হয়েছেন তৃতীয় ওভারেই। অ্যানরিচ নরকিয়াকে অ্যাক্রোস দ্য লাইন খেলে উইকেটরক্ষকের গ্লাভসে ধরা পড়েছেন সৌম্য (৬ বলে ২ ছক্কায় ১৫)।

এরপর নাজমুল হোসেন শান্তও ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। ৯ বলে ৯ রান করে নরকিয়ার ওই ওভারেই বোল্ড হয়েছেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। সাকিব হন নরকিয়ার তৃতীয় শিকার। ৪ বলে ১ রান করে এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে ফেরেন টাইগার দলপতি।

সিডনির ব্যাটিং সহায়ক পিচেও পাওয়ার প্লে’টা কাজে লাগাতে পারেনি বাংলাদেশ। ভুলভাল শটে সাজঘরে ফেরেন টপঅর্ডারের চার ব্যাটার। ৬ ওভার শেষে টাইগারদের সংগ্রহ ছিল ৪ উইকেটে ৪৭ রান।

উইকেট আটকাতেই যেন মেহেদি হাসান মিরাজকে প্রমোশন দিয়ে ছয় নম্বরে পাঠানো হয়। তিনিও সুবিধা করতে পারেননি। ১৩ বলে ১১ করে তাবরেজ শামসিকে তুলে মারতে গিয়ে ডিপ লং অফে ক্যাচ হন এই অলরাউন্ডার।

কেশভ মহারাজকে দুই পা এগিয়ে মারতে গিয়ে স্টাম্পিং মোসাদ্দেক হোসেন (০)। ছ্ক্কা মারতে গিয়ে ২ করে ফেরেন নুরুল হাসান সোহানও। ৭৬ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে পরাজয় নিশ্চিত হয়ে যায় বাংলাদেশের।

সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে আজ টস ভাগ্য সহায় হয়নি সাকিব আল হাসানের। টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। তাসকিন আহমেদ বল হাতে ইনিংসের সূচনা করেন। প্রথম ওভারের শেষ বলে তিনি দুর্দান্ত সুইংয়ে পরাস্ত করেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক টেম্বা বাভুমাকে।

বেরিয়ে যাওয়া বলে ব্যাট ছুঁইয়ে উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহানের গ্লাভসে ধরা পড়েন বাভুমা (২)। দলীয় ২ রানে প্রথম উইকেট হারায় প্রোটিয়ারা। চাপ বাড়াতে পরের ওভারেই অফস্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজকে আক্রমণে নিয়ে আসেন সাকিব আল হাসান। মিরাজ অবশ্য খুব একটা ভালো করতে পারেননি, ওভারে দেন ৮ রান।

ইনিংসের তৃতীয় ওভারের প্রথম বলে আরও একটি উইকেট পেতে পারতেন তাসকিন। রাইলি রুশোর শট খেলার চেষ্টায় বল উইকেটরক্ষকের গ্লাভসে জমা পড়লে রিভিউ নেয় বাংলাদেশ। কিন্তু আলট্রাএজে দেখা যায়, রুশোর ব্যাটে বলের স্পর্শ লাগেনি।

কিন্তু দারুণ শুরুর পর ওই ওভারটি ভালো কাটেনি তাসকিনের। টানা দুই নো-বলসহ তিন চার আর এক ছক্কা হজম করে ওভারে দেন ২১ রান। রাইলি রুশো আর কুইন্টন ডি কক রীতিমত ঝড় বইয়ে দিয়েছেন।

কেউই বল হাতে সুবিধা করতে পারছিলেন না। এমন সময়ে ঝরঝরিয়ে নামে বৃষ্টি। ৫.৩ ওভার শেষে দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ ছিল ১ উইকেটে ৬০ রান।

বৃষ্টির পর খেলা শুরু হলে রানের গতি কিছুটা কমে প্রোটিয়াদের। ষষ্ঠ ওভারে মোস্তাফিজুর রহমান ৫ রান দেওয়ার পর মোসাদ্দেক হোসেন সপ্তম ওভারে এসে খরচ করেন মাত্র ৩। তার পরের ওভারে প্রথম বলেই বাউন্ডারি হজম করেও মিরাজ দেন মোটে ৮ রান।

এর মধ্যেই ৩০ বলে ফিফটি তুলে নেন রাইলি রুশো। ১০ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার বোর্ডে জমা পড়ে ১ উইকেটে ৯০ রান। ১১তম ওভারে প্রথমবার বল হাতে নিয়ে ২১ দিয়ে বসেন সাকিব।

কোনো কিছুতেই কিছু হচ্ছিল না। অবশেষে ১৫তম ওভারে আফিফ হোসেনকে বোলিংয়ে আনেন সাকিব আল হাসান। অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান দিয়ে বিধ্বংসী জুটি ভাঙেন পার্টটাইম অফস্পিনার আফিফ।

এর আগেই অবশ্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের রেকর্ড জুটি হয়ে গেছে। ৮৫ বলে ১৬৩ রানের জুটিতে ইতিহাস গড়েছেন রাইলি রুশো আর কুইন্টন ডি কক।

৩৮ বলে ৭ চার আর ৩ ছক্কায় ৬৩ রানের ইনিংস খেলা ডি কককে লংঅফে সৌম্য সরকারের ক্যাচ বানান আফিফ। ত্রিস্টান স্টাবসকে ৭ রানের বেশি করতে দেননি সাকিব, তুলে মারতে গিয়ে প্রোটিয়া এই ব্যাটার বাউন্ডারিতে হন ক্যাচ।

তবে রুশো টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করেননি। ৫২ বলে তিনি ছুঁয়েছেন তিন অংকের ম্যাজিক ফিগার। এর আগে নিজের খেলা ইনিংসে ইন্দোরে ভারতের বিপক্ষে ৪৮ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন রুশো।

বিধ্বংসী এই ব্যাটারকে অবশেষে ১৯তম ওভারে ফিরিয়েছেন সাকিব। ডাউন দ্য উইকেট গিয়ে কভারে সহজ ক্যাচ তুলে দিয়েছেন রুশো। ৫৬ বলে তার ১০৯ রানের ইনিংসে ছিল ৭ চার আর ৮ ছক্কার মার।

প্রথম ওভারে ২১ রান খরচ করলেও পরের দুই ওভারে আর মাত্র ১২ রান দিয়ে ২টি উইকেট তুলে নেন টাইগার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তাসকিন ৩ ওভারে ৪৬ রান দিয়ে নেন ১ উইকেট। মোস্তাফিজ উইকেট না পেলেও ৪ ওভারে দেন মোটে ২৫।

Facebook
Twitter
LinkedIn