ফুটবলের সম্রাট ফুটবলের রাজপুত্রকে হারিয়ে টুইট করেছেন পেলে, আমি আমার বন্ধুকে হারালাম, বিশ্ব হারালো এক কিংবদন্তীকে, একদিন নিশ্চয়ই আমরা আকাশে ফুটবল খেলবো। ম্যারাডোনার প্রয়াণে পেলের এই টুইট হৃদয়কে ছুঁয়ে যায়। পেলে ম্যারাডোনার ফুটবল খেলার তারিফ করেছেন বরাবর, সমালোচনা করেছেন ম্যারাডোনার জীবনযাত্রার। উনিশশো চুরানব্বইয়ের বিশ্বকাপে ম্যারাডোনা ড্রাগ নেওয়ার পর পেলে সব থেকে বেশি সরব হয়েছিলেন এই ঘটনার নিন্দায়। লোকে তখন ভেবেছিলো, এক প্রতিভাবানের ওপর আর এক প্রতিভার সহজাত ঈর্ষা। কিন্তু, পেলে বরাবরই ম্যারাডোনাকে আগলে রাখতে চেয়েছিলেন, সস্নেহে। দুহাজার আঠারো সালে একটি সাক্ষাৎকারে ম্যারাডোনা বলেছিলেন, ড্রাগ – আলকোহোল এর এই আসক্তি না থাকলে লোকে কি আমাকে মনে রাখতো নাকি প্রাক্তন হয়েও খবরের শিরোনামে থাকতাম? আমি আমার মতো। এই ভাবেই জীবন কাটাতে চাই। কি রকম সেই জীবন? মদ, নারী, জুয়া। ক্যাসিনোতে ক্যাসিনোতে বিচরণ। ড্রাগের নিষিদ্ধ জগতে ভ্রমণ, জামাকাপড় পাল্টানোর মতো বান্ধবী বদল। পিতৃত্বের মামলা। তাঁর ছোটবেলার বান্ধবী, প্রথম বিয়ে করা স্ত্রী ক্লদিয়া ভিল্লাফান এর গর্ভে ম্যারাডোনার দুই মেয়ে, তাঁর প্রাণাধিক ডালমা আর গিয়ানিনি। এছাড়াও ম্যারাডোনা ছয় সন্তানের জনক হয়েছেন। এর মধ্যে তিন সন্তান তাঁর কিউবায় ড্রাগ রিহ্যাব সেন্টারে দীর্ঘদিন থাকার সময় নারী সংসর্গের ফসল। ম্যারাডোনা দেউলিয়া হয়েছেন, আলফা-রোমিও গাড়ি নিয়ে দুরন্ত গতিতে চলতে গিয়ে পুলিশের দ্বারা বুকড হয়েছেন, ভিলা কিনেছেন, এম কোম্পানি গড়েছেন, আবার তা এক লহমায় আয়কর থেকে বাঁচার জন্যে সারেন্ডার করেছেন। অথচ, কেউ ভোলেনি তাঁর ফুটবল চাতুর্য, তাঁর স্কিল, তাঁর ড্রিবলিং, তাঁর ড্রাইভ। ম্যারাডোনাকে বিশ্ব মনে রাখবে সেই ফেরারি গাড়ি হিসেবে যার ব্রেক ছিলনা।