সূচনা ম্যাচে ইংল্যান্ড ইরানকে যেভাবে নাকানিচুবানি খাইয়ে ৬-২ গোলের বড় ব্যবধানে জিতেছিল সেটা কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচেই অদৃশ্য হয়ে গেল। গতকাল দু’দলের লড়াই শেষ পর্যন্ত গোলশূন্য ড্র হয়েছে। আর এর মাধ্যমে বিশ্বকাপের ইতিহাসে যুক্তরাষ্ট্র ইংল্যান্ডকে তৃতীয়বারের মতো ঠেকিয়ে দিল। অথচ ফুটবল পরিসংখ্যানের নানা সূচকে ইংল্যান্ড পরিষ্কারভাবেই যুক্তরাষ্ট্র থেকে এগিয়ে।
হ্যারি কেইন, স্টার্লিং, রাশফোর্ড, বেলিংহাম কে নেই। অথচ তারা কিন্তু খেলায় তেমন জোড়ালো আক্রমণ রচনা করতে পারলো না। শুরুর দিকে প্রথম মিনিট কুড়ি পর্যন্ত তারা আক্রমণের চেষ্টা করেছে। তারা সে সময় মনে করেছে তারা আগের দিনের মতো গোল পেয়ে যাবে। কিন্তু তা হয়নি। এখানে প্রতিপক্ষ যে যুক্তরাষ্ট্র। পুলিশিচ, জশ সার্জেন্ট, ইউনুস মুসা, ম্যাট টার্নাররা তা হতে দেয় নি। বরং প্রথমার্ধের শেষ থেকে খেলো শেষ হওয়া পর্যন্ত তারা সম্মিলিত আক্রমণে ইংল্যান্ডের ডি-বক্সে তারা ঢুকে পড়েছে। বার বার গোলের সুযোগ তৈরি করেছে যদিও তারা গোল পায়নি।
দ্বিতীয়ার্ধে সাউথগেট স্ট্রার্লিং কে উঠিয়ে নিয়ে গ্রিলিস কে নামান। নতুন করে দলে যোগ দিয়ে গ্রিলিস কিছু আক্রমণ করেছে কিন্তু সেই কাক্সিক্ষত গোলের দেখা পায়নি। খেলায় ইংল্যান্ড গোলের জন্য শর্ট নিয়েছে মোট ৮টি অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্র নিয়েছে দুটো বেশি। কিন্তু গোলের টার্গেটে ইংল্যান্ড ৩টি শর্ট নিলেও যুক্তরাষ্ট্র নিয়েছে মাত্র ১টি। বল পজেশনেও ইংল্যান্ড এগিয়ে ছিল। তারা মোট ৫৬% সময় বল নিজেদের দখলে রাখলেও শেষ বিচারে সুবিধা করতে পারেনি। অপরদিকে ইংল্যন্ড ৫৪১টি পাস দিলেও যুক্তরাষ্ট্র দিয়েছে অনেক কম, মাত্র ৪২২টি।
দিনের অপর খেলায় সেনেগাল জয় পেয়েছে। স্বাগতিক কাতারের বিরুদ্ধে তাদের এ জয় ৩-১ গোলের। খেলায় তারা সুষ্পষ্ট দাপট দেখিয়েই জয় তুলে নেয়। প্রথম ম্যাচে নেদারল্যান্ডের বিরুদ্ধে পরাজয়ের পরে এই জয় নিশ্চয় তাদের জন্য স্বস্থিকর। এখন পর্যন্ত এই গ্রুপের পয়েন্ট তালিকায় সেনেগাল তিন নম্বরে। তাদের পয়েন্ট তিন কিন্তু নেদারল্যান্ড ও ইকুয়েডরের পয়েন্ট চার করে। সেনেগাল দুর্দান্ত খেলে ৪১ মিনিটে প্রথম গোলের দেখা পায়। এর সাত মিনিট পরেই তারা দ্বিতীয় গোলও পেয়ে যায়। কিন্তু খেলার ৭৮ মিনিটে মুনতারি গোল করতে কাতার খেলায় ফিরে আসার ইঙ্গিত দেয়। কিন্তু বি ডায়েং ৮৪ মিনিটে দলীয় তৃতীয় গোলটি করতে কাতারের আশা শেষ হয়ে যায়। ফলে পর পর দুটি ম্যাচে হেরে স্বাগতিক কাতার বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে পড়েছে।
আর একটি খেলায় নেদারল্যান্ডস মাত্র ৬ মিনিটে এগিয়ে গিয়েও লাতিন দেশ ইকুয়েডরের সাথে পয়েন্ট ভাগাভাগি করতে বাধ্য হয়। তরুণ গাকপো দর্শনীয় এক গোলে ফন গালের দলকে এগিয়ে দিলে মনে হয়েছিল তারা আজ বড় জয়ের জন্যই খেলতে এসেছে। কিন্তু অল্প কিছু পরেই ইকুযেডর খেলায় ফিরে আসে। প্রথম মিনিট পনের বাদ দিলে প্রথমার্ধ তো ইকুয়েডর একরকম দাপটই দেখিয়েছে। দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু হলে প্রথম ম্যাচের নায়ক ভ্যালেন্সিয়া ৪৯ মিনিটে দলকে এগিয়ে নেন। এরপর বাকি সময়ে দু’জন অনেক চেষ্টা করেও আর গোলের খাতা খুলতে পারেনি। গোলের দিকে শর্ট নেয়ার ক্ষেত্রে নেদারল্যান্ডস এর চেয়ে ইকুয়েডরই কিন্তু বেশি ছিল। তারা টার্গেটে মোট ৪ বার শর্ট নিয়েছে। অন্যদিকে নেদারল্যান্ডস নিয়েছে মাত্র ১ বার। যদিও তারা গোলের দিকে শর্ট নিয়েছে আরও একবার। বল পজেশন এবং পাস দেয়ার ক্ষেত্রে নেদারল্যান্ডস কিছুটা এগিয়ে ছিল। বলে তাদের পজেশন ছিল ৫৫%। ইকুয়েডরের ভ্যালেন্সিয়া ছাড়া আর তেমন কোনো তারকা খেলোয়াড় নেই। অন্যদিকে নেদারল্যান্ডের রয়েছে ভ্যান ডাইক, ব্লাইন্ড, বারগুইন, ডি লিড, ফ্রাঙ্কি ডি ইয়ং।