সাঈদ ইবনে হানিফ ঃ যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার গ্রাম অঞ্চলের গাছিরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন খেজুর গাছ পরিচর্যায় । প্রতি প্রতিবছর শীত মৌসুম আসলেই গ্রামাঞ্চল গুলোর সবুজ মাঠে মাঠে সারিসারি খেজুর গাছ গুলো যেন সাজে এক নতুন সাজে। বছরের বেশির ভাগ সময়ে এলোমেলো থাকা খেজুর গাছ গুলো কে শীতের শুরুতে কেটে ছেটে (রস ) বের করার উদ্দেশ্য যারা পরিচর্যা করে থাকেন, তাদের কে গ্রাম্য ভাষায় বলা হয় গাছি। একটি সুস্থ্য সবল খেজুর গাছ থেকে নিয়মিত (রস) পেতে হলে তার আগে নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম গাছি কে পালন করতে হয়। তার মধ্যে হল প্রথমে গাছ গুলোর একপাশের ডগা সুন্দর ভাবে ছেটে ফেলতে হবে, যাকে বলা হয় গাছ তোলা । এর একসপ্তাহ পরে ওই অংশটি আবার নতুন করে চেছে ফেলতে হবে, যাকে বলা হয় গাছ চাছ দেওয়া । এরপর আবার ৬/৭ দিন, চাছ দেওয়া ওই অংশটি কে ভালো করে শুকিয়ে নিতে হয় । এবার গাছি বাঁশের নলি বানিয়ে সেগুলো কে চাছ দেওয়া অংশ টির উপর থেকে ছয় ইঞ্চি নিচে নলি টিকে বিদ্ধ করে দেন। মূলত এরপর থেকে চলে গাছ কাটার পালা । গাছ থেকে রস সংগ্রহের জন্য মাটির ভাড়ই প্রসিদ্ধ এবং সব শ্রেণির গাছিদের কাছে মাটির ভাড়ই পছন্দ। সাধারনত একটি গাছ একবার কাটলে ৪/৫ দিন পরে আবার কাটা যায়, এভাবে চলে শীত মৌসুম শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত । খেজুর রস টিনের পাতিলে করে আগুনে জালিয়ে যে গুড় তৈরি করা হয় তা খেজুর নামে পরিচিত। বাংলাদেশের মানুষের কাছে খেজুর গুড়ের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে । প্রতি বছরের ন্যায় এবছর ও বাঘারপাড়ার বিভিন্ন অঞ্চলের গাছিরা মেতেছে খেজুর গাছ পরিচর্যায়। ইতিমধ্যে বেশ কিছু এলাকায় শুরু হয়েছে রস সংগ্রহের কাজ। এরমধ্যে উল্লেখ যোগ্য উপজেলার বাসুয়াড়ী, দরাজহাট, ইউনিয়ন, এই এলাকা একসময় খেজুর গাছ ও রস গুড় সংগ্রহের জন্য বিখ্যাত ছিল। কিন্তু বর্তমানে অন্যান্যে গাছের আবাদ হওয়ায় খেজুর গাছের পরিমান কমে গেছে ।