২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৫শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / রাত ৯:৪০
২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৫শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / রাত ৯:৪০

দিয়েগো আর্মান্দো ম্যারাডোনা বুঝি সবকিছুই পেয়েছেন।

একজীবনে মানুষ কী পায়? দিয়েগো আর্মান্দো ম্যারাডোনা বুঝি সবকিছুই পেয়েছেন। তিনি এমনই এক চরিত্রের অধিকারী ছিলেন, যার প্রতিটা কর্ম ছিল দেখার মতো। আর্জেন্টিনার দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে এসে ধীরে ধীরে পুরো বিশ্বের সমর্থকরদের মনে গেঁথে নিয়েছিলেন নিজেকে। একজীবনে সমর্থকদের যতটুকু আনন্দ দিয়েছেন তা কম বৈকি, বরং তার ফুটবলীয় ক্যারিয়ারের পরতে পরতে ছিল রোমাঞ্চ-সাসপেন্সে ভরপুর। যেখানে আস্বাদিত হয়েছেন সবাই।

খেলোয়াড়ি জীবনে ছিলেন রাজার মতো। বলতে গেলে একাই আর্জেন্টিনাকে জিতিয়েছেন ১৯৮৬ বিশ্বকাপ। তার পায়ের জাদুকরী নৈপুণ্য এখনও চোখে ভাসে। আজ পুরো বিশ্ব যেখানে আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলে বিভক্ত, সেখানে নিজের দেশকে এই পর্যায়ে নেওয়ার পেছনে তার অবদান সবচেয়ে বেশি।

অভিযোগ নিউজ বিডি ২৪ | OVIJOG NEWS BD 24

সর্বকালের সেরা খেলোয়াড় কে? উত্তরে যখন উচ্চারিত হয় ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি পেলের সঙ্গে ম্যারাডোনার নাম, তখন সমর্থকদের হৃদস্পন্দনও বাড়তে থাকে। ম্যারাডোনা তেমনই একজন। যিনি জীবনের শেষ পর্যন্ত ফুটবলমোদীদের বিনোদন দিয়ে গেছেন। খেলা ছেড়েছেন সেই কবে। কিন্তু জৌলুস এতটুকু কমেনি, কখনও কোচ হয়ে, আবার কোনও সময় বিতর্কিত আচরণে সবসময়ই ছিলেন ভক্তদের মনে!

অভিযোগ নিউজ বিডি ২৪ | OVIJOG NEWS BD 24

সীমাহীন বিতর্ক তার সঙ্গী। ক্যারিয়ারজুড়েই কেবল নয়, আজন্ম যেন তার পথচলা সমালোচনা মাড়িয়ে। কিন্তু দিয়েগো ম্যারাডোনা সেসবেরও অনেক ঊর্ধ্বে। বল পায়ে তার যে দক্ষতা, সব বিতর্কই বরং সেখানে প্রশ্নবিদ্ধ। ম্যারাডোনা নামটা তাই হৃদয় গহীনে দোলা দেয়, ওসব বিতর্ক নয়। কোটি নয়ন মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে চেয়ে থাকতো। ফুটবল মানেই ম্যারাডোনা, ম্যারাডোনা মানেই ফুটবল!

প্রজন্মের সেরা তো অনেকেই হন। যুগে যুগে তারকা আসেন, মুগ্ধ করেন, বিদায় নেন। ম্যারাডোনাদের বিদায় হয় না। তারা চিরন্তন। কে বলছেন জানেন? হাজারো মাইল দূরের অন্য এক খেলার শ্রেষ্ঠ একজন। তিনি ক্রিকেটের রাজপুত্র সাকিব আল হাসান। ক্রিকেটার, টেনিসার কাকে মুগ্ধ করেননি ফুটবলের গোল্ডেন বয়?

অভিযোগ নিউজ বিডি ২৪ | OVIJOG NEWS BD 24

একজন ফুটবলারের মৃত্যুতে ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রকরা যখন শোকাক্রান্ত হন! শচীন টেন্ডুলকার, শোয়েব আখতার, চামিন্দা ভাস, সাঙ্গাকারা, মাইকেল ভন, লক্ষণ, শেওয়াগ থেকে আমাদের সাকিব-মাশরাফী, রুবেল-তাসকিনরা যখন একে একে শোকের মিছিলে শামিল হন, তখন একজন ভুবনজয়ী মানুষের অস্তিত্ব টের পাওয়া যায়।

গোটা বিশ্বই ডুব দিয়েছে শোকের সাগরে। সিনেমা নির্মাতা মোস্তফা সারোয়ার ফারুকী লিখেছেন, তোমাকে ভালো না বাসা বড্ড কঠিন দিয়েগো!

একজন বিরুদ্ধাচারীর কথাই না হয় শুনুন। ‘আমি কখনো আর্জেন্টিনার ফ্যান ছিলাম না। বরং তাদের প্রতিপক্ষ ছিলাম। আর্জেন্টাইনদেরকে নিয়ে বিষেদাগার করাই ছিল আমাদের মূল কাজ। কিন্তু গোপনে অনিয়ন্ত্রিত এক ভালোবাসা ছিল তার প্রতি। আমরা সবাই জানতাম, তার মতো আর কেউ নেই। তিনি ছিলেন জাদুকর, ক্রোধান্বিত এবং স্বর্গীয়। তিনি ছিলেন বিপ্লবী। গুড বাই ম্যারাডোনা। তোমাকে ভালো না বাসা বড্ড কঠিন!’

খেলোয়াড়ী জীবনে প্রতিপক্ষদেরকে বোকা বানিয়েছেন কতোশতবার! রক্ষণ গুঁড়িয়ে, সবাইকে ফাঁকি দিয়ে ছুটে গেছেন লক্ষ্যপানে। এবার আর ফাঁকি দিতে পারেন নি, ভাঙতে পারেননি প্রকৃতির বেড়াজাল। কিংবা ঠিকই লক্ষ্যপানে ছুটে গেছেন। কারণ ওটাই যে শেষ ঠিকানা

Facebook
Twitter
LinkedIn