ব্যক্তিগত বিতর্ক ও ফর্মের কারণে জাতীয় দলে আসা যাওয়াতেই আছেন সাব্বির রহমান। একই অবস্থা এনামুল হক বিজয়ের। সৌম্য সরকার অবশ্য সৌভাগ্যবান। ব্যাট হাতে নৈপুণ্যে ধারাবাহিকতার অভাব থাকলেও জাতীয় দলে নিয়মিতই সুযোগ পেয়েছেন তিনি। যদিও সুযোগ কাজে লাগাতে পেরেছেন কচিৎ। ৭ মাস স্থগিত থাকার পর অক্টোবরে করোনা বিরতি ভেঙে মাঠে ফিরেছে ক্রিকেট। বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপ ওয়ানডে আসরেও যথারীতি সুযোগ পান এই প্রতিভাবন ক্রিকেটার। কিন্তু বের হতে পারেননি ব্যর্থতা থেকে। অন্যদিকে ফিক্সিং কাণ্ডে নিষিদ্ধ হওয়া আশরাফুল মাঠে ফিরলেও জাতীয় দলে জায়গাটা হয়তো হারিয়ে ফেলেছেন।
তবে আশা ছাড়েননি, খেলছেন ঘরোয়া লীগে। যদিও প্রেসিডেন্টস কাপে সুযোগ ছিল না তার। বলতে গেলে দেশের এই চার তারকা ব্যাটসম্যান গেল এক বছরে রয়েছেন শূন্য হাতে। তবে এবার সামনে বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপ টুর্নামেন্ট। চারজন রয়েছেন পৃথক ৪ দলে। আর তারা প্রত্যেকে এ আসরকে বেছে নিয়েছেন শূন্য থেকে ফিরে আসার লড়াই হিসেবেই। জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল সুযোগ পেয়েছেন মিনিস্টার রাজশাহী দলে। সুযোগ কাজে লাগতেও মরিয়া আশরাফুল বলেন, ‘ভালো প্রস্তুতি নিয়েছি। শেষ আড়াই তিন মাস ধরেই আমি স্কিল ও ফিটনেস অনুশীলন করেছি। কয়েকটা প্রস্ততি ম্যাচও খেলেছি। আমি মনে করি আমি পুরোপুরি তৈরি আছি।’
আশরাফুলের দলে নেই কোনো ‘এ’ ক্যাটাগরির ক্রিকেটার। এই দলের অন্যতম ভরসা ছিল মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন। কিন্তু গতকাল ইনজুরিতে পড়ে শঙ্কায় রয়েছেন তরুণ এ পেস অলরাউন্ডার । আর আশরাফুল বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে খুবই ভালো মনে করছি আমাদের টিমটা। যেহেতু আমাদের খেলাটা লোকাল প্লেয়ারদের নিয়ে হচ্ছে। আমাদের যে ১৬ জনকে নেয়া হয়েছে সবাই যার যার জায়গা থেকে সেরা। দল, ম্যানেজম্যান্ট, প্লেয়ার মিলিয়ে ব্যালেন্সড টিম।’
ঘুরে দাঁড়াতে চান সৌম্য
সৌম্য সরকার এ বছর জাতীয় দলের হয়ে একমাত্র ফিফটি করেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে। এরপর করোনা মহামারিতে মাঠের ক্রিকেট স্থগিত হয়ে যায়। সব শেষ বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপে সুযোগ পেয়ে নাজমুল একাদশের হয়ে করেন ৪ ম্যাচে সাকুল্যে ৫০ রান। বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের তারকা সৌম্য বলেন, ‘নতুন টুর্নামেন্ট তো ভালো করার চেষ্টা করবো এবং আমাদের টিমটা অবশ্যই অনেক ভালো হয়েছে। প্রেসিডেন্টস কাপে আমার পারফরম্যান্স ভালো ছিল না। অবশ্যই এবার চেষ্টা করবো যে ওইটাকে পেছনে ফেলে যেন এই টুর্নামেন্টটা ভালো কাটাতে পারি।’
সৌম্য স্থির করেছেন লক্ষ্যও। তিনি বলেন, ‘যে কোনো টুর্নামেন্টেই তো একটা লক্ষ্য থাকে। আমার নিজেরও একটা লক্ষ্য আছে। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি চেষ্টা করবো বোলিংটাও যেন ভালো করতে পারি।’
আত্মবিশ্বাসী সাব্বির-বিজয়
শিরোপাপ্রত্যাশী জেমকন খুলনায় খেলবেন বিজয়। আরেক শক্তিশালী দল বেক্সিমকো ঢাকায় আছেন সাব্বির রহমান। অনেক দিন থেকেই ফর্মে না থাকা সাব্বিরের জন্য যেমন চাপ তেমনি সুযোগও নিজেকে আরো একবার প্রমাণ করার। মারকুটে এ ব্যাটসম্যান ‘টি-টোয়েন্টি স্পেশালিস্ট’ হিসেবেই পরিচিত। সবশেষ বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপে অবশ্য ব্যর্থ ছিলেন। পাঁচ ম্যাচের ৪ ইনিংসে দলের জন্য তার অবদান মাত্র ৩৯ রান। তবে টি-টোয়েন্টি বলেই তার কণ্ঠে আত্মবিশ্বাস। সাব্বির বলেন, ‘আমরা যারা বিপিএল, প্রিমিয়ার লীগ বা ফার্স্ট ক্লাস টুর্নামেন্ট খেলি এ ধরনের আসর তাদের জন্য খুবই ইম্পরট্যান্ট। এট দ্য সেম টাইম যারা ন্যাশনাল টিমে নাই, ওদের জন্য কামব্যাক করার একটা বড় সুযোগ থাকে। ট্রাই করবো ভালো খেলার জন্য। খুব হার্ড ওয়ার্ক করছি।’
বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক মাহদুল্লাহ রিয়াদের জেমকন খুলনার জার্সি গায়ে খেলবেন বিজয়। এই দলের আরেক তারকা সাকিব আল হাসান। এমন দলে সুযোগ পেয়ে বিজয়ের আত্মবিশ্বাসও তুঙ্গে। প্রেসিডেন্টস কাপে পারফরম্যান্স তার মোটেও ভালো হয়নি। চার ম্যাচে তার অবদান ছিল মাত্র ৪৫ রান। বিজয় বলেন, ‘দলে সাকিব আল হাসান, রিয়াদ ভাই, ইমরুল ভাইরা আছেন। অবশ্যই বাড়তি ভালো লাগা কাজ করছে। আশা করি তাদের সঙ্গে খেলতে পেরে দারুণ কিছু শিখবো এবং সেগুলো কাজে লাগিয়ে ভালো করবো। তাদের সঙ্গে থাকাটা বাড়তি একটা আনন্দ ও অনুপ্রেরণা দেয়। ব্যক্তিগতভাবে আমার লক্ষ্য মন খুলে খেলা। অনেক দিন ধরেই ওভাবে নিজেকে মেলে ধরতে পারছি না। চেষ্টা করবো এই টুর্নামেন্টে বিজয়কে ফিরিয়ে আনার।’