সাঈদ ইবনে হানিফ, বাঘারপাড়া:
যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার প্রত্যাম্ত গ্রামাঞ্চলের নারীরা এখন মেতেছে কুমড়ো বড়ি তৈরির কাজে। অনেকে সংসারের চাহিদা মিটিয়ে এই বড়ি বাজারে ও বিক্রি করছেন। এতে তাদের সংসারে কিছু টা বাড়তি আয়ও হচ্ছে। সম্প্রতি গ্রামের পাড়া মহল্লায় ঘুরে দেখা গেছে –
দেখতে সুন্দর “খেতে মজা” তার চেয়ে বেশি সুস্বাদু এই কুমড়ো বড়ি সারি সারি সাজিয়ে রোদে শুকাতে দেওয়া হয়েছে। শীতের খাবারে মুখরোচক স্বাদ আনতে মাছের বদলে সবজিতে কুমড়া বড়ির প্রচলন দীর্ঘ দিনের।তাই শীত মৌসুমকে কেন্দ্র করে অতিযত্ন সহকারে এই খাদ্যপণ্যটি তৈরি করে থাকেন বাঘারপাড়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম অঞ্চলের নারীরা। এদিকে কুমড়া বড়ি বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি করেও ইতোমধ্যে অনেকে অস্বচ্ছল পরিবারে আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে এনেছেন । খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতি বছরের শীত মৌসুমে বাজারে নানা ধরনের সবজির সমাহার দেখা যায়। এই সবজি আর মাছ রান্নাতে ভোজন রসিক খাবারে ব্যবহার করা হয় ঐতিহ্যবাহী কুমড়া বড়ি। কুমড়া বড়ির কারিগররা জানান, দেশিয় উপাদানে তৈরি করা হয় কুমড়ার বড়ি। প্রথমে গাছপাকা সাদা বর্ণের চালকুমড়া কুচি কুচি করে কাটতে হয়। তারপরে কলাইয়ের ডাল ভিজিয়ে পাটায় বেটে নিতে হয়। পরে চালকুমড়া আর কলাইয়ের ডাল একসঙ্গে অনেকক্ষণ ধরে ভালো করে মাখিয়ে বাঁশের চাটাইয়ের ওপরে ছোট ছোট করে বড়ি তৈরি করে বিছিয়ে দিতে হয়। দুই-তিন দিন ভালো করে রোদে শুকালেই খাওয়ার উপযোগী হয়ে ওঠে কুমড়ার বড়ি। বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মসুর ডাল (চিকন) এখন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়, যা ৫ মাস আগে ছিল ১১০ টাকা। মসুর ডাল (মোটা) এখন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। যা আগে ছিল ৭০ থেকে ৮০ টাকা। মাষকলাই ডাল এখন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২৫ থেকে ১৩০ টাকায়, যা আগে ছিল ১০০ থেকে ১০৫ টাকা। অ্যাংকার ডাল এখন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়, যা আগে ছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। মুগের ডাল এখন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকায়। একটি কুমড়ো ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা, যা আগে ছিল ১১০ থেকে ১২০ টাকা। বাঘারপাড়া উপজেলার পাইকপাড়ার সুমি বিশ্বাস, বাসুয়াড়ীর রেকছোনা বেগম, মাহমুদপুরের তাছলিমা সহ অনেকে বলেন, বড়ি তৈরি করতে প্রথমে প্রচুর পরিশ্রম করতে হতো। কিন্তু এখন মেশিনের মাধ্যমে ডাল গুঁড়ো করা হচ্ছে, শুধু হাতের মাধ্যমে বড়ি তৈরি করে রোদে শুকাতে হয়। যে কারণে পরিশ্রম অনেকটাই কমেছে।