২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৪শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / রাত ১:৩৭
২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৪শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / রাত ১:৩৭

আ.লীগ সরকার একটা টাকাও অপচয় করে না: প্রধানমন্ত্রী

আওয়ামী লীগ সরকার একটা টাকাও অপচয় করে না, বরং সব টাকা জনগণের কল্যাণে খরচ করে বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শনিবার (১২ নভেম্বর) ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে’র উদ্বোধনের সময় তিনি এই কথা বলেন। 

শেখ হাসিনা বলেন, রিজার্ভের টাকা কোথায় গেলে বিরোধী দল থেকে প্রায়ই এ নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। এছাড়া বিষয়টি নিয়ে সারাদেশে একটা অপপ্রচার চালানোর চেষ্টা করে। তাদের আমি বলতে চাই, বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন রিজার্ভ ছিল মাত্র ২ দশমিক ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০০১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত এটা বৃদ্ধি পেয়েছিল মাত্র ৫ বিলিয়নের মতো। সেই জায়গা থেকে আমরা এই রিজার্ভ প্রায় ৪৮ বিলিয়নের কাছাকাছি বৃদ্ধি করতে সক্ষম হই।

বিএনপির সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, রিজার্ভের টাকা কেউ চিবিয়ে খায়নি, গিলেও খায়নি আর নিয়েও যায়নি। তবে হ্যাঁ, বিএনপি বলবে। তারা নিজেরা চুরি করে অর্থ-সম্পদ বানিয়েছে। কারণ তাদের তো কিছুই ছিল না। জিয়াউর রহমান যখন মারা যায়, আমরা ৪০ দিন টেলিভিশনে দেখেছি, ভাঙা স্যুটকেস আর ছেঁড়া গেঞ্জি ছাড়া কিছু রেখে যায়নি। পরবর্তীতে দেখি হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক তারা। জনগণের অর্থ আত্মসাৎ করেই তারা তা হয়েছে।

রিজার্ভের টাকা কোথায় খরচ হয়েছে তা জানাতে গিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে যোগাযোগ-যাতায়াত-আমদানি সবকিছু পায় বন্ধ ছিল। যখন এই যোগাযোগটা খুলে গেছে, তখন আমাদের আমদানি করা, বিশেষ করে সারা বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস ও ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী অর্থনীতিতে মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিয়েছে। অর্থনৈতিক যে মন্দা দেখা দিয়েছে, তার আঘাতটা আমাদের দেশে এসে পড়েছে। আজকে রিজার্ভের টাকা থেকে আমাদের যেমন আমদানি ব্যয় মেটাতে হচ্ছে, পাশাপাশি আমরা বিনা পয়সায় ভ্যাকসিন দিয়েছি। করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থাও বিনা পয়সায় করেছি। পৃথিবীর উন্নত কোনো দেশ বিনা পয়সার টেস্টের ব্যবস্থা করেনি, ভ্যাকসিনও দেয়নি। আমরা নগদ টাকা দিয়ে প্রথমে ভ্যাকসিন কিনি। এরপরে আমরা অনুদান পেয়েছি। আমরা কিন্তু নগদ টাকা দিয়ে কিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, খাদ্যপণ্যের দাম কিন্তু সারা বিশ্বে বেড়ে গেছে। পরিবহন ব্যয় বেড়ে গেছে। জ্বালানি-ভোজ্য তেল, গম, ভুট্টা, ডাল-যা কিছু আমাদের আমদানি করতে হচ্ছে। আমরা চাল উৎপাদন করছি, খাদ্য উৎপাদন করছি। আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ, তারপরও আমাদের আমদানি করতে হয়। যখন বন্যা-ঘূর্ণিঝড়ে ফসল নষ্ট হলো তখন আমাদের ফসল আমদানি করতে হয়েছে। আমরা যেটুকু খরচ করেছি সেটা জনগণের স্বার্থে, জনগণের কল্যাণে। জনগণের খাদ্য, ক্যানসারের ওষুধ কেনা…জনগণের মঙ্গলের জন্য আমাদের করতে হয়েছে। সার, জ্বালানি তেল, বিদ্যুৎ আমাদের কিন্তু কিনতে হচ্ছে। নগদ টাকা দিয়ে আমরা কিনছি। তাছাড়া, আমাদের রিজার্ভের টাকা দিয়ে আমরা কিন্তু বিমান কিনেছি। নদী ড্রেজিং, সেটাও আমরা নিজেদের রিজার্ভের টাকা দিয়ে করছি। এখানে কিন্তু পয়সা কেউ তুলে নিয়ে চলে যায়নি।

সবাইকে উৎপাদনে মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, করোনা, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধসহ নানা কারণে প্রত্যেকটা জিনিসের দাম-পরিবহন খরচ বেড়েছে। এজন্য নিজেদের সফল উৎপাদন করতে হবে। খাদ্য উৎপাদন, পুষ্টি নিশ্চয়তার ব্যবস্থা নিতে হবে। আমাদের মাটি মানুষ আছে, আমরা তা করতে পারব। যাদের নিজের জমি আছে সেখানে যাতে চাষ হয় সে ব্যবস্থা নেবেন। যদি কখনো বিশ্বে দুর্ভিক্ষ দেখা দেয় আমাদের বাংলাদেশে যেন সেই ধাক্কা কোনোভাবেই না লাগে। আমাদের সাবধানতা আমাদেরই নিতে হবে।

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে শুরু করে আব্দুল্লাহপুর-আশুলিয়া-বাইপাইল হয়ে নবীনগর মোড় এবং ইপিজেড হয়ে চন্দ্রা মোড় পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা হবে।

ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে শীর্ষক এই প্রকল্প ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে সংযুক্ত হবে। এটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকার সঙ্গে ৩০টি জেলার সংযোগ স্থাপনকারী আব্দুল্লাহপুর-আশুলিয়া ও বাইপাইল-চন্দ্রা করিডোরে যানজট অনেকাংশে কমবে।

প্রকল্পের আওতায় সাভার ইপিজেড থেকে নবীনগর সড়কে তিন কিলোমিটার দীর্ঘ দুটি সেতু নির্মাণ করা হবে।

Facebook
Twitter
LinkedIn